বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

১০ বছরের শাসনে নাগরিক চোখে 'অযোগ্য' কিম

২৭ বছর বয়সী কিম জং উন উত্তরসূরী হিসেবে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় আসেন, তাও ১০ বছর হলো। নেতা হিসেবে তিনি কেমন হবেন সে পরীক্ষা তাকে দিতে হয়নি। কিম জং ইলের পর তিনিই রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় আসবেন সেটা নির্ধারিতই ছিল। কিম জং উন তার ১০ বছরের শাসনকালে নানাভাবে হয়েছেন খবরের শিরোনাম। 

৬৯ বছর বয়সী কিম জং ইল মারা যান ২০১১ সালে। উত্তর কোরিয়ার মিডিয়া তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ১৯ ডিসেম্বর। ২৭ বছর বয়সেই তথাকথিত নেতা হিসেবেই পরিচিতি পান বিশ্ব জুড়ে। বিশ্বের বহু দেশের নেতা ভেবেছিলেন তিনি দেশকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। তবে এই ১০ বছরে কিম জং উন শুধু নিজের অবস্থানই শক্ত করেননি। 'কিম জং-ঐক্যবাদ' নামে নতুন এক যুগের সূচনা করেছেন।

ক্ষমতায় আসার পর কিম তার বিরোধীতা করা কয়েক শত মানুষকে হত্য করেছেন। পারমানবিক পরীক্ষা করিয়েছেন। শতাধিক ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছেন। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ব মিডিয়ার নজর কেড়েছেন। পারমানবিক অস্ত্রে বলীয়ান হওয়ার মূল্য এখন দিতে হচ্ছে উত্তর কোরিয়াকে, কোরিয়া এখন আগের চেয়ে বেশি গরীব আরও বেশি বিচ্ছিন্ন একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

কিমকে নিয়ে যা বললেন তারা-

কিম জং ইল যেদিন মারা যান কিম জিউম-হিউক তখন ছাত্র ছিলেন। তিনি চীনে পড়ালেখা করতেন। উত্তর কোরিয়ার অভিজাত পরিবারের সন্তান তিনি। উত্তর কোরিয়ার অল্প কিছু ভাগ্যবানদের একজন, যিনি দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি বলেন, যেদিন কিম জং ইল মারা যান, সেদিন তিনি পার্টি করেছিলেন। এ কাজের জন্য তার মৃত্যুও হতে পারতো। তিনি ভেবেছিলে কিম শাসনের অবসান হলো এবার। আর নতুন শাসক কিম জং উন যেহেতু ইউরোপে পড়ালেখা করেছেন। তাই তার দৃষ্টিভঙ্গী হবে আমাদের মতো। আমি ভেবেছিলাম নতুন যুগের সূচনা হবে উত্তর কোরিয়ায়। চীন বিশ্ব সম্পর্কে আমার চোখ খুলে দিয়েছে।

কিম জিউম-হিউক আরও বলেন, তবে চীনে থাকাকালীন দেশ সম্পর্কে বিশ্ব মিডিয়া, ইন্টারনেটে যে সব তথ্য পেয়েছি, তাতে আমার বিশ্বাস ছিলো পশ্চিমার মিথ্যা বলছে। তবে আমার বিশ্বাস ভঙ্গ হয়, দেশে ফিরে এসে, আমার দেশের ২৫ মিলিয়ন মানুষ জানে না বিশ্ব তাদের সম্পর্কে কীভাবছে। উত্তর কোরিয়ার মানুষ এভাবেই নিজ দেশে অবরুদ্ধ। এদেশের মানুষকে শেখানো হয়েছে,তাদের নেতা প্রতিভাবান, বিশ্বস্ততা পাওয়া যোগ্য।

উত্তর কোরিয়ায় এ কথাও ফিসফিসিয়ে লোকমুখে শোনা যায় যে, কিম জং উন যোগ্য উত্তরসূরী নন, তিনি বিশেষভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত; বলেছেন উত্তর কোরিয়ার সাবেক কুয়েত বিষয়ক রাষ্ট্রদূত রিউ হিউর-উ। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ানরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে উত্তরাধিকারের শাসন দেখতে দেখতে। বিশেষ করে অভিজাতরা। তারা নতুন কিছু চাইছেন। কিমের পরিবার ১৯৪৮ সাল থেকে শাসন করে আসছে। নাগরিকদের শেখানো হয় যে, কিমের বংশের রক্তধারা পবিত্র, দেশ শাসনের জন্য উপযুক্ত, আমাদের এই প্রিয় দেশকে সঠিকভাবে শাসন একমাত্র এ বংশের রক্তই করতে পারবে। তিনি প্রশ্ন করেন, ২৭ বছর বয়সী একজন দেশ শাসন সম্পর্কে কিজানে? কিবুঝে?

