শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১১ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

১০ বছরের শাসনে নাগরিক চোখে 'অযোগ্য' কিম

২৭ বছর বয়সী কিম জং উন উত্তরসূরী হিসেবে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় আসেন, তাও ১০ বছর হলো। নেতা হিসেবে তিনি কেমন হবেন সে পরীক্ষা তাকে দিতে হয়নি। কিম জং ইলের পর তিনিই রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় আসবেন সেটা নির্ধারিতই ছিল। কিম জং উন তার ১০ বছরের শাসনকালে নানাভাবে হয়েছেন খবরের শিরোনাম। 

৬৯ বছর বয়সী কিম জং ইল মারা যান ২০১১ সালে। উত্তর কোরিয়ার মিডিয়া তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ১৯ ডিসেম্বর। ২৭ বছর বয়সেই তথাকথিত নেতা হিসেবেই পরিচিতি পান বিশ্ব জুড়ে। বিশ্বের বহু দেশের নেতা ভেবেছিলেন তিনি দেশকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। তবে এই ১০ বছরে কিম জং উন শুধু নিজের অবস্থানই শক্ত করেননি। 'কিম জং-ঐক্যবাদ' নামে নতুন এক যুগের সূচনা করেছেন।

ক্ষমতায় আসার পর কিম তার বিরোধীতা করা কয়েক শত মানুষকে হত্য করেছেন। পারমানবিক পরীক্ষা করিয়েছেন। শতাধিক ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছেন। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ব মিডিয়ার নজর কেড়েছেন। পারমানবিক অস্ত্রে বলীয়ান হওয়ার মূল্য এখন দিতে হচ্ছে উত্তর কোরিয়াকে, কোরিয়া এখন আগের চেয়ে বেশি গরীব আরও বেশি বিচ্ছিন্ন একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

কিমকে নিয়ে যা বললেন তারা-

কিম জং ইল যেদিন মারা যান কিম জিউম-হিউক তখন ছাত্র ছিলেন। তিনি চীনে পড়ালেখা করতেন। উত্তর কোরিয়ার অভিজাত পরিবারের সন্তান তিনি। উত্তর কোরিয়ার অল্প কিছু ভাগ্যবানদের একজন, যিনি দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি বলেন, যেদিন কিম জং ইল মারা যান, সেদিন তিনি পার্টি করেছিলেন। এ কাজের জন্য তার মৃত্যুও হতে পারতো। তিনি ভেবেছিলে কিম শাসনের অবসান হলো এবার। আর নতুন শাসক কিম জং উন যেহেতু ইউরোপে পড়ালেখা করেছেন। তাই তার দৃষ্টিভঙ্গী হবে আমাদের মতো। আমি ভেবেছিলাম নতুন যুগের সূচনা হবে উত্তর কোরিয়ায়। চীন বিশ্ব সম্পর্কে আমার চোখ খুলে দিয়েছে।

কিম জিউম-হিউক আরও বলেন, তবে চীনে থাকাকালীন দেশ সম্পর্কে বিশ্ব মিডিয়া, ইন্টারনেটে যে সব তথ্য পেয়েছি, তাতে আমার বিশ্বাস ছিলো পশ্চিমার মিথ্যা বলছে। তবে আমার বিশ্বাস ভঙ্গ হয়, দেশে ফিরে এসে, আমার দেশের ২৫ মিলিয়ন মানুষ জানে না বিশ্ব তাদের সম্পর্কে কীভাবছে। উত্তর কোরিয়ার মানুষ এভাবেই নিজ দেশে অবরুদ্ধ। এদেশের মানুষকে শেখানো হয়েছে,তাদের নেতা প্রতিভাবান, বিশ্বস্ততা পাওয়া যোগ্য।

