শীতের আভাস বাতাসে, রাতে কমছে তাপমাত্রা
ছবি সংগৃহিত
বাতাসে শীতের আমেজ। সন্ধ্যার পর পর কমে যাচ্ছে তাপমাত্রা। কমতে কমতে ভোরের দিকে সেই তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ২৫ ডিগ্রিতেও নেমে যাচ্ছে। কারণ হাওয়া বদল। দক্ষিণের পরিবর্তে বইতে শুরু করেছে উত্তরের বাতাস। তবে এখনই এই আবহাওয়াকে শীতকাল বলা যাবে না।
আগামী কয়েকদিন রাতের তাপমাত্রা ক্রমেই কমে শীতের আমেজ সৃষ্টি হতে পারে। আপাতত আর দেশের কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এখন বাংলাদেশে চলছে হেমন্তকাল। বাংলা কার্তিক মাস। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হবে অগ্রহায়ণ মাস। ফলে শীতের আনুষ্ঠানিক শুরু হবে ডিসেম্বরের একেবারে মাঝখানে। তবে উত্তরের বাতাস ও অন্যান্য কারণে ডিসেম্বর থেকে পরের দুই মাসকে আমরা শীতকাল হিসেবে বিবেচনা করে থাকি।
গত প্রায় এক মাস ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকছে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। সোমবার সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। এর আগের দিন সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গত ২৪ ঘণ্টায় কিছুটা বাড়লেও দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা কমেছে। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে কমে হয়েছে ২২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সন্দ্বীপে ৩৪ দশমিক ৭, যা তার আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কম। গতকাল সন্ধ্যায় এই তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকায় আজ সামান্য কমে ৩৪, ছিল ৩৪ দশমিক ২, ময়মনসিংহেও সামান্য কমে ৩৩ দশমিক ৫, ছিল ৩৪, তবে চট্টগ্রামে তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে ৩৪ হয়েছে, ছিল ৩৩ দশমিক ৬, রাজশাহীতেও কিছুটা কমে ৩১ দশমিক ১, ছিল ৩২, রংপুরে আবার বেড়ে ৩৩, ছিল ৩২ দশমিক ৫, খুলনায় সামান্য কমে ৩৩, ছিল ৩৩ দশমিক ৫ এবং বরিশালেও কমে ৩৩ দশমিক ৫, ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এটা তো গেলো সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেতুলিয়ায় ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ঢাকায় ২৪, ময়মনসিংহে ২১ দশমিক ৪, চট্টগ্রামে ২৬, সিলেটে ২২ দশমিক ৬, রাজশাহীতে ২১ দশমিক ২, রংপুরে ২০ দশমিক ৮, খুলনায় ২৩ দশমিক ৫ এবং বরিশালে ২৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান গণমাধ্যমকে বলেন, এখন থেকেই কমতে শুরু করবে তাপমাত্রা। ধীরে ধীরে শীতের দিকে এগিয়ে যাবো আমরা। তবে এরমধ্যে মাঝে মাঝে তাপমাত্রা বাড়তেও পারে। বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপ, জ্বলীয় বাষ্পসহ নানা কারণেই আমাদের আবহাওয়া বদলে যায়। তিনি বলেন, এখন সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে আমরা কিছুটা শীতের আমেজ পাচ্ছি। ভোরের দিকে দেশের কোনও কোনও অঞ্চলে তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচেও নেমে যাচ্ছে। তবে এখন আমরা এই আবহাওয়াকে শীতকাল বলতে পারি না। আনুষ্ঠানিকভাবে ডিসেম্বরে স্বাভাবিক সময়েই শীতকাল আসবে বাংলাদেশে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমদিক পর্যন্ত এই শীতের অনুভূতি থাকে সাধারণত।
এদিকে আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদির পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি মাসে মৌসুমি বায়ু বিদায় নিয়েছে। নভেম্বর মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করবে। স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। একই পরিস্থিতি থাকবে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে দেশের উত্তর, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও মধ্যস্থলে ১ থেকে ২টি মৃদু অর্থাৎ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে শুরু করে মাঝারি অর্থাৎ ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলে ও নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি বা ঘন কুয়াশা এবং অন্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা জানান, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
মঙ্গল ও বুধবারও অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলেও জানান তিনি।
রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল চট্টগ্রামে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।