মিটফোর্ড হাসপাতালের এমআরআই মেশিন ২ মাস বন্ধ
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) এমআরআই মেশিন দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকায় যার কারণে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাসপাতালে সেবা নেওয়া রোগী ও তার স্বজনেরা।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসাপাতাল) অ্যান্ড হাসপাতাল সরেজমিন ঘুরে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
রোগীর স্বজনদের দাবি, এমআরআই মেশিন বন্ধ থাকায় টেস্ট করতে অতিরিক্ত টাকা যাচ্ছে এবং রোগিদের টানাহেঁচড়া করতে অসুবিধা হচ্ছে এবং বিভিন্ন ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। তাদের অভিযোগ, বাইরে টেস্ট করায় রোগীর পকেট কাটছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
অবশ্য এসব বিষয় নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমান এমআরআই বন্ধ রয়েছে সামনের সপ্তাহে ঠিক করা হবে। এমআরআই মেশিন ওয়ারেন্টির মধ্যে আছে এজন্য আমরা ঠিক করছি না। মেশিনটি ফিলিপস কোম্পানির হওয়ায় ওটা দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।
মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে এমআরআই মেশিন বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শিকার হয়ে ফিরোজ নামের এক ব্যক্তি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বাইরে টেস্ট করতে গেলে পকেট কাটছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে তারা। হাসপাতালের মেশিন চালু থাকলে আমাদের খরচ ও কম হত ভোগান্তি ও কম হত।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) থেকে রোগি নিয়ে সন্দ্বীপ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এমআরআই করতে যােওযার পথে কাঞ্চন মিয়া বলেন, এখানের মেশিন বন্ধ এজন্য বাইরে চেস্ট করতে যাচ্ছি। তিনি, অভিযোগ করে বলেন, আমরা গরিব মানুষ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসি। বাইরে যদি বিভিন্ন টেস্ট করতে হয় তাহলে তো প্রাইভেট হাসপাতালে রোগি ভর্তি করা ভালো।
এমআরআই মেশিন বন্ধ থাকায় ক্ষুদ্ধ হয়ে এক রোগীও স্বজন নাজমা বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ টাকা পয়সা নেই। যদি দীর্ঘদিন হাসপাতালের মেশিন যদি বন্ধ থাকে তাহলে আমরা চিকিৎসা পাব কীভাবে? তিনি বলেন, অবিলম্বে এমআরআই মেশিন ঠিক করার জন্য হাসপাতাল কতৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।
বংশাল থেকে এসে মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন রহিমা বেগম। এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘রোগী দেখানোর আগে ডাক্তাররা বিভিন্ন টেস্ট দেয়, সেই টেস্টগুলো বাইরের ক্লিনিক থেকে করতে হয়, যার কারণে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়।’
পাপন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ঠিক মতো ডাক্তাররা রোগী দেখতে চান না। তা ছাড়া, এমআরআই মেশিন বন্ধ থাকায় আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশীদ উন নবী বলেন, ‘অধিকাংশ টেস্ট বাইরে করাতে হয়, একটা কারণ হলো আমার এখানে যে রোগী থাকে ১১১৩ জন। সব রোগীদের এক ল্যাবে টেস্ট করা সম্ভব হয় না বিধায় বাইরে পাঠাতে হয়। আবার সব টেস্ট এখানে হয় না। আমার এখানে যে বড় টেস্ট আছে অনেক সরকারি হাসপাতালে নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানের টেস্টর জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট ডায়গনিস্টক সেন্টারের কথা বলে দেওয়া হয় না।’
রোগীদের ওষুধ দেওয়া হয় শুধু গ্যাস্ট্রিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা ভুল! এখানে ৫০০ রকমের ওষুধ আছে । অধিকাংশ দেওয়া হয়। সরকারি ৭০ শতাংশ ইডিসিএল থেকে কেনা হয়। সরকারি টাকায় সরকারি ওষুধ কেনা হয়।’
এমআরআই মেশিন বন্ধ কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সামনের সপ্তাহে ঠিক করা হবে। এমআরআই মেশিন ওয়ারেন্টির মধ্যে আছে। ফিলিপস কোম্পানির ওটা, দুই মাস ধরে বন্ধ।’
মিটফোর্ড হাসপাতালে রোগী নিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন সেবা নেওয়া রোগী ও তার স্বজনেরা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে যোগদান করার পর কোনো ভোগান্তি নেই। তবে জনবলের সংকট রয়েছে, হয়তো এ কারণে রোগিরা কিছুটা ভোগান্তির শিকার হতে পারে এটা মেনে নেওয়া যায়। তা ছাড়া আমাদের হাসপাতালে অন্যে কোনো সমস্য নেই।’
কেএম/এমএমএ/