গত ১ মাসে করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে ঢামেকে মৃত্যু ১২৮
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে করোনা ইউনিটে করোনাভাইরাসে ও উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত এক মাসে ১২৮ জন মারা গেছেন।
এরমধ্যে করোনায় পজেটিভে মারা যান ৪৫ জন। আর অন্যরা মারা গেছেন করোনা উপসর্গ নিয়ে। অপরদিকে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ৪১৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ভর্তিদের মধ্যে পরীক্ষা করে ৫৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে আবার অনেকেই চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে চলে গেছেন।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরে জেলা থেকে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এক মাস ধরে প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কোরোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের নতুন ভবনে আমরা নরমাল রোগী ভর্তি নিচ্ছি না। তার কারণ হলো মেডিসিন বিভাগের ওয়ার্ডগুলোতে এখন করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি রাখা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মেডিকেল-২ নতুন ভবনের নয় তলায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি নেওয়া হত। যেহেতু এখন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, তাই আমরা আগের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার শুরু করেছি। তৃতীয় তলায় থেকে ৯ম তলা পর্যন্ত করোনা আক্রান্তদের ভর্তির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।’
করোনা রোগীদের সংখ্যা যদি আরও বেড়ে যায় তাহলে আগের মতোই পুরো ভবন করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি। পরিচালক বলেন, ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত গত এক মাসে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আাসা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে ১২৮জন মারা গেছেন। আমাদের হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সব ধরনে ব্যবস্হা রয়েছে। আমাদের ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক রোগীদেরকে সেবা দিয়ে আসছেন। আল্লাহর রহমতে কোন সমস্যা হবে না। হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা.হাফিজ সরকার বলেন, ‘ঠাণ্ডা-কাশি, জ্বরে ও রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন ২৫/৩০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তবে এ পর্যন্ত করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে ৪১৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে ৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত পাওয়া গেছে।’
তিনি আরও জানান, ২০২১ সালের শেষের দিকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমে গিয়েছিল। প্রতিদিন রোগী ভর্তি হলেও সে সংখ্যা খুবই কম ছিল। তবে এ বছর প্রথম থেকেই করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা আবারও বেড়েছে।
আমরা তাদের সুচিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এদিকে ঢামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের কর্তব্যরত ওয়ার্ড মাষ্টার মো.রিয়াজ উদ্দিন জানান, বর্তমানে করোনা ওয়ার্ডগুলোতে শিশু, নারী ও পুরুষ মিলে ৪১৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করাও হচ্ছে। হাসপাতালের মর্গের কর্তব্যরত ওয়ার্ড মাষ্টার মো. আব্দুল গফুর জানান, চলতি বছরে প্রথম মাসে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনাভাইরাসে পজেটিভ ও উপসর্গ নিয়ে ১২৮ জন মারা গেছেন। পরে মরদেহ তাদের আত্মীয় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এএইচ/এমএমএ/