উত্তর কোরিয়ায় এ কথাও ফিসফিসিয়ে লোকমুখে শোনা যায় যে, কিম জং উন যোগ্য উত্তরসূরী নন, তিনি বিশেষভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত; বলেছেন উত্তর কোরিয়ার সাবেক কুয়েত বিষয়ক রাষ্ট্রদূত রিউ হিউর-উ। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ানরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে উত্তরাধিকারের শাসন দেখতে দেখতে। বিশেষ করে অভিজাতরা। তারা নতুন কিছু চাইছেন। কিমের পরিবার ১৯৪৮ সাল থেকে শাসন করে আসছে। নাগরিকদের শেখানো হয় যে, কিমের বংশের রক্তধারা পবিত্র, দেশ শাসনের জন্য উপযুক্ত, আমাদের এই প্রিয় দেশকে সঠিকভাবে শাসন একমাত্র এ বংশের রক্তই করতে পারবে। তিনি প্রশ্ন করেন, ২৭ বছর বয়সী একজন দেশ শাসন সম্পর্কে কিজানে? কিবুঝে?

২০১২ সালে নতুন নেতা উন দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন,'কোরিয়ানদের আর কখনওই শক্ত বাঁধনে বাঁধা হবে না।' দেশের মানুষ ভাবতে শুরু করলো, নতুন নেতা তাদের ভোগান্তির অবসান ঘটাবে। ১৯৯০ সাল থেকে উত্তর কোরিয়াতে দুর্ভিক্ষ চলছে, হাজার হাজার মুনুষ না খেয়ে মারা গেছে। খাদ্য ঘাটতি দূর করবে নতুন নেতা। খাদ্যের মজুদ বাড়াবে। এটা ছিলো একটি অসাধারণ মুহূর্ত; কথাগুলো বলেছেন পূর্ব-উপকূলীয় প্রদেশের গাড়ি চালক ইয়ু সিওং-জু। তিনি বলেন,পররাষ্ট্র কর্মকর্তাতের নির্দেশ দেয়া হয় বিদেশি বিনিয়োগ সৃষ্টির সুযোগ করে দিতে এবং দেশে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছিল। সুপার মার্কেটগুলোতে পণ্য সরবরাহ বেড়ে ছিলো। আমাদের দেশের পণ্যের মান চীনের পণ্যের থেকে সবদিক থেকে উন্নত ছিলো। আসলে এটা ছিলো আমাদের গর্বের। আমাদের অহংকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলো।

তবে সিংহাসনের জন্য যে বা যারা হুমকি স্বরূপ তাদের প্রতি কিমের সুনজর স্থায়ীত্ব পায়নি। চীন সীমান্ত এলাকার এক ব্যবাসায়ী চোয়ি না-রাই বলেন,যাদেরই কিম হুমকি মনে করেছেন তাকেই হত্যা করেছেন। তরুণ নেতা এভাবেই তার ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। নিজের চাচাকেও সে ছাড় দেয়নি। কুকুরের চেয়েও খারাপ পরিণতি হয়েছে তার। উনের চাচা জ্যাং সং-থায়েক মিত্রদের নিয়ে উনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গঠন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনিই ছিলেন দেশ শাসন করার যোগ্য। তিনি যদি ক্ষমতায় আসতে পারতেন তবে দেশে অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন আসতো। যদিও আমরা যা ভাবছিলাম সেটা করা সহজ ছিলো না। তবে আমরা এমনটাই আশা করছিলাম। আর এমন কথা যখন প্রচার পেয়েছিলো তখনই চাচা জ্যাং সং-থায়েককে চরম পরিণতি ভোগ করতে হলো। দলের ঐক্যে ফাঁটল ধরিয়েছেন জ্যাং সং-থায়েক, এমন অভিযোগ এনে কিম ফাঁসিকে ঝুলিয়ে হত্যা করলেন চাচাকে।

