৫০০ ধরনের ওষুধ বরাদ্দ থাকলেও দেওয়া হয় শুধু গ্যাস্ট্রিকের
নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের চিকিৎসা সেবার প্রধান ভরসা সরকারি হাসপাতাল। তবে সরকারি হাসপাতালের সেবা পাওয়া সবার ভাগ্যে জোটে না। ক্ষমতাবানদের দাপট সবখানেই। সরকারি হাসপাতালেও ভিন্ন চিত্র নয়।
সরকারি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে পাঁচ শ ধরনের ওষুধ সরবরাহের দাবি করলেন কর্তৃপক্ষ। রোগীরা বললেন উল্টো কথা। শুধু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ আর ব্যথার ওষুধ ছাড়া অন্য কিছুই দেওয়া হয় না।
বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসাপাতাল) অ্যান্ড হাসপাতাল সরেজমিন ঘুরে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দেখা হয় কামরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি এক সপ্তাহ আগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। হাসপাতালের ডাক্তাদের চিকিৎসা ও নার্সদের সেবায় মুগ্ধ কামরুলের মুখে না পাওয়ার হতাশাও ছিল।
তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আমি পাঁচ দিন ভর্তি ছিলাম। প্রতিদিন গড়ে ৪টি টেস্ট লাগত। অধিকাংশ টেস্ট বাইরে থেকে করতে হত। টেস্টের সিলিপ ধরিয়ে একজনের নাম লিখে দিতেন এবং বলতেন, এই লোককে ফোন করলে স্যাম্পল নিয়ে যাবে।’
যিনি স্যাম্পল নিতেন তিনি কি হাসপাতালের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, পপুলার ডায়গনেস্টিক সেন্টারের। হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় কী কী ওষুধ ফ্রি পেয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘শুধু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দেয়। আর সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে বলে।’
হাসপাতালে ঢুকতেই চোখে পড়ে ‘এমএইচ মেডিকেল হল’ নামে একটি ফার্মেসি। হাসপাতালে যারাই ডাক্তার দেখাচ্ছেন সকলের হাতেই একটা টিকিট ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসেই ভিড় করছেন এই ফার্মেসির সামনে। কয়েক জন রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ডাক্তাররা যে ওষুধ লেখেন তার সবই এই ফার্মেসিতে মেলে। দামেও কম।’
ওষুধের দাম কম রাখার কারণ অনুসন্ধান করে জানা যায় হাসপাতালে সরকারি যে ওষুধ দেওয়ার কথা তার বড় একটি অংশ এই ফার্মেসিতে চলে আসে।
কামরুলের মতো আরও একজন রোগি জাহিদুল ইসলাম তার স্ত্রীকে ডাক্তার দেখিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলেন। জরুরি বিভাগের সামনে কথা হয় জাহিদুলের সামনে। হাসপাতাল থেকে কী কী ওষুধ পেয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, শুধু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ।
তবে রোগীদের এই অভিযোগ মানতে নারাজ স্যার সলিমুল্লাহ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রশীদ উন নবী। তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, শুধু গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দেওয়া হয় এটা ভুল শুনেছেন। আমার এখানে ৫০০ রকম ওষুধ আছে। অধিকাংশ দেওয়া হয়। যে ওষুধ আছে তার ৭০ ভাগই ইডিসিএল থেকে কেনা হয়। কাজেই অভিযোগটি সত্য না।
এসএম/এমএমএ/