২০১২ সালে নতুন নেতা উন দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন,'কোরিয়ানদের আর কখনওই শক্ত বাঁধনে বাঁধা হবে না।' দেশের মানুষ ভাবতে শুরু করলো, নতুন নেতা তাদের ভোগান্তির অবসান ঘটাবে। ১৯৯০ সাল থেকে উত্তর কোরিয়াতে দুর্ভিক্ষ চলছে, হাজার হাজার মুনুষ না খেয়ে মারা গেছে। খাদ্য ঘাটতি দূর করবে নতুন নেতা। খাদ্যের মজুদ বাড়াবে। এটা ছিলো একটি অসাধারণ মুহূর্ত; কথাগুলো বলেছেন পূর্ব-উপকূলীয় প্রদেশের গাড়ি চালক ইয়ু সিওং-জু। তিনি বলেন,পররাষ্ট্র কর্মকর্তাতের নির্দেশ দেয়া হয় বিদেশি বিনিয়োগ সৃষ্টির সুযোগ করে দিতে এবং দেশে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছিল। সুপার মার্কেটগুলোতে পণ্য সরবরাহ বেড়ে ছিলো। আমাদের দেশের পণ্যের মান চীনের পণ্যের থেকে সবদিক থেকে উন্নত ছিলো। আসলে এটা ছিলো আমাদের গর্বের। আমাদের অহংকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলো।

তবে সিংহাসনের জন্য যে বা যারা হুমকি স্বরূপ তাদের প্রতি কিমের সুনজর স্থায়ীত্ব পায়নি। চীন সীমান্ত এলাকার এক ব্যবাসায়ী চোয়ি না-রাই বলেন,যাদেরই কিম হুমকি মনে করেছেন তাকেই হত্যা করেছেন। তরুণ নেতা এভাবেই তার ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। নিজের চাচাকেও সে ছাড় দেয়নি। কুকুরের চেয়েও খারাপ পরিণতি হয়েছে তার। উনের চাচা জ্যাং সং-থায়েক মিত্রদের নিয়ে উনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গঠন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনিই ছিলেন দেশ শাসন করার যোগ্য। তিনি যদি ক্ষমতায় আসতে পারতেন তবে দেশে অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন আসতো। যদিও আমরা যা ভাবছিলাম সেটা করা সহজ ছিলো না। তবে আমরা এমনটাই আশা করছিলাম। আর এমন কথা যখন প্রচার পেয়েছিলো তখনই চাচা জ্যাং সং-থায়েককে চরম পরিণতি ভোগ করতে হলো। দলের ঐক্যে ফাঁটল ধরিয়েছেন জ্যাং সং-থায়েক, এমন অভিযোগ এনে কিম ফাঁসিকে ঝুলিয়ে হত্যা করলেন চাচাকে।

কিমের নৃশংস হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে চীন সীমান্ত দিয়ে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে চেষ্টা করে। তারা শরনার্থী হয়ে সেখানে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। সেটা ঠেকাতে সীমান্তে পাহারা আরও জোরদার করে কিম। কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া হয় সীমান্ত এলাকা ঘিরে। হা জিন-উ, তিনি একজন দালাল, উত্তর কোরিয়া থেকে ১০০ জনকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন। তিনি বলেন,'সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো, যাকেই সীমান্ত পেরুতে দেখবে,দেখামাত্র গুলি করবে। তাদেরকে এ কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে না। আমি প্রথম যখন এ কাজ শুরু করি তখন আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম। তবে আমি দায়িত্ব মনে করে আমার কাজটি করেছি, বলেন হা জিন-উ। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার মনে কেবলই প্রশ্ন আসতো আমি কেন এদেশে জন্ম নিলাম। একটা প্রাণির যে স্বাধীনতা আছে আমার সে স্বাধীনতা নেই। তাই আমি এ ঝুঁকি নিলাম। তবে পরিণতিতে আমাকে দেশ ছাড়তে হলো। আমার মাকে আটক করা হলো। তাকে জেলখানায় এমন নির্যাতন করা হলো যে, তিনি পক্ষাঘাত গ্রস্ত হয়ে পড়লেন। এ ঘটনা তাকে এখনও কষ্ট দেয়।