কিমের নৃশংস হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে চীন সীমান্ত দিয়ে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে চেষ্টা করে। তারা শরনার্থী হয়ে সেখানে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। সেটা ঠেকাতে সীমান্তে পাহারা আরও জোরদার করে কিম। কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া হয় সীমান্ত এলাকা ঘিরে। হা জিন-উ, তিনি একজন দালাল, উত্তর কোরিয়া থেকে ১০০ জনকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন। তিনি বলেন,'সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো, যাকেই সীমান্ত পেরুতে দেখবে,দেখামাত্র গুলি করবে। তাদেরকে এ কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে না। আমি প্রথম যখন এ কাজ শুরু করি তখন আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম। তবে আমি দায়িত্ব মনে করে আমার কাজটি করেছি, বলেন হা জিন-উ। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার মনে কেবলই প্রশ্ন আসতো আমি কেন এদেশে জন্ম নিলাম। একটা প্রাণির যে স্বাধীনতা আছে আমার সে স্বাধীনতা নেই। তাই আমি এ ঝুঁকি নিলাম। তবে পরিণতিতে আমাকে দেশ ছাড়তে হলো। আমার মাকে আটক করা হলো। তাকে জেলখানায় এমন নির্যাতন করা হলো যে, তিনি পক্ষাঘাত গ্রস্ত হয়ে পড়লেন। এ ঘটনা তাকে এখনও কষ্ট দেয়।

ভিন্নমতাদর্শী হয়েও কিম জং উন তার বাবার চেয়েও আরও বেশি গ্রহণযোগ্য আরও বেশি আধুনিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ মানসিকতা প্রমাণ করতে চেষ্টা করছিলেন। কিম রি সোল-জু নামে এক গায়িকাকে বিয়ে করেন। স্ত্রীকে সাথে নিয়ে তিনি বিভিন্ন শহর ও গ্রাম ঘুরে বেড়ালেন, স্ত্রীকে আলিঙ্গন করা থেকে ঘোড়ায় চড়া, রোলার কোস্টরে উঠছেন, প্রসাধনী কারখার পরিদর্শন করছেন, এসব ছবি প্রচার করেছেন কিম নিজেকে আধুনিক মানুষ হিসেবে দেখাতে। তবে দেশের সাধারণ নাগরিকের জন্য এ সবই ছিলো নিষিদ্ধ। ইউন মি-সু নামে একজন বলেন, আমি আধুনিক জীবন যাপন করতে চাই। আমি ট্রেন্ড ফলো করতে চাই। তবে আমাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিলো। আমি জিন্স পরতে চাইতাম। অলঙ্কারও পরতে চাই। আমি তাই করলাম। কিন্ত দেশের আইন না মানার জন্য আমাকে তিরস্কার করা হলো জনসম্মুখে। আমাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলো।

হিউন-ইয়ং একজন গায়ক বলেন, তাকে গান গাইতে হবে কিমের প্রশংসা করে। সে অস্বীকৃতি জানালো, আর সে কারণে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হলো। তিনি আরও বলেন, একজন শিল্পী হিসেবে আমি যা করতে চাই তা কখনও করতে পারিনি। অনেক নিয়ম, কঠোর বিধি। কোরিয়ার একজন গায়ক হিসেবে আমি অনেক বেশি ভুক্তভোগী। সব কিছুই সরকার নিয়ন্ত্রণ করে। সব কিছুতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ এটা প্রমাণ করে যে,তারা আত্মবিশ্বাসী নন। এমনকি তারা বিদেশী প্রভাবকেও ভয় পায়। শুধুমাত্র দক্ষিণ কোরিয়ার কে-পপ ভিডিও দেখার কারণে এই ১০ বছরে কমপক্ষে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আর বিদেশি কোন কিছুর প্রভাবে কিম 'দুষ্টু ক্যান্সার' নাম দিয়েছেন।

প্রতিটি ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা আন্তর্জাতিক শিরোনাম হয়েছে। তবে দেশের মধ্যে গৌরব ধরে রাখতে পরেনি কিম। জনগণ বলে,তাদের রক্ত আর ঘাম শুষে এই পারমানবিক অস্ত্র বানানো হচ্ছে। এমনটাই বললেন উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়া চলে যাওয়া এক ব্যক্তি।

উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়া চলে যাওয়া অপর এক ব্যক্তি বলেন,আমরা এটাকে বিজয় বলছি না। আমরা যা আয় করছি সেটা আমরা মিসাইল পরীক্ষায় ব্যায় করছি। তাই এ কাজকে 'ওয়াও' বলে বাহবা দিতে পারি না।

