লালপুরে অ্যানথ্রাক্স উপসর্গে আক্রান্ত ৪
নাটোরের লালপুর উপজেলার দেলুয়া গ্রামের মহিদুল ইসলামের অসুস্থ গরুর মাংস প্রক্রিয়াজাতকারীর মধ্যে অ্যানথ্রাক্স উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছেন চারজন। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় গবাদী পশুকে সন্দেহজনক অ্যানথ্রাক্স রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। তবে ওই এলাকায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হওয়ার খবরটি গুজব বলে জানা গেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, গত ৬ জুলাই ওই অসুস্থ গরু জবাই করে মাংস প্রক্রিয়াজাত করেন ৬-৭ জন। এরপর ১১ ভাগ করে মাংসগুলো নিয়ে যান ১১ পরিবার। সম্প্রতি মাংস প্রক্রিয়াজাতকারীদের মধ্যে সাখাওয়াত, হাবিব, মনোয়ারা ও মোহনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গ দেখা দিলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে রবিবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন
রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ড. মো. নজরুল ইসলাম ঝন্টুর নেতৃত্বে চার সদস্যর প্রতিনিধি দল।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওই রোগে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সোমবার ঢাকা থেকে আইসিডিডিআরবির ইপিডেনিওলোজি বিভাগের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাবেন এমন কথা রয়েছে। পরীক্ষার পরই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে প্রাণিসম্পদ বিভাগ পরিদর্শন শেষে প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে ওই এলাকাকে কেন্দ্র করে রিং পদ্ধতিতে সব গরুকে অ্যানথ্রাক্স টিকা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ওই গ্রামের শতভাগ গরুকে ওই টিকা দেওয়া হয়েছে। আশে পাশের গ্রামে আরো প্রায় আড়াই হাজার গরুকে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তথাকথিত অ্যানথ্রাক্স রোগে মারা যাওয়া আব্দুল মজিদের ছেলে শিহাবুল জানান, প্রায় ৬ মাস আগে তার বাবার টাইফয়েড ধরা পড়ে। ঈদের কয়েকদিন আগে হঠাৎ তার বাবা অসুস্থ হলে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ডাক্তাররা তার স্ট্রোক হয়েছে জানিয়ে চিকিৎসা দিতে থাকাকালে গত বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়। তারা ওই অসুস্থ গরুর মাংস বাড়িতে নিয়ে আসেননি কারণ আগে থেকেই তার বাবার গরুর মাংস খাওয়া নিষেধ ছিল।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও সুরুজ্জামান শামীম জানান, লক্ষণ দেখা দেওয়া চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকার টিম নমুনা পরীক্ষা করে ফলাফল দেওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএন