সিরিয়ায় আসাদপন্থীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ৭০ ছাড়িয়েছে

ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের অনুসারীদের সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭০ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
ব্রিটিশ সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস শুক্রবার (৭ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, সিরিয়ার উপকূলে প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদস্যদের সঙ্গে আসাদপন্থী বাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ ও অতর্কিত হামলার ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে। সংঘর্ষের সময় কয়েকজন আহত ও বন্দি হন।
সিরিয়াভিত্তিক সংবাদ সংস্থা স্টেপ নিউজ জানিয়েছে, নিহতদের বেশির ভাগই সাবেক সরকারপন্থী যোদ্ধা। এর আগে, ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ও আরব নিউজ তাদের প্রতিবেদনে ৪৮ জন নিহতের খবর দেয়। তাদের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে সরকারি বাহিনীর ১৬ জন, আসাদপন্থী ২৮ জন এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় লাতাকিয়া প্রদেশে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অঞ্চলটি রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত একটি বিমানঘাঁটির কাছে অবস্থিত। গত ডিসেম্বরে বাশার আল–আসাদের পতনের পর এটি আসাদপন্থীদের ওপর সবচেয়ে বড় হামলা। সংঘর্ষের পর আজ সকাল পর্যন্ত সেখানে কারফিউ জারি ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আলাউইত সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র এবং আসাদ পরিবারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উপকূলীয় এলাকাগুলোতেও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি বাহিনী দমন-পীড়ন চালাচ্ছে, ফলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিপুলসংখ্যক সেনা জাবলেহ শহরের দিকে রওনা হয়েছে। একইসঙ্গে হোমস ও আলেপ্পো শহরেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে হোমসের আবাসিক এলাকায় প্রচণ্ড গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে বিবিসি ভিডিওগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এদিকে, সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আবদুল গনি সংঘর্ষে লিপ্ত আসাদপন্থীদের সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, "হাজার হাজার মানুষ ইতোমধ্যে অস্ত্র সমর্পণ করে পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কেউ কেউ পালিয়ে গিয়ে অপরাধীদের আশ্রয় দিচ্ছে এবং মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পথ বেছে নিচ্ছে। অস্ত্র জমা দিন, নয়তো অনিবার্য পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকুন।"
সিরিয়ায় চলমান এই সহিংসতা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