২০১৬ সালের দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রদূত রাইউকে নতুন নির্দেশ দেয়া হয়। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার কেন পারমানবিক অস্ত্র দরকার সে বিষয়ে ব্যাখা করতে এবং এটা এটাকে বৈধতা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়। আশাকরা হয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোরিয়ার পারমানবিক পরীক্ষাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে শুরু করতে। তবে যা ধারণা করা হয়েছিল, সে মতো কোন কিছুই হয়নি। উত্তর কোরিয়ার পারমানকিব পরীক্ষা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের শেষ হয় কিম আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যকার বৈঠকের মধ্য দিয়ে বলে ধারণা করা হচ্ছি। এ বৈঠক ছিল একটি প্রদর্শনী মাত্র। সিঙ্গাপুরে বৈঠকে বসা দুই নেতার হ্যান্ডশেক করা ছবি ব্যাপক সাড়া ফেলে। গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। তবে পারমানবিক অস্ত্র বৃদ্ধির যে পরিকল্পনা সেখানে কিম খুব সামান্যই সরে আসেন। ফলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় কোরিয়ার ওপর।

উত্তর কোরিয়ার ব্যবসায়ী চোই না-রায়ে বলেন,ট্রাম্প আর কিমের ওই বৈঠক সম্পর্কে ব্যাখ্যার কিছু ছিলো না। ওই বৈঠক কিভাবে পরিস্থিতি উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবে সে বিষয়ে কাল্পনিক কিছু ভাবা যেতে পারে আর কি। কোন চুক্তিই আর হলো না। উত্তর কোরিয়া কখনই পরমানু অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ থেকে সরে আসবে না। উত্তর কোরিয়া মনে করে এ অঞ্চলে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পরমানু অস্ত্রে সমৃদ্ধ হতে হবে।

জু সিওং নামে উত্তর কোরিয়ার এক গাড়ি চালক জানান, ২০২০ সালে প্রতিবেশি চীনে যখন কোভিড হানা দিলো। তখন উত্তর কোরিয়া সীমান্ত বন্ধ করে দিলো। শুধু সীমান্ত নয় ব্যবসাও বন্ধ রাখা হলো। কোরিয়ার ৮০ শতাংশেরও বেশি পণ্য চীন সীমান্ত দিয়ে আসে। ফলে দেশটি চরম সঙ্কটে পড়লো। খাদ্য সঙ্কট দেখা দিলো। অর্থনীতি সঙ্কুচিত হলো, জিনিসপত্রের দাম বাড়লো। পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে খারাপ হতে থাকলো। কিম জং উন এ পরিস্থিতিকে 'চরম দুর্দশা' বলে বর্ণনা করলেন।

কিম সাং-হিউ নামে সাবেক এক চিকিৎসক বলেন, বেশিভাগ ওষুধ কালোবাজারে চলে গেলো। বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে অস্ত্রপচার করা কঠিন হয়ে পড়লো। চিকিৎসা সামগ্রীর চরম অভাব দেখা দিলো। কোভিড মোকাবেলায় প্রস্তুত ছিলো না উত্তর কোরিয়া। করোনায় জনস্বাস্থ্যের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা অজানা,যোগ করেন তিনি।

বর্তমানে চলতে থাকা পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যাওয়া কিছু মানুষ এত বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন যে তারা অভ্যুত্থান চান। আদূর ভবিষ্যতেও উত্তর কোরিয়ায় অভ্যুথানের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।কিম যুগের আবসানের যত ভবিষ্যৎ বাণী সবই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কিমের পারিবারিক শাসন উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। প্রায় ৭০ বছর ধরে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়া। এই প্রতিবেদন তৈরির সময় যাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে তাদের প্রত্যেকেরই একই আশা, উত্তর কোরিয়া সীমান্ত খুলে দেবে, জনগণ স্বাধীনভাবে চলতে শিখবে, কারও কারও শুধু এতটুকুই প্রত্যাশা, তারা যেন তাদের পরিবারের সঙ্গে আবার মিলিত হতে পারেন।

