আইসিইউতে তালা, পরিচালক বললেন স্টোর রুম
গুরুতর অসুস্থ রোগীকে সুস্থ করে তুলতে বেশিরভাগ সময়েই ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়। সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেড পাওয়া অনেকটাই কষ্টসাধ্য। যাদের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলার সুযোগ রয়েছে তাদের জন্য হয়তো সহজ কিন্তু সাধারণের জন্য এটি না। তবে সেই আইসিইউ যদি বন্ধ রাখা হয় তাহলে রোগীর কষ্ট যেন আরও বেড়ে যায়।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এমন ঘটনাই ঘটেছে। বছর খানেক ধরে আইসিইউ-২ বন্ধ রয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় সবকিছু থাকলেও কী অদৃশ্য কারণে সেটি বন্ধ রয়েছে তার জবাব উপযুক্ত জবাব মেলেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
রবিবার (২৮ আগস্ট) সরিজমিনে ঘুরে দেখা গেছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে দুইটি পৃথক কক্ষ রয়েছে। তার একটি আইসিইউ-১ অন্যটি আইসিইউ-২। আইসিইউ-১ এ যে ১০টি বেড রয়েছে তার অধিকাংশেই রোগী ভর্তি। তবে আইসিইউ-২ এর গেটে সিকলসহ তালা ঝুলছে।
আইসিইউ ওয়ার্ডে কর্মরত এক নার্সের কাছে জানতে চাইলে বলেন, আইসিইউ-২ চালু করা হয়েছিল, এখন লোক নাই তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কবে থেকে বন্ধ জানতে চাইলে ওই নার্স বলেন প্রায় বছর খানেক।
অন্য এক স্টাফ বলেন, ‘আইসিইউতে যে ভেন্টিলেটর দরকার সেগুলো পর্যাপ্ত নেই। আইসিইউ-২ তে যে ভেন্টিলেটর ছিল তার দুইটি আইসিইউ-১ এ নিয়ে আসা হয়েছে। তবে এখানে এনেও সেটি কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কারণ আইসিইউ-১ ওই ভেন্টিলেটর স্থাপনের ব্যবস্থা নেই।
সাধারণত রোগীর অবস্থা সংকটজনক হলে আইসিউতে সবরকমের সাপোর্ট দিয়ে রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনাই এ ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য।
হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রোগীর যাবতীয় শারীরিক সংকটের মোকাবিলার জন্য নানা ব্যবস্থা থাকে।
আইসিইউতে তালা ঝুলছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. খলিলুর রহমান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমাদের যে আইসিইউ যেটা ৩০ বেডের হচ্ছে…আইসিইউয়ের জন্য কিন্তু একটা বড় স্টোর লাগে। কারণ, আইসিইউয়ের জিনিসপত্র যেমন ভেন্টিলেটর, আইসিইউ বেড সবসময় রিজার্ভ রাখতে হয়… তো আমাদের স্টোর ছিল না। এখন আমরা একটা বড় স্টোর তৈরি করে ফেলেছি।
এনআইসিউ রুমকে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা প্রসঙ্গে পরিচালক বলেন, ‘এনআইসিউ চালু হয়নি। অনেক আগের একটা প্ল্যান ছিল। আমারও আগের পরিচালকের সময় থেকেই এমন পরিকল্পনা ছিল। বর্তমানে এনআইসিইউ নাই। রুমটা ঠিক করা হয়েছিল। এনআইসিইউ চালু করতে হলে অনেক কিছু লাগে। রুমটাকে ঠিক করা হয়েছিল যে এনআইসিইউ হবে।’
যেহেতু ওটা করা হয়নি তাই এখন আমাদের যে আইসিইউ যেটা ৩০ বেডের হচ্ছে…আইসিইউয়ের জন্য কিন্তু একটা বড় স্টোর লাগে। কারণ আইসিইউয়ের জিনিসপত্র যেমন ভেন্টিলেটর, আইসিইউ বেড সবসময় রিজার্ভ রাখতে হয়…তো আমাদের স্টোর ছিল না। এখন আমরা একটা বড় স্টোর তৈরি করে ফেলেছি।
তিনি বলেন, ‘এটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আন্ডারে হচ্ছে। ডব্লিউএইচও ইতিমধ্যে টেন্ডার করেছে। মালামাল আসার কথা ছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেই মালামাল আসেনি। তারা আরও দুই মাস সময় চেয়েছে।
এসএম/এমএমএ/