সেন্ট্রাল হাসপাতাল আমার নাম ব্যবহার করে অনিয়ম করেছে: ডা. সংযুক্তা
রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় নবজাতক ও প্রসূতি মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. সংযুক্তা সাহা। তার দাবি, সেন্ট্রাল হাসপাতাল তার নাম ব্যবহার করে অনিয়ম করেছে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) রাজধানীর পরীবাগের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ডা. সংযুক্তা সাহা বলেন, প্রয়াত আঁখিকে শুক্রবার (১০ জুন) সেন্ট্রাল হাসপাতালে আমার অধীনে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো মৌখিক বা লিখিত অনুমতি গ্রহণ করেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিথ্যা তথ্য দিয়েছে যে আমি দেশে আছি। সেন্ট্রাল হাসপাতাল আমার নাম ব্যবহার করে অনিয়ম করেছে।
তিনি বলেন, আঁখি যখন হাসপাতালে তখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম। আমার টিকিট ও বোর্ডিং পাস আমার কাছে আছে। এমনকি আমি ভিডিও কলেও অপারেশন মনিটর করিনি। সব মিথ্যা।
আঁখি এবং তার সন্তানের জন্য শোক প্রকাশ এবং বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি। ডা. সংযুক্তা বলেন, আমি নবজাতকের বাবার প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। আমাদের সবার জন্য এই অবহেলাজনিত মৃত্যু কাম্য নয়। আসুন আমরা এই সমস্যাটি এড়িয়ে না গিয়ে প্রকৃত দোষীকে খুঁজে বের করি।
একটি স্বার্থান্বেষী মহল এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ও নিজেদের দোষ আড়াল করার জন্য সর্বপন্থা অবলম্বন করছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করতে সদা ব্যস্ত আছেন। তাদেরকে খুঁজে বের করা উচিত।
প্রসঙ্গত, গত ৯ জুন কুমিল্লার তিতাস উপজেলা থেকে রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে প্রসবের জন্য আনা হয়েছিল মাহবুবা রহমান আঁখিকে। তিনি সেন্ট্রাল হাসপাতালে অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার তত্ত্বাবধানে ছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা।
তবে নরমাল ডেলিভারির পরিবর্তে আঁখির অস্ত্রোপচার করা হয়। সেটাও করেন অন্য চিকিৎসক। কেননা তখন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সংযুক্তা সাহা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। প্রসবের রাতেই নবজাতকের মৃত্যু হয়।
ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় আঁখি মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছেন অভিযোগ করে ধানমন্ডি থানায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’র একটি মামলা দায়ের করেন তার স্বামী ইয়াকুব। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এ মামলায় ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ১৮ জুন দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আঁখি।