আজ অধ্যাপক ডা. এ. কিউ. এম. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জন্মদিন
আগামীকাল ১১ অক্টোবর, বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশের খ্যাতিমান চিকিৎসা অধ্যাপক ও মন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ. কিউ. এম. বদরুদ্দোজা চৌধুরী ৯২তম জন্মদিন পালন করে ৯৩ বছরে পা রাখবেন।
প্রখ্যাত পালামেন্টারিয়ান এই কৃতি মানুষটি বর্ণাঢ্য কর্মজীবন পার করে চলেছেন।
এ. কিউ. এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। এই বাড়িটি ‘মুন্সেফ বাড়ি’।
তার বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী। গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর থানার মজিদপুর দয়হাটা গ্রামে।
কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক-প্রজা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রী ছিলেন। তিনি একজন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ।
তার ছেলে বদরুদ্দোজা চৌধুরী একজন অবিশ্বাস্য মেধাবী ও অত্যন্ত ভালো ছাত্র। ১৯৪৭ সালে ঢাকার বিখ্যাত স্কুল সেন্ট গ্রেগরি থেকে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেছেন।
১৯৪৯ ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেছেন।
১৯৫৪-’৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে থেকে পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে এম.বি.বি. এস. ডিগ্রি লাভ করেছেন।
শিক্ষাজীবনের সব পরীক্ষাতেই মেধা তালিকায় তার অবস্থান ওপরের দিকে।
ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী যুক্তরাজ্যের তিনটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিশ্বখ্যাত উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-দি রয়াল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ লন্ডন, দি রয়াল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ এডিনবার্গ ও দি রয়াল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ গ্লাসগোর এফআরসিপি, নির্বাচিত ফেলো-বাংলাদেশের (সম্মানিত) এফসিপিএস। তিনি বিসিপিএসের অন্যতম উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ডা. এ. কিউ. এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী রোগবিজ্ঞানে দেশের একজন শীর্ষ অধ্যাপক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) ‘আপনার ডাক্তার’ অনুষ্ঠানের অসাধারণ উপস্থাপক।
সফল পার্লামেন্টেরিয়ান হিসেবে তিনি খুবই খ্যাতিমান।
বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী তার দল বিএনপির হয়ে জাতিসংঘে তিনবার বক্তৃতা দেওয়ার বিরল সৌভাগ্যবান।
এই দেশের সবচেয়ে বড় পুরস্কার ‘স্বাধীনতা’ পদক লাভ করেছেন।
অনেক গ্রন্থ প্রণেতা অধ্যাপক ডা. এ. কিউ. এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয়েছিল সেক্টর কমান্ডার ও স্বাধীনতার অন্যতম নায়ক রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের অনুরোধে, ১৯৭৮ সালে।
বি. চৌধুরী বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব। তার বাবার নির্বাচনী এলাকা মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত। সেবারই কেবিনেটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ১৯৯১ সালে দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য। প্রথমে শিক্ষা ও পরে সংসদ উপনেতা। ১৯৯৬ সালে সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা। ২০০১ সালে বি. চৌধুরী সংসদ সদস্য। ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন প্রখ্যাত এই গুণী।
অধ্যাপক ডা. এ. কিউ. এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ২০০৪ সালের ৮ মে ‘বিকল্পধারা বাংলাদেশ’ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর ছেলে মাহী.বি. চৌধুরী সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। বিকল্পধারার প্রার্থী হিসেবে কুলা প্রতীকে উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত। বদরুদ্দোজা চৌধুরী এখনও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অধ্যাপক ডা. এ. কিউ. এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সহধর্মিনী হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরী। তাদের বড় মেয়ে মুনা চৌধুরী ব্যারিস্টার। ছোট মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী বাবার প্রতিষ্ঠিত ঢাকার উত্তরার উইমেন্স মেডিকেল অ্যান্ড হাসপাতালের অধ্যাপক। তাদের ভাই মাহী বিকল্পধারা’র অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলীয় মুখপাত্র। তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য।
অধ্যাপক ডা. এ. কিউ. এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জন্মদিনে আগামীকাল ১১ অক্টোবর ঢাকার নতুন বাজারের উল্টোদিকে কূটনৈতিক এলাকা বারিধারায় ‘বাসভবন মায়া-বি-’তে অনুষ্ঠান আছে।
ওএফএস।