ভিন্নমতাদর্শী হয়েও কিম জং উন তার বাবার চেয়েও আরও বেশি গ্রহণযোগ্য আরও বেশি আধুনিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ মানসিকতা প্রমাণ করতে চেষ্টা করছিলেন। কিম রি সোল-জু নামে এক গায়িকাকে বিয়ে করেন। স্ত্রীকে সাথে নিয়ে তিনি বিভিন্ন শহর ও গ্রাম ঘুরে বেড়ালেন, স্ত্রীকে আলিঙ্গন করা থেকে ঘোড়ায় চড়া, রোলার কোস্টরে উঠছেন, প্রসাধনী কারখার পরিদর্শন করছেন, এসব ছবি প্রচার করেছেন কিম নিজেকে আধুনিক মানুষ হিসেবে দেখাতে। তবে দেশের সাধারণ নাগরিকের জন্য এ সবই ছিলো নিষিদ্ধ। ইউন মি-সু নামে একজন বলেন, আমি আধুনিক জীবন যাপন করতে চাই। আমি ট্রেন্ড ফলো করতে চাই। তবে আমাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিলো। আমি জিন্স পরতে চাইতাম। অলঙ্কারও পরতে চাই। আমি তাই করলাম। কিন্ত দেশের আইন না মানার জন্য আমাকে তিরস্কার করা হলো জনসম্মুখে। আমাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলো।

হিউন-ইয়ং একজন গায়ক বলেন, তাকে গান গাইতে হবে কিমের প্রশংসা করে। সে অস্বীকৃতি জানালো, আর সে কারণে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হলো। তিনি আরও বলেন, একজন শিল্পী হিসেবে আমি যা করতে চাই তা কখনও করতে পারিনি। অনেক নিয়ম, কঠোর বিধি। কোরিয়ার একজন গায়ক হিসেবে আমি অনেক বেশি ভুক্তভোগী। সব কিছুই সরকার নিয়ন্ত্রণ করে। সব কিছুতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ এটা প্রমাণ করে যে,তারা আত্মবিশ্বাসী নন। এমনকি তারা বিদেশী প্রভাবকেও ভয় পায়। শুধুমাত্র দক্ষিণ কোরিয়ার কে-পপ ভিডিও দেখার কারণে এই ১০ বছরে কমপক্ষে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আর বিদেশি কোন কিছুর প্রভাবে কিম 'দুষ্টু ক্যান্সার' নাম দিয়েছেন।

প্রতিটি ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা আন্তর্জাতিক শিরোনাম হয়েছে। তবে দেশের মধ্যে গৌরব ধরে রাখতে পরেনি কিম। জনগণ বলে,তাদের রক্ত আর ঘাম শুষে এই পারমানবিক অস্ত্র বানানো হচ্ছে। এমনটাই বললেন উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়া চলে যাওয়া এক ব্যক্তি।

উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়া চলে যাওয়া অপর এক ব্যক্তি বলেন,আমরা এটাকে বিজয় বলছি না। আমরা যা আয় করছি সেটা আমরা মিসাইল পরীক্ষায় ব্যায় করছি। তাই এ কাজকে 'ওয়াও' বলে বাহবা দিতে পারি না।

২০১৬ সালের দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রদূত রাইউকে নতুন নির্দেশ দেয়া হয়। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার কেন পারমানবিক অস্ত্র দরকার সে বিষয়ে ব্যাখা করতে এবং এটা এটাকে বৈধতা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়। আশাকরা হয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোরিয়ার পারমানবিক পরীক্ষাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে শুরু করতে। তবে যা ধারণা করা হয়েছিল, সে মতো কোন কিছুই হয়নি। উত্তর কোরিয়ার পারমানকিব পরীক্ষা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের শেষ হয় কিম আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যকার বৈঠকের মধ্য দিয়ে বলে ধারণা করা হচ্ছি। এ বৈঠক ছিল একটি প্রদর্শনী মাত্র। সিঙ্গাপুরে বৈঠকে বসা দুই নেতার হ্যান্ডশেক করা ছবি ব্যাপক সাড়া ফেলে। গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। তবে পারমানবিক অস্ত্র বৃদ্ধির যে পরিকল্পনা সেখানে কিম খুব সামান্যই সরে আসেন। ফলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় কোরিয়ার ওপর।

