খলিস্তানি নেতা নিজ্জর হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত চার ভারতীয়কে জামিন দিল কানাডা
ছবিঃ সংগৃহীত
২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে খলিস্তানি নেতা নিজ্জরকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত চার ভারতীয়কে জামিন দিল কানাডার আদালত। সম্প্রতি আদালতে চার অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর হয়েছে। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ কলম্বিয়া শীর্ষ আদালতে ওই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
নিজ্জর-হত্যায় অভিযুক্তেরা সকলেই ভারতীয় কিংবা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁদের নাম ব্রার, কমলপ্রীত সিংহ, করণপ্রীত সিংহ এবং আমনদীপ সিংহ। এত দিন তাঁরা সকলেই কানাডার আদালতে হেফাজতে ছিলেন। গত বছরও একাধিক বার প্রাদেশিক আদালতে হাজির করানো হয় তাঁদের। তাঁদের বিরুদ্ধে খুন এবং খুনের পরিকল্পনার মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে। গত বছর নভেম্বর মাসে প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই ‘সরাসরি বিচারপ্রক্রিয়া’ শুরু করার নির্দেশ দেয় কানাডা সরকার। তখনই ঠিক করা হয়, প্রাদেশিক আদালতের পরিবর্তে ব্রিটিশ কলম্বিয়া শীর্ষ আদালতে ওই মামলার বিচার হবে। এর পর ১৮ নভেম্বর অভিযুক্তদের ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। কথা ছিল, ২০২৫ সালের শুরুতেই পরবর্তী শুনানি হবে। তার আগেই জামিন পেলেন চার অভিযুক্ত।
খলিস্তানি নেতা নিজ্জরকে ২০২০ সালে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে ঘোষণা করেছিল ভারত। তার তিন বছর পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে তাঁকে হত্যা করা হয়। এরপরেই নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ তোলে তৎকালীন ট্রুডো সরকার। চিড় ধরে ভারত-কানাডা সম্পর্কেও। ট্রুডোর ওই অভিযোগের পর, প্রধানমন্ত্রী মোদী কানাডাকে পাল্টা দোষারোপ করেন বিচ্ছিন্নতাবাদী, খলিস্তানপন্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য। এর পরেই নিজ্জর-খুনে জড়িত সন্দেহে ২০২৪ সালের মে মাসে চারজন ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে গ্রেফতার করে কানাডা পুলিশের ইন্টিগ্রেটেড হোমিসাইড ইনভেস্টিগেশন টিম (আইএইচআইটি)।
প্রসঙ্গত, সোমবারই ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান দল লিবারেল পার্টির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সের দলনেতার পদও ছাড়ছেন তিনি। সম্ভবত দলের অন্দরে অন্তর্বিরোধের জেরেই এই সিদ্ধান্ত। সম্প্রতি সরকার বাঁচাতে খলিস্তানপন্থী নেতা জগমীত সিংহের দল নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থন নেওয়ার কারণেও দলের অন্দরে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল ট্রুডোকে। সেই বিতর্কের মাঝে নিজ্জর-হত্যায় অভিযুক্তদের মুক্তি আরও উস্কে দিল জল্পনা।