বিএনপির সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব: মনির খান
সংগীতশিল্পী মনির খান। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির সঙ্গে আগেও ছিলাম, এখনো আছি, এমনকি আগামীতেও থাকব বলে জানিয়েছেন দেশের সংগীতশিল্পী মনির খান। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন জনপ্রিয় এই শিল্পী।
এদিন দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি বিষয়ক সাবেক সহ-সম্পাদক বলেন, আমি ছাত্রজীবন, সেই কলেজজীবন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ওই সময় দলটির সহযোগী অঙ্গসংগঠন ছাত্রদলে ছিলাম। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে সরাসরি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হই। তারপর থেকে বিএনপির সঙ্গেই আছি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের একটা পর্যায়ে গিয়ে দফায় দফায় হামলা ও গুলি ছোড়ার ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে আন্দোলন আরও উত্তাল হয়ে উঠে সারাদেশে। ফলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাজপথে নামেন অভিভাবক, সাধারণ মানুষ, শোবিজ তারকা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এ অবস্থায় মাঠে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলনে দেখা যায় মনির খানকে।
এই ব্যাপারে এ গায়ক বলেন, আমি আমার বিবেকের তাগিদে আন্দোলনে গিয়েছি। হতে পারি আমি একজন গায়ক, কিন্তু আমারও তো পরিবার রয়েছে। আমিও তো কোনো সন্তানের বাবা, আমিও তো কারও ভাই। দেশবাসী দেখেছেন, জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহের শুরুতে এবং এই আগস্টের প্রথম সপ্তাহে কীভাবে নির্বাচারে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা ও গণগ্রেপ্তারও দেখেছি আমরা। যা সহ্য করার মতো ছিল না। পত্রিকা ও টেলিভিশনে চোখ রাখতেই হৃদয়টা দুমড়ে-মুচড়ে যেত। সেই তাড়না থেকে আন্দোলনে গিয়েছি আমি।
তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষেরই কিছু মান-অভিমান থাকে। সেদিক থেকে আমারও কিছু অভিমান ছিল। ওই সময় হয়তো আমি বলেছি দল থেকে অব্যাহতি নিলাম। কিন্তু আপনারা যদি একটু খেয়াল করে দেখেন, আমি কিন্তু পরবর্তীতে একবারের জন্যও অন্য কোনো দলে যোগ দেইনি। বিভিন্ন দল থেকে আমাকে ডাকা হয়েছে, অনেক ধরনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, তাতে একবারও কোনো মোহ কাজ করেনি আমার মধ্যে। এমনকি নিজের নীতি ও নৈতিকতা পরিবর্তন করিনি।
তিনবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এ গায়ক বলেন, আমি সবসময় আমার সততা, নীতি ও নৈতিকতা এবং আদর্শে বিশ্বাসী। গত পাঁচ-ছয় বছরে একবারের জন্যও আদর্শ থেকে সরে দাঁড়াইনি। এখনো সেই আদর্শে অটুট। আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি―বিএনপির সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব।
এদিকে মনির খান একসময় জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে বিএনপির সহ-সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দলটির সব ধরনের কার্যক্রম থেকে সরে আসেন তিনি। ওই সময় জানা যায়―ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর- কোটচাঁদপুর) আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। প্রাথমিকভাবে দলের চিঠি পেয়ে মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছিলেন। পরে দলটি থেকে মনোনয়ন চূড়ান্ত না করায় নানা মুখি চাপের কারণে সাময়িক সময়ের জন্য সরে আসেন এ গায়ক।
উল্লেখ্য, বর্তমানে এ শিল্পী নিয়মিত গান রেকর্ডিং ও প্রকাশের পাশাপাশি দেশ-বিদেশে বিভিন্ন স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।