ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি না দিলে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়: সৌদি আরব
ছবি সংগৃহিত
স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকবে না বলে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব। আজ বুধবার সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, সৌদি আরব এবং ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক বলে বাইডেন প্রশাসন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে।
কারবিকে দায়ী করা মন্তব্যের আলোকে ফিলিস্তিন ইস্যুতে ওয়াশিংটনের কাছে তার অবিচল অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য রাজ্যটি বিবৃতি জারি করেছে, মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। কারবির এই বক্তব্যের পর সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিবৃতি দিল। এতে বলা হয়েছে, কারবির ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনের বিষয়ে নিজেদের দৃঢ় অবস্থানের কথা ওয়াশিংটনকে পরিষ্কার করতে এ বিবৃতি দেওয়া হলো।
এরপর সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিবৃতি দিল। এতে বলা হয়েছে, কারবির ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনের বিষয়ে নিজেদের দৃঢ় অবস্থানের কথা ওয়াশিংটনকে পরিষ্কার করতে এ বিবৃতি দেওয়া হলো।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পূর্ব জেরুজালেমসহ ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুযায়ী ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এবং গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ বন্ধ করতে হবে।
এদিকে এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছেন। ব্লিঙ্কেন বলেন, সৌদি যুবরাজ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে তাঁর আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি চান গাজায় যুদ্ধের অবসান হোক।
গত সোমবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ব্লিঙ্কেনের বৈঠক হয়। এর পরদিন গতকাল দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন এসব কথা বলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি নিয়ে যুবরাজ সৌদি আরবের ব্যাপক আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি এটাও পরিষ্কার করেছেন, যেমনটা তিনি এর আগেও আমাকে বলেছিলেন যে তা করতে গেলে দুটি বিষয় প্রয়োজন। তা হলো, গাজায় সংঘাতের নিরসন এবং একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়ার জন্য স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য ও সুনির্দিষ্ট সময়সীমার একটি প্রক্রিয়া নির্ধারণ।’
সৌদি আরব কখনো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে হওয়া আব্রাহাম চুক্তিতেও যুক্ত হয়নি দেশটি। এ চুক্তির আওতায় মরক্কোসহ উপসাগরীয় প্রতিবেশী দেশ বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
সৌদি আরবকেও একই কাতারে যুক্ত করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে সৌদি আরব মৌন সম্মতি দেওয়ার পর থেকে ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
সৌদি বাদশাহ সালমানের ছেলে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানই মূলত নেপথ্যে থেকে সৌদি আরবের শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করেন বলে মনে করা হয়। তাঁর নেতৃত্বে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে রিয়াদের পক্ষ থেকে শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে।