অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা নুসরাত ফারিয়া।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত রাজধানীর বনানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নুসরাত ফারিয়ার মা পারভিন আক্তার। তিনি বলেন, ফারিয়া বেশ কয়েকদিন ধরেই গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যায় ভুগছিল। খেতে চাচ্ছিল না, খুব মাথা ব্যথা করছিল। বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে অচেতন হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
তিনি আরও বলেন, সবার দোয়ায় ফারিয়া এখন একটু সুস্থ। জ্ঞান, ফিরেছে, কথাও বলছে। চিকিৎসক ফারিয়ার রক্ত পরীক্ষা করবেন বলে জানিয়েছেন। এর পরই বিস্তারিত জানা যাবে।
ওয়াজ মাহফিলে না আসায় প্রখ্যাত ইসলামী বক্তা মাওলানা মুফতি মো. বজলুর রশীদ মিঞার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের নূরনগর রামচন্দ্রপুর আয়াতুন্নেছা হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামায়ত আলী গাজী।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সাতক্ষীরা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দ্বিতীয় আদালত) বিচারক রাফিয়া সুলতানা মামলাটি আমলে নিয়ে শ্যামনগর থানার ওসিকে আগামী ২৫ মে’র মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় বলা হয়, গত ৯ ও ১০ এপ্রিল ওই মাদরাসার মাঠে দুই দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয় বগুড়ার কাহালু উপজেলার লোকনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা মুফতি বজলুর রশীদ মিঞাকে।
চুক্তি অনুযায়ী তাকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যার মধ্যে ৮০ হাজার টাকা নগদ এবং ২০ হাজার টাকা বিকাশে অগ্রিম দেওয়া হয়।
তবে নির্ধারিত দিনে মাহফিলে না এসে তিনি কোনো ধরনের বার্তা না দিয়ে অনুপস্থিত থাকেন। তার না আসায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ জনতা প্রায় দুই লাখ টাকার মাদরাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে টাকা ফেরতের অনুরোধ করা হলে বাদীর দাবি অনুযায়ী বজলুর রশীদ মিঞা উল্টো হুমকি দেন খুন-জখমের, যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা জজ কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ আজাহারুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালত নিয়ম অনুযায়ী তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, এখন বিষয়টি আইন অনুযায়ী চলবে।
অন্যদিকে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে মুফতি বজলুর রশীদ বলেন, "আমি স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে ওই সময়ে অপারেশন করিয়ে বিশ্রামে ছিলাম। আমাকে না জানিয়ে বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছিল। এছাড়া ৮০ হাজার টাকা নগদ দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।"
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা-দুই বছর আগেও ছিল দরিদ্র তালিকায় শীর্ষে। এ উপজেলার খুব কমসংখ্যক শিক্ষার্থী রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পড়তে যায়। তাদের মধ্যে বড় একটি অংশ থেকে যায় রাজিবপুরেই এবং ভর্তি হয় স্থানীয় কলেজগুলোতে। এদের মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দরিদ্র পরিবারের। এসব শিক্ষার্থীর স্থানীয় কলেজগুলোর মধ্যে প্রথম পছন্দ রাজিবপুর সরকারি কলেজ। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেন।
এক সময় দুর্নীতির আখড়া হিসেবে পরিচিত ছিল কলেজটি। সরকারি হওয়ার পরও দুর্নীতিবাজদের থাবা থেকে রেহাই পায়নি প্রতিষ্ঠানটি। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ইনকোর্স পরীক্ষার ফি প্রথমে নির্ধারণ করা হয়েছিল - ছেলেদের জন্য ১৭৬০ টাকা এবং মেয়েদের জন্য ১৪০০ টাকা। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে ৭ এপ্রিল তা কমিয়ে আনা হয় ছেলেদের জন্য ১৩০০ টাকা এবং মেয়েদের জন্য ১০০০ টাকায়। অথচ সরকারি নির্ধারিত ফি মাত্র ৩০০ টাকা।
ইসরাত জাহান আঁখি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “পরীক্ষার ফি বেশি হওয়ায় আমরা আন্দোলন করি, পরে স্যাররা ফি কমিয়ে দেন। তবে শুরুতে কয়েকজন আগের নির্ধারিত ফি-ই দিয়েছে।”
সুজন মিয়া ও হারুন-অর-রশিদ নামের দুই শিক্ষার্থী বলেন, “সরকারি কলেজে এত ফি ধরায় আমরা হতাশ। যদি সরকারি কলেজেই এমন ফি হয়, তাহলে প্রাইভেট কলেজে পড়াই ভালো। আমরা চাই সরকারি কলেজ সরকারি নিয়মে চলুক এবং নির্ধারিত ফি-ই আদায় করা হোক।”
