সাড়ে ৫ হাজার মানুষকে ত্রাণ দিয়েছে ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’
লেখা ও ছবি : ডা. নাজমুল ইসলাম, প্রধান ও প্রতিষ্ঠাতা, ডু সামথিং ফাউন্ডেশন।
বাংলাদেশের বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রতিষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল’র পরিচালক ও প্রখ্যাত এনজিও ব্যক্তিত্ব, ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’র প্রতিষ্ঠাতা ও অন্যতম ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত ‘গণম্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল’।
এই হাসপাতালের এমবিবিএস ডা. নাজমুল ইসলাম বিখ্যাত অলাভজনক তরুণদের সামাজিক স্বেচ্ছাসেবা সংগঠন ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’-এর জন্য।
তার ফাউন্ডেশনটির মাধ্যমে চলমান বন্যায় দেশের ৮টি জেলায় বন্যার্তদের ত্রাণসামগ্রী বিনামূল্যে প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তাদের কার্যক্রম এখনো বরাবরের মতো অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তরুণ সমাজকর্মী।
তিনি ঢাকাপ্রকাশ ২৪.কমকে জানিয়েছেন “এবারের বন্যার শুরু থেকে ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা, যারা প্রধানত গণস্বাস্থ্যসমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং ‘গণবিশ্ববিদ্যালয়’র ছাত্র, ছাত্রী; তারা গণম্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ নানাজনের দানে, বহু কষ্টে জোগাড় করা টাকায় সিলেট জেলার বিভিন্ন স্থান ছাড়াও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় শুকনো খাবার এবং রান্না করা খাবার বিতরণ করছি নিয়মিত।’
ডা. নাজমুল ইসলাম এরপর বলেছেন, ‘আমরা পরিবার প্রতি ২ কেজি চিড়া, ৫ কেজি চাল, ১ কেজি পেঁয়াজ, আধা লিটার তেল, ১ কেজি আলু, কোথাও আধা লিটার বা কোথাও ১ কেজি প্যাকেটজাত লবণ, ১ হালি ডিম, ১ কেজি মুড়ি, ১ কেজি চিনি, ৪টি মোমবাতি, ৪টি করে স্যালাইন, ১টি লাইটার ও দুই লিটারের পানির বোতল, প্রয়োজনানুসারে-নাপা ট্যাবলেট, প্যারাসিটামল, মেট্রো-নিডাজল, অ্যান্টি-হিস্টামিন, ক্লোরিন, কার্বলিক এসিড (সাপের থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য), স্যানিটারি প্রদান করেছি মোট সাড়ে ৫ হাজার মানুষকে।’
ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্মী গর্বের সঙ্গে জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশের বিপন্ন মানুষের সেবায় উত্তরাঞ্চলের বন্যার্তদের সাহায্য করতেও সিলেটের মতো একইভাবে প্রচন্ড কষ্ট ও শ্রম দিয়ে কাজ করে চলেছি আমরা সব স্বেচ্ছাসেবক।’
তিনি বলেছেন, ‘আমরা ত্রাণ হিসেবে শুকনো, রান্না করা খাবারও দিয়েছি।’
ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তিনি জানিয়েছেন, “আমাদের স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠনের প্রথম থেকে লক্ষ্য হলো, মানুষকে প্রয়োজনের সময় সাহায্য করা, বিপন্নের কষ্ট দূর করা। আমরা ‘জাগো ফাউন্ডেশন’, ‘মাস্তুল ফাউন্ডেশন’, ‘অল ফর ওয়ান’, ‘ভ্রমণকণ্যা’, ‘অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন’র মতো কাজ করে চলেছি সমানতালে, সবার সাথে। তবে আমাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য-‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করে। যেসব অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা কষ্টের, সেখানে তো মানুষকে সাহায্য করা সহজে সম্ভব হয় না। কোথাও, কোথাও পৌঁছানোই যায় না। শহরের মানুষ কাজের ব্যস্ততায় প্রত্যন্ত গরীব মানুষকে সাহায্য বিনামূল্যে তাদের সেবাদান করতে যেতে পারেন না। তবে সবাই জানেন, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোকে গরীব মানুষের সংখ্যা বেশি। তাদের আরো বেশি করে সাহায্য করা প্রয়োজন। ফলে প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে খেয়ে, না দেয়ে সাহায্য করে চলেছি আমরা।”
বাংলাদেশের অন্যতম তরুণ এই স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল বাদেও আমাদের ফাউন্ডেশনে চিকিৎসা সেবাদানের জন্য নানা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ছাত্র, ছাত্রী চিকিৎসকদের একটি দল আছে। অনেকে আমাদের সহযোগিতা করেন। তাদের মাধ্যমে বন্যা দুর্গত মানুষকে প্রাথমিক ও জরুরী সেবাগুলো প্রদান করে চলেছি আমরা।’
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সব জেলাতেই জরুরী মেডিক্যাল সেবা বিনামূল্যে প্রদান করে যেতে হচ্ছে। আমরা আপনাদের সবার সাহায্য ও সহযোগিতা কামরা করি।’
বন্যার পর জরুরী পুর্ণবাসন সেবাও প্রদান করবেন বলে জানিয়েছেন, ডু সামথিং ফাউন্ডেশনের প্রধান ডা. নাজমুল ইসলাম।
ওএস।