তাইওয়ান প্রসঙ্গে বাইডেন ও জিনপিংয়ের পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি
তাইওয়ান প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একে অপরকে সতর্ক করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তারা ফোনে কথা বলেছেন। এ সময় তারা তাইওয়ান ইস্যুতে একে অপরকে সতর্ক করে পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানান হয়েছে।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, তাইওয়ান দ্বীপের মর্যাদা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একতরফা পদক্ষেপের ঘোর বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তাইওয়ানের বিষয়ে মার্কিন নীতি পরিবর্তন হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে জো বাইডেনকে এক-চীন নীতি মেনে চলার ব্যাপারে বলেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। একইসঙ্গে বাইডেনকে সতর্ক করে তিনি বলেন, (তাইওয়ানে) যারাই আগুন নিয়ে খেলবে তারা পুড়ে যাবে।
তবে ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর নিয়ে আমেরিকান প্রশাসনের অবস্থান নিশ্চিত নয়। প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেছেন, সামরিক বাহিনী মনে করছেন ‘এ মুহূর্তে পেলোসির তাইওয়ান সফর ইতিবাচক হবে না।’
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট জিনপিং (জো বাইডেনকে) বলেছেন, যারা আগুন নিয়ে খেলবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। এখন এটা আশা করা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে এবার পরিষ্কার ধারণা পাবে।’
সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার এবং দেশটির তৃতীয় ক্ষমতাধর রাজনীতিক ন্যান্সি পেলোসির সম্ভাব্য তাইওয়ান সফর নিয়ে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ে মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানে সফরের কোনো ঘোষণা দেননি। এদিকে ন্যান্সি পেলোসি এ ধরনের সফর করলে ‘গুরুতর পরিণতি’ হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে চীন।
সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চীন কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলে গত সোমবার সাংবাদিকেদের জানিয়েছেন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান। তিনি বলেন, ‘যেকোনো পরিণতির দায় নিতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।’
ন্যান্সি পেলোসি আমেরিকার সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাজনীকিকদের একজন। দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের পরেই তার অবস্থান। ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাট দলের অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন নেতা তিনি। মার্কিন রাজনৈতিক মহলে কট্টর চীন-বিরোধী পেলোসি চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বরাবরই সোচ্চার।
উল্লেখ্য, তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-সহ পশ্চিমা দেশগুলোর দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। অবশ্য তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। অন্যদিকে চীনের প্রদেশ নয়, বরং নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে থাকে তাইওয়ান।
প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করার পর তাইওয়ান দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যদিও তাইওয়ানকে বরাবরই নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। এরপর থেকে তাইওয়ান নিজস্ব সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে।
এসএন