কূটনীতিকদের প্রতি সহিংসতার হুমকি অগ্রহণযোগ্য: যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
রাষ্ট্রদূতকে হুমকির বিষয়ে এক প্রশ্নে বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, “বিদেশে আমাদের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অবশ্যই আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার। তিনি আরও বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের হুমকি আমরা অনেক গুরুত্বের সঙ্গে নিই। আমাদের কূটনীতিকদের উপর সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি অগ্রহণযোগ্য।”
গত ৬ নভেম্বর বিএনপির হরতাল-অবরোধ বিরোধী এক সভায় পিটার হাসকে নিয়ে ‘আক্রমনাত্মক’ বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মুজিবুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, “পিটার হাস বলছেন, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। পিটার হাস আমরা আপনাকে ভয় পাই না। আমরা মোটা চালের ভাত খাই। আপনি বিএনপির ভগবান। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ ঈমান বেচি না। আপনাকে এমন মারা মারব, বাঙালি কত দুষ্টু তখন বুঝতে পারবেন।”
এরপর রাষ্ট্রদূত হাসকে ‘হত্যার হুমকি’ দিয়ে বক্তব্য দেন কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফরিদুল আলম। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও বুধবার থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এসব হুমকির পর নিরাপত্তা উদ্বেগ বুধবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে তুলে ধরার কথা জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৃহস্পতিবার ম্যাথু মিলারের কাছে প্রশ্নে এক সাংবাদিক বলেন, ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের কাছ থেকে অব্যাহতভাবে হত্যার হুমকি পাচ্ছেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তৃণমূল থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতারা একই সুরে কথা বলছেন, রাষ্ট্রদূতকে জবাই করতে চান।
“এবং রাষ্ট্রদূত নিজেও গতকাল (বুধবার) তার নিরাপত্তা এবং দূতাবাসের কর্মীদের বিষয়ে নিরাপত্তার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সাধারণ সম্পাদক কি এই হুমকিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন বা এই সহিংস বক্তব্যকে?”
পিটার হাসকে হুমকির বিষয়ে উদ্বেগ বাংলাদেশ সরকারের কাছে অব্যাহতভাবে তুলে ধরার কথা জানিয়ে উত্তরে ম্যাথু মিলার বলেন, “রাষ্ট্রদূত হাসকে হুমকি দিয়ে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে বারবার তুলে ধরেছি।”
তিনি আরও বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশন ও কূটনীতিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী তাদের যে বাধ্যবাধকতা আছে, আমরা সেটা তাদেরকে মনে করিয়ে দেব। আমরা প্রত্যাশা করি, তারা সেই বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী কাজ করবে।”