বাসি ভাত গরম করে খেলে হতে পারে প্রাণঘাতী রোগ
ছবি সংগৃহিত
বাঙালিদের ভাত ছাড়া মুখ রোচে না। বেশিপভাগ বাড়িতেই আগেরদিনের ভাত পরেরদিন গরম করে খাওয়ার চল আছে। আবার কখনও সকালের ভাত রাতেও গরম করে খাওয়া হয়। তবে জানেন কি, ভাত বারবার গরম করলে তাতে বিষক্রিয়া হতে পারে। তাই এমন কাজ ভুলেও করবেন না। বরং, যতটা প্রয়োজন ঠিক ততটা ভাতই রান্না করার চেষ্টা করুন।
ভাত রান্নার পর যদি দীর্ঘ সময় সাধারণ তাপমাত্রায় সেটা রাখা থাকে তাহলে ‘ব্যাসিলাস সিরিয়াস’ নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া তৈরি হতে থাকে। । সেই ভাত আবার গরম করা হলে ওই ব্যাকটেরিয়া বিষাক্ত হয়ে যায়। আর তারপর তা খেলে ডায়রিয়া, বমির সহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কর্মজীবীদের রান্নাবান্নার পেছনে খুব বেশি সময় ব্যয় করার সুযোগ হয় না অনেক সময়। একদিন রান্না করে সেটা বেশ কয়েকদিন ফ্রিজে রেখে খাই আমরা। আবার সকালে ভাত রান্না করে সেটি রাতে গরম করে খাই। তবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কেবল গরম ভাত খেলেই হবে না, খেতে হবে টাটকা ভাত। এমন তথ্য জানিয়েছে ব্রিটেনের ‘ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি’র একটি গবেষণা।
বাসি ভাত গরম করে খেলে হতে পারে যেসব রোগ
১। ভাত বারবার গরম করলে তার পুষ্টিগুণ চলে যায়। বাড়ে নানা অসুখের ঝুঁকি। ডায়রিয়া থেকে শুরু করে হতে পারে নানা জটিল অসুখ।
২। ঠান্ডা ভাতে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। যা গরম করলেও মরে না, বরং গরম করলে ক্ষতি আরও বেশি হতে পারে। এই ভাত খেয়ে যে অসুখ হয় তাকে ফ্রায়েড রাইস সিনড্রোম বলে। যা শরীরের ভয়ানক ক্ষতি করে।
৩। ভাত বারবার গরম করে খেলে বমি বমি ভাব হতে পারে। সেই সঙ্গে হতে পারে ডায়রিয়াও।
৪। বাসি ভাত গরম করে খেলে কার্ডিওভ্যাসকুলার অর্থাৎ হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে- এমনটাই ম্যানচেষ্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা তাদের গবেষণায় তুলে ধরেছেন।
৫। অতিরিক্ত বমি এবং মলত্যাগের কারণে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যেতে থাকে। পানির অভাবে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে। পেটের পেশির দ্রুত সঙ্কোচন-প্রসারণের ফলে যন্ত্রণা হতে শুরু করে। সাথে কারো কারো সারা শরীরেও ব্যথা লক্ষ করা যায়।
এই ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়
১। বেঁচে যাওয়া খাবার বেশিক্ষণ বাইরে ফেলে রাখা যাবে না। বিশেষ করে ভ্যাপসা আবহাওয়া এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এ ধরনের ব্যাক্টেরিয়া উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। একই সাথে তাদের বিষক্রিয়ার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পেতে থাকে।
২। অনেকে দুপুরে ভাত খেয়ে বেঁচে গেলে তা রাইসবোলের মধ্যে তুলে রাখে। পাত্রটি মাইক্রোওয়েভ প্রুফ হলে তা গরমও করে নেয় অনেকে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, খাবার সুরক্ষিত রাখতে হলে কাচের, বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করাই ভালো। রান্না করা ভাত ফ্রিজে তোলার আগে দেখে নেয়া জরুরি যে তা পুরোপুরি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এসেছে কি-না।
৩। বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করা থেকে সঠিক তাপমাত্রায় রাখা- সবই করে। তারপরেও যদি মনে কোনো সন্দেহ থাকে, তবে খাবারের প্রতি মায়া না রেখে চোখ বন্ধ করে তা ফেলে দিতে হবে।