উত্তর কোরিয়ার ব্যবসায়ী চোই না-রায়ে বলেন,ট্রাম্প আর কিমের ওই বৈঠক সম্পর্কে ব্যাখ্যার কিছু ছিলো না। ওই বৈঠক কিভাবে পরিস্থিতি উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবে সে বিষয়ে কাল্পনিক কিছু ভাবা যেতে পারে আর কি। কোন চুক্তিই আর হলো না। উত্তর কোরিয়া কখনই পরমানু অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ থেকে সরে আসবে না। উত্তর কোরিয়া মনে করে এ অঞ্চলে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পরমানু অস্ত্রে সমৃদ্ধ হতে হবে।

জু সিওং নামে উত্তর কোরিয়ার এক গাড়ি চালক জানান, ২০২০ সালে প্রতিবেশি চীনে যখন কোভিড হানা দিলো। তখন উত্তর কোরিয়া সীমান্ত বন্ধ করে দিলো। শুধু সীমান্ত নয় ব্যবসাও বন্ধ রাখা হলো। কোরিয়ার ৮০ শতাংশেরও বেশি পণ্য চীন সীমান্ত দিয়ে আসে। ফলে দেশটি চরম সঙ্কটে পড়লো। খাদ্য সঙ্কট দেখা দিলো। অর্থনীতি সঙ্কুচিত হলো, জিনিসপত্রের দাম বাড়লো। পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে খারাপ হতে থাকলো। কিম জং উন এ পরিস্থিতিকে 'চরম দুর্দশা' বলে বর্ণনা করলেন।

কিম সাং-হিউ নামে সাবেক এক চিকিৎসক বলেন, বেশিভাগ ওষুধ কালোবাজারে চলে গেলো। বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে অস্ত্রপচার করা কঠিন হয়ে পড়লো। চিকিৎসা সামগ্রীর চরম অভাব দেখা দিলো। কোভিড মোকাবেলায় প্রস্তুত ছিলো না উত্তর কোরিয়া। করোনায় জনস্বাস্থ্যের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা অজানা,যোগ করেন তিনি।

বর্তমানে চলতে থাকা পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যাওয়া কিছু মানুষ এত বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন যে তারা অভ্যুত্থান চান। আদূর ভবিষ্যতেও উত্তর কোরিয়ায় অভ্যুথানের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।কিম যুগের আবসানের যত ভবিষ্যৎ বাণী সবই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কিমের পারিবারিক শাসন উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। প্রায় ৭০ বছর ধরে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়া। এই প্রতিবেদন তৈরির সময় যাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে তাদের প্রত্যেকেরই একই আশা, উত্তর কোরিয়া সীমান্ত খুলে দেবে, জনগণ স্বাধীনভাবে চলতে শিখবে, কারও কারও শুধু এতটুকুই প্রত্যাশা, তারা যেন তাদের পরিবারের সঙ্গে আবার মিলিত হতে পারেন।

কিম জং উনের শাসনকালে তারা কথা বলার অধিকার হারিয়েছে, গায়ক হায়ুন-হাঙ এমনটাই জানান। আমার নিজের জন্য গান করার অর্থ দাঁড়ায় আমি আমার জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছি। যারা উত্তর কোরিয়া যারা ছাড়ছেন, তারা তাদের মনকে কবর দিয়ে তবেই দেশ ছাড়ছেন।

শাসনামলের ১০ বছর পালন করতে চলেছেন কিম, তার কাছে কয়েক ডজন পারমানবিক অস্ত্র আছে, তবে তার দেশের মানুষ রয়েছে অনাহারে। কিম তার আঙ্গুলের এক ইশারায় একজন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারেন। সে ক্ষমতা তার আছে। উত্তর কোরিয়ার ২৫ মিলিয়ন মানুষ বিশ্ব থেকে আগের চেয়েও বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করছে। আর এ অবস্থা থেকে মুক্তির কোন আশা আদূর ভবিষ্যত দেখা যাচ্ছে না। এখানে যারা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাদের জীবন ঝুঁকির মুখে ছিলে, তারা দেশ ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

কেএফ/জেডএকে

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত