এইচএমপিভি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই: আইইডিসিআর
ছবি: সংগৃহীত
হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (এইচএমপিভি) নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউর (আইইডিসিআর)।
বুধবার (৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন এ কথা বলেন।
তিনি জানান, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে প্রথম এই ভাইরাসটি শনাক্ত হয় এবং এরপর প্রতিবছর কমবেশি ভাইরাসটি শনাক্ত হচ্ছে। তবে, ভাইরাসটি শনাক্ত হলেও এখনও এর সঙ্গে কোনো ধরনের জটিলতা বা গুরুতর রোগের ইতিহাস পাওয়া যায়নি, সুতরাং এই মুহূর্তে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, "এই ভাইরাস তেমন ক্ষতিকারক নয়। এর উপসর্গ সাধারণ নিউমোনিয়া বা ঠাণ্ডাজনিত রোগের মতো, যেমন জ্বর, সর্দি, কাশি, এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতে পারে। তবে, মৃত্যুর ঝুঁকি অত্যন্ত কম। মৃত্যুর কোনো উল্লেখযোগ্য হার নেই, তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।"
এদিকে, সম্প্রতি চীন ও জাপানে এইচএমপিভি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারতে দুটি শিশুর শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশও এই বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছে। তবে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারত ও চীনে পাওয়া এই ভাইরাসের ধরনগুলো একে অপর থেকে আলাদা এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি তেমন উদ্বেগজনক নয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেসিক সায়েন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন, অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বাসসকে বলেন, "এই ভাইরাসটি আমাদের দেশে বহু আগে থেকেই রয়েছে এবং এটি তেমন ক্ষতিকারক নয়। সাধারণত শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরাই এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হন এবং তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, ব্যথা, বমি এবং নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গও দেখা যায়। তবে এতে মৃত্যুর শঙ্কা খুব কম।"
এছাড়া, এইচএমপিভি ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসে। এটি সরাসরি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়, বিশেষ করে যদি তারা একে অপরের খুব কাছে আসে। এছাড়া, আক্রান্ত জায়গা বা বস্তু স্পর্শ করলেও ভাইরাসটি ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত শ্বাসতন্ত্রের উপরের অংশে মাঝারি ধরনের সংক্রমণ হয় এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণের মতোই মনে হয়, যেখানে সর্দি, কাশি এবং জ্বরের উপসর্গ দেখা যায়।
এই ভাইরাসটি নিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো বড় ধরনের উদ্বেগ বা সতর্কতা জারি করা হয়নি, তবে পরিস্থিতি নজরদারি করা হচ্ছে।