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পর বার্ষিক ও দ্বাদশ শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া যাবে। এর বাইরে কোনো পরীক্ষার কথা বলা হয়নি। কিন্তু নিয়মবহির্ভূতভাবে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে 'মূল্যায়ন পরীক্ষা'র নামে জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে আদায় করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, “ভর্তি হওয়ার পরপরই আমাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। অনেকেই তখন বই-ই কিনে উঠতে পারেনি। এখন বুঝতে পারছি, শুধু টাকা আদায়ের জন্যই এ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।”
ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হারুন-অর-রশিদ বলেন, “আমি ভর্তি হওয়ার পর থেকে যতগুলো পরীক্ষা দিয়েছি, প্রায় সবকটিতে ১ হাজার টাকার বেশি ফি দিতে হয়েছে। সরকারি কলেজে এত টাকা দিয়ে পড়াশোনা করা আমাদের সাধ্যের বাইরে। আমরা চাই, সরকারি নির্ধারিত ফি অনুযায়ী কলেজ পরিচালিত হোক।”
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
অভিযোগ রয়েছে, রাজিবপুর সরকারি কলেজ ফান্ডের প্রায় ৪ লাখ টাকা উত্তোলন করে কোনো কাজ না করেই আত্মসাৎ করেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন এবং কয়েকজন অসাধু শিক্ষক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, “দীর্ঘদিন হলো ৪ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজই শুরু হয়নি। অধ্যক্ষ নিজের ইচ্ছামতো কলেজ পরিচালনা করছেন।”
সরকারি পরীক্ষার ফি যেখানে ৩০০ টাকা, সেখানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ১০০০ থেকে ১৩০০ টাকা। এ বিষয়ে বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তিনি যে হিসাব উপস্থাপন করেছেন, সেখানে বলা হয়েছে-পরীক্ষার ফি ২৫০ টাকা, পুনঃভর্তি ৩০ টাকা, বেতন (৩০×১২) ৩৬০ টাকা, অত্যাবশ্যকীয় খরচ ৪৬০ টাকা এবং সেশন ফি ২০০ টাকা, মোট ১৩০০ টাকা। তবে শিক্ষার্থীদের দেওয়া রশিদে কোনো খাতের উল্লেখ নেই।
সাক্ষাৎকারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন বলেন, “৪ লাখ টাকার বিষয়টি প্রশাসনিক ব্যয়। পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে কেনাকাটার জন্য ব্যয় করা হয়েছে। তবে ব্যয়ের কোনো কাগজ তিনি দেখাতে পারেননি। কাগজপত্র সম্পর্কে বলেন, ‘কাজের চাপ বেশি, পরীক্ষা চলছে-এই মুহূর্তে দেওয়া সম্ভব না।’”
অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, “পরীক্ষার ফি ২৫০ টাকা। এখানে ১২ মাসের বেতন, অত্যাবশ্যকীয় ফি যোগ হয়েছে। কম্পিউটার অপারেটর মনোয়ার, বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষক-তাদেরও সম্মানী দিতে হয়।”
নিয়মবহির্ভূত পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, “সব শিক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।”
২০০৯ সালের বহুল আলোচিত ও নৃশংস বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতেই হবে, এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৬ এপ্রিল) এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নৃশংসভাবে নিজেদের অফিসারদেরই তারা মেরেছিল। মসৃণভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। আমরা সবাই উত্তর খুঁজছি। কমিশনকে এ ঘটনা তদন্তে সফল হতেই হবে। পুরো জাতি তদন্ত কমিশনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। এ সময় তদন্ত কমিশনকে সকল ধরণের সহযোগিতা করার কথাও বলেন তিনি।
কমিশন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) আলম ফজলুর রহমান বলেন, কমিশন বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। যেহেতু ১৬ বছর আগের ঘটনা তাই অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তাছাড়া, অভিযুক্ত অনেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কারাগারে থাকা কয়েকজনের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। তদন্তের জন্য যোগাযোগ করা প্রয়োজন এমন ২৩ জন বিদেশে অবস্থান করছেন। তার মধ্যে ৮ জন সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য যোগাযোগ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, কমিশন হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের প্যাটার্ন নিয়ে তদন্ত করছে। তৎকালীন বিডিআরের মহাপরিচালককে হত্যার পর বাকিদের হত্যা করা হয়েছিল। এটি ছিল একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পরিকল্পনা ছাড়া এমন হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। এর শেকড় খুঁজে বের করতে হবে।
কমিশনের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, এমন জঘন্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকেও সরানো হয়নি। কাউকে দায়ী করা হয়নি। এটি গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক বাহিনী এবং রাজনৈতিক ব্যর্থতা।
বৈঠকে তদন্ত কমিশনের সদস্য বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান, মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, ড. এম আকবর আলী, মো. শরীফুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ খান চন্দন, এ টি কে এম ইকবাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।