কিম জং উনের শাসনকালে তারা কথা বলার অধিকার হারিয়েছে, গায়ক হায়ুন-হাঙ এমনটাই জানান। আমার নিজের জন্য গান করার অর্থ দাঁড়ায় আমি আমার জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছি। যারা উত্তর কোরিয়া যারা ছাড়ছেন, তারা তাদের মনকে কবর দিয়ে তবেই দেশ ছাড়ছেন।

শাসনামলের ১০ বছর পালন করতে চলেছেন কিম, তার কাছে কয়েক ডজন পারমানবিক অস্ত্র আছে, তবে তার দেশের মানুষ রয়েছে অনাহারে। কিম তার আঙ্গুলের এক ইশারায় একজন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারেন। সে ক্ষমতা তার আছে। উত্তর কোরিয়ার ২৫ মিলিয়ন মানুষ বিশ্ব থেকে আগের চেয়েও বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করছে। আর এ অবস্থা থেকে মুক্তির কোন আশা আদূর ভবিষ্যত দেখা যাচ্ছে না। এখানে যারা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাদের জীবন ঝুঁকির মুখে ছিলে, তারা দেশ ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

কেএফ/জেডএকে

Header Ad
Header Ad

ইয়েমেনের বিমানবন্দর-বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলা  

ছবি: সংগৃহীত

ইয়েমেনের রাজধানী সানার বিমানবন্দর, সেনাবাহিনীর ঘাঁটি ও অন্য একটি শহরের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। সানা ছাড়াও দেশটির বন্দরনগরী হুদাইদাহতেও বিমান হামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিদের ও ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি পরিচালিত আল-মাসিরাহ টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সানা বিমানবন্দর ও এর পার্শ্ববর্তী আল-দাইলামি সেনা ঘাঁটি এবং হুদাইদাহর একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। ইসরায়েলি এই হামলার জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, রাজধানী সানা ও হুদাইদাহ শহরে হামলার ঘটনাকে ‘‘ইসরায়েলি আগ্রাসন’’ বলে অভিহিত করেছে আল-মাসিরাহ টেলিভিশন। এই হামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হুথি বিদ্রোহীরা বলেছেন, রাজধানী সানার একটি বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এছাড়া পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দরনগরী হুদাইদাহর একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও হামলা করা হয়েছে।

তবে ইসরায়েলি হামলায় ইয়েমেনে কোনও হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। কয়েকদিন আগে ইসরায়েলি ভূখণ্ডের বিভিন্ন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এরপর থেকেই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে।

গত বছরের অক্টোবরে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের প্রথম মাস থেকেই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে আসছে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। গত সপ্তাহে হুথিদের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে এক ডজনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলও হুথিদের বিরুদ্ধে দফায় দফায় হামলা করছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেছিলেন, হুথিদের বিরুদ্ধে ‘‘কঠোর আঘাত’’ হানার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতৃত্বকে নির্মুল করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সুপ্রিম কোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ

ছবি: সংগৃহীত

 

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ, প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, বিচারপতি ভবন, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের বাসভবন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ভবন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমেদের সই করা একটি সার্কুলারে এ তথ্য জানানো হয়।

সার্কুলারে বলা হয়, উপর্যুক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার অঙ্গনের সর্বোচ্চ স্থান। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি মহোদয় এবং সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে বিচারকার্য পরিচালনা করে থাকেন। এ ছাড়া দেশের বহুল আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মামলার নথিসহ কয়েক লাখ মামলার নথি অত্র কোর্টে রক্ষিত আছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বিচারপ্রার্থী জনগণকে বিচারিকসেবা প্রদান করা এবং বিভিন্ন মামলার নথি সংরক্ষণের নিশ্চয়তা প্রদানের নিমিত্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কম্পাউন্ড, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, বিচারপতি ভবন, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণের বাসভবন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেরের কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন ভবন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করা অতীব জরুরি।

