গাজায় ধ্বংসস্তূপের নীচে এক হাজারেরও বেশি মানুষ
ছবি সংগৃহিত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা এই হামলায় নিহত হয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৯ হাজার ৬০০ জন।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে কাতারের সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি বেসামরিক প্রতিরক্ষা দলের দাবি- গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন।
টানা এক সপ্তাহ ধরে দখলদাররা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যারা নিখোঁজ হয়েছেন, তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা ব্যাপক। ভাবনগুলোয় হামলার ২৪ ঘণ্টা পর বহুজনকে বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
মূলত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত সপ্তাহে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের এই অভিযানে কার্যত হতবাক হয়ে পড়ে ইসরায়েল।
হামাসের এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১৪০০ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্যও রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া হামাসের হামলার জবাবে গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে গাজায় অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
আল জাজিরা বলছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৬৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও ৯ হাজার ৬০০ জন।
এদিকে হামাসের হামলার পর থেকেই গাজায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাদ্য, পানি ও পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে ভূখণ্ডটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ যে, গাজার হাসপাতালগুলো চালু রাখার জন্য মাত্র ২৪ ঘণ্টার জ্বালানি অবশিষ্ট আছে বলে জানিয়ে দিয়েছে জাতিসংঘ।
অর্থাৎ গাজার হাসপাতালগুলোতে থাকা জ্বালানির মজুদ আগামী ২৪ ঘণ্টা বা এর কিছু কম বা বেশি সময়ের মধ্যে ফুরিয়ে যেতে পারে। এতে করে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে হাজার হাজার রোগীর জীবন।
অন্যদিকে ইসরায়েলি বোমা হামলার পর গাজার চারটি হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলি বোমা হামলার পর উত্তর গাজার অন্তত চারটি হাসপাতাল আর কাজ করছে না। এমনকি অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের আরও ২১টি হাসপাতালকে ইসরায়েল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
জাতিসংঘের এই স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, ‘হাসপাতাল থেকে জোরপূর্বক রোগীদের সরিয়ে দেওয়া হলে তা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে’।