রুনা লায়লার সংগীত জীবনের ৬০ বছর পূর্ণ
ছবি: সংগৃহীত
কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। দীর্ঘ সংগীত জীবনে ১৮টি ভাষায় অসংখ্য গান গেয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই শিল্পী ১৯৬৪ সালের এই দিনে ‘জুগনু’ সিনেমার গানে প্রথম কণ্ঠ দেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে তার গাওয়া ‘গুড়িয়া সি মুন্নি মেরি ভাইয়া কি পেয়ারি’ উর্দু ভাষার গানটির কথা লিখেছিলেন তিসনা মেরুতি, আর সুর করেছিলেন মানজুর।
প্রথম গানের অনিন্দ্য কণ্ঠ আর অনবদ্য গায়কি দিয়ে মুগ্ধ করেন শ্রোতাদের। সেই সুবাদে এ শিল্পীর কাছে বাড়তে থাকে সংগীতপ্রেমিদের প্রত্যাশা। যে কারণে আর থেমে থাকার অবকাশ পাননি রুনা লায়লা। গানের ভুবনে শুরু হয় তার দুর্বার পথচলা।
গান রেকর্ডিংয়ের হিসাবে সংগীত জীবনের ৬০ বছর পূর্ণ হলো এই গায়িকার। সংগীত জীবনের এমন অর্জনে রুনা লায়লা প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন তার ভক্ত থেকে শুরু করে শোবিজ অঙ্গনের সবাই। ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন গায়িকার ভাই, মেয়ে ও স্বজনরাও। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মোট ১৮টি ভাষায় দশ হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি।
গায়কির ৬০ বছর পূর্ণ উপলক্ষে রুনা লায়লা বলেন, ‘আপনাদের দোয়া, আশীর্বাদ ও ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা আজ আমাকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। এই ভালোবাসা, আশীর্বাদ ও শ্রদ্ধা যেন চিরকাল থাকে আমার সাথে।’
রুনা লায়লার স্বামী ও বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান অভিনেতা আলমগীর বলেন, ‘রুনা কাজের ব্যাপারে ভীষণ সিরিয়াস। ৬০ বছর টিকে থাকা এরকম সিরিয়াস না হলে, এরকম প্র্যাকটিস না করলে কোনো দিন সম্ভব নয়।’
আঁখি আলমগীর বলেন, ‘আমরা অনেক গর্বিত যে আমাদের একজন রুনা লায়লা আছেন।’
ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়ে সনু নিগাম বলেন, ‘আপনি এত ভালো কলাকার, আপনি এত সুন্দর, আপনার ব্যবহার এত ভালো। আপনার সাথে দেখা করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। যখন থেকে আমার চোখ খুলেছে, তখন থেকে আপনাকে শুনছি। আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা। পৃথিবী আপনাকে ভালোবাসে, আমি আপনাকে ভালোবাসি।’
পাকিস্তানের অভিনেতা ইমরান আব্বাস শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ‘আপনি বাকি জীবন গাইতে থাকুন, পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করুন। পাকিস্তান থেকে ভালোবাসা জানাই।’
পাকিস্তানের বহু সিনেমায় প্লে-ব্যাক করেছেন রুনা লায়লা। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ‘হাম দোনো’, ‘রিশতা হ্যায় পেয়ার কা’, ‘কমান্ডার’, ‘আন্দালিব’, ‘নসীব আপনা আপনা’, ‘দিল আউর দুনিয়া’, ‘উমরাও জান আদা’, ‘আনমোল’, ‘নাদান’, ‘দিলরুবা’সহ আরো বেশকিছু সিনেমায় গান গেয়েছেন তিনি।
১৯৭০ সালের ২৯ মে মুক্তিপ্রাপ্ত নজরুল ইসলাম পরিচালিত সিনেমা ‘স্বরলিপি’। এতে প্লেব্যাক করেন রুনা লায়লা। এটি তার প্রথম বাংলাদেশি সিনেমায় প্লেব্যাক করা। এ সিনেমায় ব্যবহৃত ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। প্রথম প্লেব্যাক করেই ব্যাপক সাড়া ফেলেন। বাংলাদেশের সিনেমার গানেও তার কণ্ঠের কদর বেড়ে যায়।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে এসে রুনা লায়লা একে একে ‘জীবন সাথী’, ‘টাকার খেলা’, ‘কাজল রেখা’, ‘রং বেরং’, ‘যাদুর বাঁশি’, ‘সুন্দরী’, ‘দেবদাস’, ‘চাঁদনী’, ‘দোলনা’, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘অন্ধপ্রেম’, ‘দোলা’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘বিক্ষোভ’, ‘প্রিয়া তুমি সুখী হও’, ‘পাঙ্কু জামাই’, ‘দুই দুয়ারী’সহ বহু সিনেমায় গান গেয়ে শ্রোতা-দর্শককে মুগ্ধ করেছেন তিনি।