এ অবস্থায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কম্পাউন্ড, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেস কমপ্লেক্স, বিচারপতি ভবন, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের মাননীয় বিচারপতি মহোদয়গণের বাসভবন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, সু্প্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন ভবন ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারকরণের নিমিত্ত জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েনপূর্বক সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ এ বিষয়ে আনুষঙ্গিক কার্য সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

Header Ad
Header Ad

তিব্বতে ‘বিশ্বের বৃহত্তম’ জলবিদ্যুৎ বাঁধ তৈরি করবে চীন  

ছবি: সংগৃহীত

তিব্বতে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে চীন। তিব্বত মালভূমির পূর্ব পাশে এই প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নিম্নপ্রবাহে ভারত ও বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইয়ারলুং জাংপো নদীর নিম্নপ্রবাহে এই বাঁধ তৈরি হবে বলে। চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী, এ প্রকল্প থেকে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।

বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চীনের মধ্যাঞ্চলীয় থ্রি গর্জেস বাঁধ। এই প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা বার্ষিক ৮ হাজার ৮২০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই প্রকল্পটি চীনের শূন্য কার্বন লক্ষ্য পূরণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। আর প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোকে উজ্জীবিত করবে এবং তিব্বতে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে।

প্রকৌশলগত খরচসহ এই বাঁধ নির্মাণের সার্বিক ব্যয় থ্রি গর্জেস বাঁধ প্রকল্পকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। থ্রি গর্জেস বাঁধ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছিল ৩ হাজার ৪৮৩ কোটি ডলার। এই প্রকল্পের কারণে বাস্তুচ্যুত ১৪ লাখ মানুষকে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। ফলে এই প্রকল্পের মোট ব্যয় বাজেটের চারগুণের বেশি ছিল।

তিব্বতের প্রকল্পের কারণে কত মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে আর এটি স্থানীয় আবাসনকে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করবে কর্তৃপক্ষ তার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। তবে চীনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিব্বতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পরিবেশের ওপর বা নিম্নপ্রবাহে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো প্রভাব ফেলবে না।

চীন এমন দাবি করলেও ভারত ও বাংলাদেশ এ বাঁধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রভাবে স্থানীয় আবাসনের পাশাপাশি নিম্নপ্রবাহের নদীগুলোর পানি প্রবাহ ও গতিপথকেও প্রভাবিত করবে। এতে দুই দেশের লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইয়েমেনের বিমানবন্দর-বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলা  
সুপ্রিম কোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
তিব্বতে ‘বিশ্বের বৃহত্তম’ জলবিদ্যুৎ বাঁধ তৈরি করবে চীন  
ফায়ার ফাইটার নয়ন এর বাড়ীতে শোকের মাতম চলছে
চট্টগ্রামের এক ইঞ্চি মাটিতে হাত দিলে কারও চোখ থাকবে না: ব্যারিস্টার ফুয়াদ  
সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে নষ্ট জাহাজ, মাঝপথে আটকা ৭১ যাত্রী
তিতাসের ১৬ হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন
দর্শনা চেকপোস্টে ভারতীয় মদসহ এক ভুয়া পুলিশ আটক
আগুনে পুড়ল ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, যেখানে অফিস করবেন আসিফ মাহমুদ
অবৈধ বালু ঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান, পালিয়ে গেল বালুখেকোরা  
নসরুল হামিদের ৯৮ ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন: দুদকের মামলা
ত্রিপুরা পল্লীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার
সচিবালয় কিভাবে আওয়ামী মুক্ত করতে হয় সেটা ছাত্র জনতা জানে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
অবৈধ বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ৩১ জানুয়ারির পর
সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ড তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের নতুন কমিটি
টাঙ্গাইলে ২৭ মামলার আসামিসহ ডাকাতচক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার  
তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে সাদ অনুসারীদের অনুরোধ
দেশের অবস্থা ভালো না, শেখ হাসিনা আবারও আসবে: সোলায়মান সেলিম
রেলের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক হলেন মোঃ সুবক্তগীন
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি মির্জা ফখরুলের