গাজার পাশে দাঁড়ানো ‘পবিত্র দায়িত্ব’: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট
ছবি সংগৃহিত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বেসামরিক জনগণের পাশে দাঁড়ানো তথা তাদের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া মস্কোর ‘পবিত্র দায়িত্ব’ দায়িত্ব। বুধবার এক বক্তৃতায় একথা বলেন পুতিন।
এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার ব্রিকসের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই সময় তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি শিশুদের অ্যানেস্থেশিয়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে, এমন ভিডিও আমাকে বিচলিত করেছে।’ খবর আরটির
এই মাসের শুরুর দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ইসরায়েলকে নিয়মিতভাবে চিকিৎসা সুবিধাগুলোতে হামলা চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেন। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাটি আরও বলেছে যে, অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ছিটমহলে শিশুদের মৃত্যু নিত্যদিনের ঘটনা।
বুধবার গাজার রোমহর্ষক ভিডিও দেখিয়ে রাশিয়ান মন্ত্রিসভাকে সম্বোধন করে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, মানবিক, মহৎ মিশন। চলমান ঘটনার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের সাহায্য করতে হবে।’
রাশিয়ান নেতা গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের সহায়তাকে ‘আমাদের পবিত্র দায়িত্ব’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এর আগে ব্রিকস সম্মেলনে পুতিন বলেন, গাজায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু, বেসামরিক জনসংখ্যার বাস্তুচ্যুতি এবং যে মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে সেটি গভীর উদ্বেগের।
বুধবার গাজায় চারদিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সম্মত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। এ বিষয়ে পুতিন বলেন, স্বল্পমেয়াদে মানবিক যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলেও মস্কো এই অঞ্চলে একটি স্থায়ী শান্তি দেখতে চায়। এটি কেবলমাত্র জাতিসংঘের পূর্ববর্তী রেজুলেশনের ভিত্তিতে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানেই সম্ভব।
জাতিসংঘের নারী বিষয়ক নির্বাহী পরিচালক বুধবার জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় প্রতি দুই ঘণ্টায় দুই জন মা এবং ৭ জন নারীর মৃত্যু হচ্ছে।
সিমা সামি বাহাউস জাতিসংঘে বলেন, ৭ অক্টোবরের আগে গত ১৫ বছরে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের ৬৭ শতাংশই ছিল পুরুষ। আর ১৪ শতাংশেরও কম ছিল নারী ও মেয়ে। তবে নতুন এই হামলায় আগের সব হিসেব উল্টে গেছে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় যত লোক নিহত হয়েছে, গত দেড় মাসে নিহত হয়েছে তার দ্বিগুণ। সেখানে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশই নারী ও শিশু।
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের গত ৭ অক্টোবরের আকস্মিক হামলায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানায় ইসরায়েল। তবে সম্প্রতি সেই সংখ্যা কমিয়ে ১২০০ করা হয়েছে। এছাড়া হামাস ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে গেছে বলে জানায় নেতানিয়াহু প্রশাসন।
এরপর থেকে গাজায় ও পশ্চিম তীরে নির্বিচারে হামলা করছে ইসরায়েল। গাজার আবাসিক এলাকা, স্কুল, হাসপাতাল, জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার গুদাম, খাবারের দোকানসহ কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যায়নি। এখন ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাড়ে ১৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার মতো শিশু। নিহত বাকিদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী।