করোনার উদ্বেগজনক যত ভ্যারিয়েন্ট
সারা বিশ্বে করোনাভাইরাসের হাজার হাজার ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কিছু ভ্যারিয়েন্ট বেশি সংক্রামক ও আক্রমাণত্মক। ইউকে, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিল ভ্যারিয়েন্টকে উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট বলে মনে করা হয়। এই উদ্বেগে নতুন করে যুক্ত হয়েছে অমিক্রন ভেরিয়েন্ট।
করোনাভাইরাসের একটা ভ্যারিয়েন্ট অন্যটার চেয়ে অনেক বেশি সংক্রমক। এদের উপসর্গ কিছুটা হলেও আলাদা। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনার হাজার হাজার ভ্যারিয়েন্টকে এতদিন বৈজ্ঞানিক নামে অথবা যে দেশে প্রথম দেখা দিয়েছে সে দেশের নামে ডাকে হতো। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গ্রিক বর্ণমালার অক্ষর অনুযায়ী করোনাভাইরাসের বিভিন্ন সংস্করণের নামকরণের সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া নাম অনুযায়ী ব্রিটেনে পাওয়া করোনাভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টের নাম আলফা, দক্ষিণ আফ্রিকার সংস্করণের নাম বিটা, ব্রাজিলের ভেরিয়েন্টের নাম গামা এবং ভারতেরটির নাম ডেলটা রাখা হয়েছে। সে অনুযায়ী দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া কোভিডের নতুন রূপটির নামকরণ করেছে ওমিক্রন। নভেল করোনাভাইরাসের রূপান্তরগুলির নামকরণ গ্রীক বর্ণমালার ক্রম অনুসারে করা হলেও ওমিক্রনের এর ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলো। বর্ণমালার ক্রম অনুসারে নতুন রূপান্তরটির নাম হওয়া উচিত ছিল 'ন্যু'। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ক্ষেত্রে শুধু 'ন্যু' নয়, পরের বর্ণ 'শাই' এড়িয়ে গেলো।
অমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট: দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন একটি ধরন শনাক্ত হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও বতসোয়ানা, ইসরায়েল, হংকং, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইতালিতেও নতুন এ ধরনের সন্ধান মিলেছে। ডব্লিউএইচও করোনার নতুন ধরনের নাম দিয়েছে 'অমিক্রন'। ধরনটিকে 'উদ্বেগজনক' বলে আখ্যায়িত করেছে সংস্থাটি। ধারণা করা হচ্ছে, করোনার আগের সব ধরনের চেয়ে এটি অনেক বেশি সংক্রামক।
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট: ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এই বছরের শুরুর দিকে ভারতে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এটি আগের ভাইরাসের চেয়ে আরও বেশি ভয়ানক। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ-এর জন্য একেই দায়ী করা হয়। এই কারণেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেল্টা রূপটিকে 'ভাইরাস অফ কনসার্ন' হিসেবে অভিহিত করেছে।
ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট: ভারতে আবিষ্কৃত ডেল্টারই আরেকটি রুপ। ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট প্রথম ভারতের মহারাষ্ট্রে ধরা পড়েছিল। ভারত ছাড়াও ডেল্টা প্লাস ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের আরও ৯টি দেশে, ইউকে, পর্তুগাল, সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড, জাপান, নেপাল, চীন এবং রাশিয়ায়।
কাপ্পা ভ্যারিয়েন্ট: কাপ্পা ভ্যারিয়েন্ট ২০২০ সালের অক্টোবরে ভারতে এটি প্রথম পাওয়া যায়। এটি করোনাভাইরাসের একটি ডবল মিউট্যান্ট স্ট্রেন, এটি দুই ধরণের ভাইরাস মিউটেশন দ্বারা গঠিত।
ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্ট: ল্যাম্বডা ভ্যারিয়েন্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা 'Variant of interest' হিসেবে অভিহিত করেছে। পেরুতে এই ভ্যারিয়েন্টি প্রথম পাওয়া যায়।
করোনা থেকে মুক্তি পেতে সংক্রমণ প্রতিহত করার কোনো বিকল্প নেই। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হলে নতুন নতুন ভেরিয়েন্ট বা জাত সহজে তৈরি হবে না। কারণ ভাইরাসটি যত কম সংক্রমিত হবে, তত কম মিউটেশন হবে, ফলে ভেরিয়েন্ট বা নতুন জাত কম তৈরি হবে।