ইসরায়েলি বোমা হামলায় গাজায় আল-জাজিরার সাংবাদিকের পরিবার নিহত

ছবি সংগৃহিত
ইসরায়েলের বিমান হামলায় কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা অ্যারাবিকের গাজা ব্যুরোর প্রধান ওয়ায়েল আল-দাহদুহ’র স্ত্রী ও দুই সন্তান নিহত হয়েছে। আল–জাজিরার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোহাম্মেদ মোয়াদাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাতে গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা চালায়। সেখানেই প্রাণ হারান এই সাংবাদিকের পরিবার। এ হামলায় আরও অন্তত ২৫ জনের প্রাণ গেছে। এছাড়া সাংবাদিক ওয়ায়েল আল–দাহদুহরের এক নাতনিসহ কিছু সদস্য আহত হয়েছে এই হামলায়। ওই বাড়ির ধ্বংসস্তূপে এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে।
অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় পরিবার হারিয়েছেন কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার আরবি ব্যুরোর প্রধান ওয়ায়েল আল দাহদৌহ। ইসরায়েলি হামলায় দাহদৌহের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও নাতি নিহত হয়েছে। গতকাল বুধবার দাহদৌহ নিহত স্বজনদের মরদেহ দেখতে গাজার দায়ের এল-বালাহের আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে যান।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দাহদৌহের ছেলে মাহমুদের বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। মাহমুদ বাবার মতোই সাংবাদিক হওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিল। নিহতদের মধ্যে দাহদৌহের কন্যা শামের বয়স ছিল মাত্র ৭ বছর। দাহদৌহের পরিবার নুসেইরাতের একটি শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল।
ইসরায়েলি হামলায় দাহদৌহের স্ত্রী, ছেলে ও কন্যা ঘটনাস্থলে নিহত হলেও ঘটনার পর তাঁর নাতি আদমকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দুই ঘণ্টা পর তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তবে দাহদৌহের পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য বেঁচে যায়। বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে দাহদৌহের এক শিশু নাতনিও রয়েছে।
দাহদৌহ কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘যা ঘটছে তা থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার। ইসরায়েলিরা শিশু, নারী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বেছে বেছে ধারাবাহিক হামলা চালাচ্ছে। আমি ইয়ারমুক (জর্ডানের এলাকা) থেকে মাত্রই এমন একটি ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে ফিরছিলাম এবং ইসরায়েলিরা নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরসহ আরও অনেক এলাকাতে এমন হামলা চালিয়েছে।’
দাহদৌহ আরও বলেন, ‘আমাদের কোনো সন্দেহ নেই যে, ইসরায়েলিরা এসব বেসামরিক নাগরিককে শাস্তি না দিয়ে ক্ষান্ত হবে না এবং দুঃখজনক হলেও সত্য যে এটাই ঘটছে। ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী কি এই নিরাপদ এলাকার কথাই বলেছিল?’
আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি ওয়ায়েল আল-দাহদুহ তার স্ত্রী আর ছেলে মেয়ের মরদেহ নিয়েই সরাসরি সম্প্রচারে যোগ দেন। আল-জাজিরা বলছে, তারা গাজা উপত্যকার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল যেখানে ইসরায়েলের বিমান হামলা চালানো হয়। তারা ইসরায়েলি নির্দেশনা মেনে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে চলে আসেন।
এক বিবৃতিতে আল-জাজিরা বলছে, আল-জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক আমাদের সহকর্মী ওয়ায়েল আল-দাহদুহের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে। তার পরিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছে।
