বিভিন্ন খালে জাল ফেলে এখনও মেলেনি এমপি আনারের লাশ
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের দেহের বিভিন্ন অংশের খোঁজে মাঠে নেমেছে পশ্চিবঙ্গের পুলিশ। তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তার লাশের কোনো সন্ধান পায়নি। তবে অনুসন্ধান অব্যহত রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এমপির পরনের পোশাকের খোঁজে কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনে তল্লাশি চালানো হয়। শহরের বিভিন্ন খালে জাল ফেলা হচ্ছে একের পর এক। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সুখবর মিলেনি।
জানা যায়, কলকাতার নিউ টাউনে ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের কিলিং মিশনে ‘কসাইয়ের’ ভূমিকা রাখে জিহাদ হাওলাদার। জিজ্ঞাসাবাদে ভারতীয় পুলিশকে খুলনার দিঘলিয়ার এ যুবক জানিয়েছে, টুকরো করার পর আজীমের লাশ ফেলা হয় ভাঙ্গরের কৃষ্ণমাটি এলাকায়। দু’দিনের ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবারও ওই এলাকার জিরেনগাছি সেতুসংলগ্ন বাগজোড়া খালে তল্লাশি চালানো হয়।
নৌকা ও জাল নিয়ে খালের পানিতে নামেন কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা; সঙ্গে ছিল ক্যামেরা। আকাশে ওড়ানো হয় ড্রোন। সাধারণ মানুষের সাহায্যও নেওয়া হয় এদিন। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযানেও সফলতা পাননি তদন্ত কর্মকর্তারা।
এদিন আজীমের পরনের পোশাক পেতেও চলে তোড়জোড়। নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনে নতুন করে করা হয় তল্লাশি; কিন্তু ফলাফল তথৈবচ।
এদিকে গতকাল কলকাতার সিআইডি কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার জিহাদকে নিয়ে খুনের ঘটনা পুনর্নির্মাণ (রিকনস্ট্রাকশন) করার পরিকল্পনা করলেও শেষ মুহূর্তে সরে আসেন। আজ রোববার ঢাকা থেকে ডিবির সদস্য এলে জিহাদকে সঙ্গে নিয়ে সঞ্জিভা গার্ডেনের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে গিয়ে এটি নির্মাণ করা হবে বলে জানা গেছে। যদিও ভাঙ্গরের খালে জাল ফেলার অভিযানে গতকাল জিহাদকে রাখা হয়নি। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁর গোপালনগর এলাকা থেকে জিহাদকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
পরদিন উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসাত জেলা ও দায়রা আদালতে তোলা হলে বিচারক তার ১২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কলকাতার বর্জ্য দূষিত পানির একটা বড় অংশ যায় বাগজোড়া খালে। স্থানীয়রাও এখানে হররোজ ফেলেন মৃত জীবজন্তু। যদিও খালে নদীর মতো স্রোত প্রবহমান। এ এলাকায় প্যাকেটে মোড়ানো কিছু উদ্ধার হলেই গুজব ছড়িয়ে পড়ছে এমপি আজীমের দেহাবশেষ বলে।
কলকাতার সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, শনিবার স্থানীয় জেলেদের গ্রুপ তৈরি করে বাগজোড়া খালে ফেলা হয় জাল। প্রথম টানেই উঠে আসে কালো প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়ানো একগাদা হাড়গোড়। এতে আশাবাদী হয়ে ওঠে সিআইডির তদন্ত দল। স্থানীয়রাও ভিড় করেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তদন্ত কর্মকর্তারা খালি চোখে পরীক্ষা করে জানান, হাড়গুলো মানুষের নয়, ছাগলের। শুক্রবারও তল্লাশিতে এমন প্যাকেটে হাড়গোড় উঠে এলে পরে তদন্ত কর্মকর্তারা সেটি কুকুরের বলে জানিয়েছিলেন।