‘আমরা এখন যেকোনো ঢেউ মোকাবিলা করতে পারি’
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও হাসপাতালে রোগী কম ও মৃত্যুও কম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তবে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ৮৫ ভাগই করোনা টিকা নেননি।
এ সময় করোনা মোকাবিলায় সরকারের সক্ষমতা তুলে ধরে বলেন, ‘ডেলটা ভ্যারিয়েন্টকে আমরা সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেছি। কিন্তু আমাদের অনেক ঘাটতি ছিল। পর্যাপ্ত অক্সিজেন ছিল না, পর্যাপ্ত শয্যা ছিল না, ডাক্তার-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিজ্ঞতা ও মনোবল কম ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করে আসায় আস্থা, সাহস বেড়ে গেছে। আমরা এখন যে কোনো ঢেউ মোকাবিলা করতে পারি, সে সক্ষমতা আমাদের হয়েছে।’
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে অমিক্রনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালের প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত এক ভা মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) এ সভার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে খুবই স্বল্প সংখ্যক (মুমূর্ষু) রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অমিক্রন মাইল্ড হলেও আক্রান্তের সংখ্যা যদি বেশি হয় সেক্ষেত্রে মৃত্যুও বাড়বে। করোনা মোকাবিলায় মাস্ক পরাসহ সবাইকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলো গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বর্তমান তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় অতীতের মতো বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘সংক্রমণ যখন কমে এসেছিল, তখন মৃত্যুও শূন্যের কোটায় চলে এসেছিল। আমরা ধারণা করেছিলাম করোনা এবার বিদায় হবে। কিন্তু তখন আমাদের জনগণের মধ্যে অতিমাত্রায় কনফিডেন্স চলে এসেছিল। মাস্ক ছাড়া চলাচল করেছি, কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানিনি। কক্সবাজার যারা গিয়েছে তারা কেউ মাস্ক পরেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যখন সংক্রমণ কমেছে তখন আমরা দেখেছি প্রচুর বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে। হাজার হাজার লোক সেগুলোতে গিয়ে জটলা পাকিয়েছে। কিন্তু তাদের মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব ছিল না। আমরা এখনও দেখছি বাণিজ্য মেলায় খুব কম মানুষই মাস্ক পরছেন। বাজারে খুব কম লোকই মাস্ক পরছেন। এসব কারণেই সংক্রমণ বেড়েছে।’
সারাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেলেও অমিক্রন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো ভয়াবহ নয় বলে সভায় মন্তব্য করেন বিপিএমসিএ’র সভাপতি এম এ মবিন খান।
তিনি বলেন, করোনা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সসহ সবাই প্রস্তুত রয়েছেন।
এম এ মবিন খানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের পরিচালক (শিক্ষা) এ এইচএম এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. ফরিদউদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান।
এ সময় বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এমএমএ/