বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী রাকেশ দাস এবং অর্থনীতি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী এসকে মাসুমকে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মামা হোটেলের সামনে থেকে রাকেশকে এবং বিকাল ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর মোড়ের পাকিস্তানি মসজিদের সামনে থেকে মাসুমকে কোটবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির কাছে তুলে দেয় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মো. হান্নান রহিম বলেন, ' কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই বিপ্লবের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছিল, সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিল এবং স্বৈরাচারেরর দোসর হিসেবে কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার অবস্থান নিয়েছি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা রাকেশ দাসকে পুলিশে সপোর্দ করেছি। এছাড়াও যারা যারা ছাত্রলীগের দোসর হিসেবে কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থান নিচ্ছি। অতি দ্রুত আমরা তাদের মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশে সপোর্দ করবো। এমনকি শিক্ষক, কর্মচারী যারাই স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে কাজ করেছে সক্রিয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা সোচ্চার। তাদেরকেও আমরা মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশের কাছে সপোর্দ করবো।'
কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার্স ইনচার্জ আরিফ বলেন, 'শিক্ষার্থীরা মামলার আসামী হিসেবে আমাদের কাছে দিয়েছে দুইজনকে। আমরা ডিবি অফিসে হস্তান্তর করব, তারা সম্ভবত এরেস্ট হিসেবে গ্রহণ করবে।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা জেলার মূখ্য সংগঠক আরাফ ভুঁইয়া বলেন, 'গত ১৫ জুলাই ও ২৯ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে সে ঘটনার মামলা এটি। আরও বিস্তারিত বললে, সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-ইলাহী বিগত দিনে শিক্ষার্থীদের ওপর যে ধরনের নির্যাতন ও অত্যাচার করেছে তার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল এরা। এছাড়াও যারা আছে এখনো তাদের বিরুদ্ধেও এই ব্যবস্থা চলমান থাকবে।"
এ ব্যাপারে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ করিম খান বলেন, 'আমরা তাদের পূর্বের একটি মামলার আসামী হিসেবে গ্রেফতার করেছি। তাদের শীঘ্রই আদালতে প্রেরণ করে দেওয়া হবে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, 'রাকেশ দাসের বিষয়টা তার বিভাগের চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছে। আমি পুলিশকে ফোন করার পর, পুলিশ বলেছে, সে নিয়মিত মামলার আসামী, আমরা তাকে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে ধরে নিয়ে এসেছি। আর মাসুমের বিষয়টা আমরা এখনো অবগত নই।'