ক্ষীণ হয়ে আসছে গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা
ছবি: সংগৃহীত
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। এরই মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতায় অবরুদ্ধ ওই ভূখণ্ডে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৮৫ জনে। এর অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছে ৬৮ হাজার ৮৮৩ ফিলিস্তিনি।
এদিকে, দীর্ঘ চার মাসেরও বেশি সময় ধরা চলা এই যুদ্ধে বিরতির চেষ্টায় নানামুখী আলোচনা চললেও এখন তা ভেস্তে যাওয়ার পথে। যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার।
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তুলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আবেদন করেছে আলজেরিয়া। বিষয়টি নিয়ে ১৫ সদস্যের পরিষদে আগামী মঙ্গলবার ভোটাভুটি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আমেরিকা। ফলে ক্ষীণ হয়ে আসছে গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে যুদ্ধবিরতিসংক্রান্ত একটি খসড়া প্রস্তাব তুলেছিল আলজেরিয়া। সে সময় বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, “এ ধরনের প্রস্তাব যুদ্ধবিরতি নিয়ে চলমান সংবেদনশীল আলোচনার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।”
আলজেরিয়া অনুরোধ করেছিল, যেন আগামী মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ বিষয়ে ভোট আয়োজন করা হয়। পরিষদে কোনও প্রস্তাব পাসের জন্য ১৫ সদস্যের মধ্যে অন্তত নয়টির সম্মতির প্রয়োজন হয়। তবে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন বা রাশিয়া যদি ভেটো দেয়, তাহলে সেটি পাসের আর কোনও সুযোগ থাকে না। আর এরই মধ্যে লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলে দিয়েছেন, আমেরিকা এ খসড়া প্রস্তাব সমর্থন করে না। এটা নিয়ে ভোট আয়োজন করা হলে তা তারা গ্রহণ করবে না।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপে দু’বার ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, ইসরায়েল ও কাতারের মধ্যে কয়েকদিন ধরেই আলোচনা চলছে।
লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেছেন, এ আলোচনা ফলপ্রসূ করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা খুবই জরুরি। দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের এ প্রক্রিয়ার মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে এ ধরনের বিষয় তোলা হলে আলোচনা ভেস্তে যেতে পারে।
এমন একসময়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলের এ ভোট হতে যাচ্ছে, যখন রাফায় সর্বাত্মক অভিযান শুরু করছে ইসরায়েল। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ মিশর সীমান্তঘেঁষা ওই এলাকাটিতে আশ্রয় নিয়েছে। রাফা অভিযান নিয়ে এরই মধ্যে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে দেশটির মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, রাফাকে রেহাইয়ের আহ্বান জানিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো কার্যকরভাবে ইসরায়েলকে এ যুদ্ধে পরাজয় মেনে নিতে বলছে। একই সঙ্গে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হামাসের দাবিগুলো ‘বিভ্রান্তিকর’ উল্লেখ করে এ সংক্রান্ত আলোচনা স্থগিত করেন নেতানিয়াহু। সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা