অমিক্রন নয়, ৮০ ভাগ রোগী অন্য ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত
দেশে শনাক্ত হওয়া ২০ শতাংশ রোগী করোনার নতুন ধরন ‘অমিক্রন’ আক্রান্ত হলেও বাকি ৮০ শতাংশ রোগীই করোনার অতি-সংক্রামক ডেল্টা বা অন্য ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত। এ তথ্য জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) বিএসএমএমইউ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, এমন কোনো রোগীর জিনোম সিকোয়েন্সিং করে গত এক মাসে অমিক্রন শনাক্ত হয়নি। সংগৃহীত ৯৬টি নমুনার মধ্যে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে অমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়েছে। তবে এর কোনোটি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর নমুনা নয়।’
হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের থেকে সংগৃহীত করোনার নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে শতভাগ রোগীর ক্ষেত্রে ডেল্টা ধরন শনাক্ত হয়েছে।’
জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিকস অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা আঞ্জুমান বানু।
তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত করোনার ৯৬টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। এসব নমুনা হাসপাতালে ভর্তি রোগী, হাসপাতালের আউটডোরে আসা রোগী ও বিভিন্ন জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত ৯৬টি নমুনার মধ্যে ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে অমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়েছে। পরবর্তী মাসে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট গুণিতক হারে বৃদ্ধির আশঙ্কা করা যাচ্ছে।’
উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অমিক্রনের উপসর্গ সাধারণত মৃদু হতে দেখা যাচ্ছে। তবে দীর্ঘস্থায়ী অন্য রোগ আছে, এমন ব্যক্তি অমিক্রন বা যেকোনো ধরনে আক্রান্ত হলে জীবনের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। সুতরাং অমিক্রনকে হাল্কাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান গবেষণা গত বছরের ২৯ জুন থেকে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশের করোনা রোগীদের ওপর পরিচালিত হয়। দেশের সব বিভাগের রিপ্রেজেন্টটিভ নিয়ে স্যাম্পলিং করা হয়েছে। গবেষণায় ৯ মাসের শিশু থেকে ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা সব ধরনের রোগীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১ থেকে ৫৮ বছর বয়সের রোগীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এতে মোট ৭৬৯ কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর ন্যাযোফ্যারিনজিয়াল সোয়াব স্যাম্পল থেকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়।’
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যাদের ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস রয়েছে- তাদের মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি ষাটোর্ধ্ব রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হলে সেক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।
এপি/এমএসপি