গাজার শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা স্কটল্যান্ডের
স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার হামজা ইউসুফ
আল আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে হামলায় ৫০০ মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার পাকিস্তান বংশোদ্ভূত হামজা ইউসুফ। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনে সহায়তায় একটি স্কিম তৈরি করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আজ বুধবার তুরস্কের সরকারি সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার হাসপাতালে হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার হামজা ইউসুফ।
হামজা ইউসুফ বলেছেন, স্কটল্যান্ড গাজার শরণার্থীদের জন্য নিজের ‘হৃদয় ও ঘরবাড়ি’ খুলে দিতে প্রস্তুত, যেমনটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়া ও ইউক্রেনের শরণার্থীদের জন্য করা হয়েছিল।
তিনি বলেন ,‘আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, স্কটল্যান্ড ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে ইচ্ছুক। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্কটল্যান্ড ভূমিকা রাখতে চায়। আমাদের হাসপাতালগুলো গাজার আহত শিশু-নারী-পুরুষদের চিকিৎসা দেবে।’
গাজায় দিনের পর দিন বেসামরিক মানুষজনের হতাহতের ঘটনায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ইউসুফ বলেন, ‘ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিকদের সঙ্গে হামাস যা করেছে, তা সত্যিই হৃদয়বিদারক তবে আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যে, একজন ফিলিস্তিনির জীবন একজন ইসরায়েলি জীবনের সমান।’
তিনি বলেন, 'মানুষ যদি হাসপাতালে নিরাপদ না থাকে তা হলে যাবে কোথায়? দ্ব্যর্থহীনভাবে জোরালো ভাষায় এই হামলার নিন্দা করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'অতীতে স্কটল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য শরণার্থীদের আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছে। সিরিয়া, ইউক্রেন ও আরও অন্যান্য দেশ থেকে যারা এসেছেন আমরা তাদের স্বাগত জানিয়েছি।… আমরা অবশ্যই আবারও তা করবো।'
স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার হামজা ইউসুফ স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় এই মন্তব্য করেন। গাজায় বেসামরিক মানুষের জীবনের ঝুঁকি তুলে ধরে তিনি জানান, তার শ্যালক গাজার একটি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। পরিস্থিতি এমন যে, কে চিকিৎসা করবে আর কে মারা যাবে- তার মধ্যে যেকোনো একটি চিকিৎসাকর্মীদেরকে বেছে নিতে হচ্ছে।
তিনি যুক্তরাজ্য সরকারকে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য একটি পুনর্বাসন স্কিম প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘গাজা উপত্যকায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তাই আমি যুক্তরাজ্য সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গাজার জনগণের জন্য বিশ্বব্যাপী উদ্বাস্তু কর্মসূচিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ফার্স্ট মিনিস্টার তার বক্তব্যে বলেন, ‘গাজা অবিরাম বোমা হামলার মধ্যে রয়েছে। মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন অসংখ্য পুরুষ, নারী ও শিশু। গাজাবাসীদের কাছে আন্তর্জাতিক সাহায্য পৌঁছানোর অনুমতি দেওয়া জরুরি। ফিলিস্তিনিদের ‘সম্মিলিত শাস্তি’ কখনোই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।’