এইচএসসিতে কত পেয়েছিলেন তারকারা
ফাইল ছবি: সুমাইয়া হিমি, তাসনিয়া ফারিণ, সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান ও সাইয়ারা তটিনীর
গতকাল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
রোববার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা।
গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরবেন শিক্ষামন্ত্রী। দুপুরের পর থেকে পরীক্ষার্থীরা ফলাফল জানতে পারেন।
এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের দিনটি সবার জন্য উৎকণ্ঠার। পরীক্ষায় কত পাবেন, আর কে কী বলবে, এগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষার্থীরা। তেমনি ভাবে ফলাফলের দিনে দুশ্চিন্তা ছিলেন এদেশের তারকারাও। একসময় উৎকণ্ঠা কাটিয়ে হাসি ফোটে। সেই দিন যেন এখনো চোখের সামনে ভাসে। সেই স্মৃতিগুলো ভুলে যাওয়া যায় না।
ফলাফলের এই দিনে অতীতে ফিরে জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি, তাসনিয়া ফারিণ, সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান ও তটিনীরা তাদের ফলাফলের দিনের কথা জানালেন।
অভিনেত্রী জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি: ২০১৭ সালের কথা। সেবার প্রায় প্রতিদিনই পরীক্ষার হলে যাওয়ার সময় জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি শুনেছেন, অনেকেই নাকি প্রশ্ন পেয়েছেন। বুঝতে বাকি থাকেন না, প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। কেউ কেউ সেই প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করছেন। সেগুলো হিমিকে দিলেও তিনি না করে দিতেন। তাঁর কাছে মনে হতো, নিজের যোগ্যতায় খারাপ হলে হোক। সেভাবেই প্রশ্নের উত্তর দেন। মজার ব্যাপার হলো, পরে বন্ধুদের কাছে শুনতে পান, তাঁদের প্রশ্ন কমন পড়েনি। ভুলভাল উত্তর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার ফলাফলের দিন আমি ভয়ে ছিলাম। বলা যায়, পরীক্ষার ফলাফল দেখতে যাচ্ছি আর কাঁপছি। কারণ, যারাই ফলাফল দেখছে, তারা সবাই ৪ পয়েন্ট থেকে বড়জোর ৪.৫০ পেয়েছে। সবাই আমাকে বলছে, “তোর কী তোর কী?” শুনে তো আমার ভয় বেড়ে গেল। হয়তো আমিও এমনই পাব। পরে রেজাল্টে দেখি জিপিএ-৫ পেয়েছি।’
তাসনিয়া ফারিণ: ‘ফলাফলের আগে আমি শুধু বারবার বলেছি, আর কখনোই রাত জেগে পড়ব না। আল্লাহ যেন এবার মুখ তুলে তাকান। আমার রেজাল্ট যেন ভালো হয়। কারণ, আম্মার একটা ভয় ছিল।’
পড়াশোনার ভালোর জন্য তাঁর মা তাঁকে চাপে রাখতেন। কখনো বলতেন, খারাপ করলে পড়াশোনা করে আর লাভ কী। বিকল্প ব্যবস্থা নেবেন। তখন তিনি চাপে পড়ে যেতেন। ফারিণ বলেন, ‘আমি তো মায়ের জন্য পড়েছি। মায়ের কড়াকড়ি ছিল এ বিষয়ে। একদম নিয়মের মধ্যে থাকতে হতো। এমনও হয়েছে, অনেক সময় পড়াশোনার বাইরে কিছুই চিন্তা করতাম না। যেন পড়াটাই ছিল আমার জীবন। আসলে প্রেশার না দিলে পড়তাম না, এটা সত্য। এ জন্য সব সময় ভালো ফল করেছি। এইচএসসির রেজাল্ট দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি।’ হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন ফারিণ। তিনি এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
সাফা কবির: অভিনেত্রী সাফা কবির এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার আগের রাতে ছিলেন নির্ঘুম। চিন্তায় ঘুম আসছিল না। অনেক নার্ভাস ছিলেন। কী হবে, এই চিন্তাই তাঁকে সবচেয়ে বেশি ভাবায়। এ জন্য মন খারাপ ছিল। পরে দুপুরের দিকে ভয়ে ভয়ে যান ফলাফল জানতে। সাফা বলেন, পড়াশোনায় তাঁর খুব বেশি মনোযোগ ছিল না। পড়তে ভালো লাগত না। শুধু মায়ের জন্যই তাঁর পড়তে যাওয়া। তাঁর ভাষায়, মায়ের জন্যই পড়াশোনায় যা মনোযোগ ছিল। সাফা জানান, ‘ফলাফল জানতে ভয়ে ভয়ে কলেজে গিয়েছিলাম। এদিকে রাত থেকে কী যে চিন্তা। ঘুমাতে পারিনি। সবাই জানতে চাইছেন কত পেয়েছি। পরে ভয়ে ভয়ে রেজাল্ট দেখে আমি খুব খুশি। আম্মুর কথা ভেবে আরও ভালো লাগল। কারণ, আম্মু এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলেন। আমার রেজাল্ট হলো কাঁটায় কাঁটায়, যা প্রত্যাশা করেছি, তা-ই।’ ২০১২ সালে তিনি এইচএসসি পাস করেন। তিনি পড়াশোনা করতেন বিএফ শাহীন কলেজে। এইচএসসিতে ৪.৫০ পেয়েছিলেন।
সাদিয়া আয়মান: ফলাফলের আগে থেকেই সবার মতোই দুশ্চিন্তায় ছিলেন অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। সেদিন তিনি চাইছিলেন স্বাভাবিক থাকতে। কিন্তু ফলাফল তাঁকে স্বাভাবিক থাকতে দেয়নি। সাদিয়া আয়মান বলেন, ‘আমি আমার মতোই পড়াশোনা করেছি। মনোযোগীই ছিলাম। রেজাল্ট নিয়ে সবার যা হয়, আমারও অভিজ্ঞতা তেমনই। পরে রেজাল্ট দেখে খুশি হয়েছি। ফলাফল নিয়ে আমারও এমনটাই ধারণা ছিল। কিন্তু আম্মু ভেবেছিলেন, আমি হয়তো এ প্লাস পাব। না পাওয়ায় কিছুটা মন খারাপ হয়েছিল। কিন্তু পরিবার থেকে পড়াশোনা নিয়ে কখনোই চাপ দেয়নি।’ ২০১৭ সালে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁর কলেজ ছিল বরিশাল মহিলা কলেজ। তিনি পরীক্ষায় ৪.৩৯ পেয়েছিলেন।
তানজিম সাইয়ারা তটিনী: পড়াশোনার খুব মনোযোগ ছিল তানজিম সাইয়ারা তটিনীর। সারাক্ষণ নাকি বই নিয়ে বসে থাকতেন। বন্ধুরা বলতেন, তাঁর নামের সঙ্গে মেধাবীই মানানসই। তাই পরীক্ষায় কত পাবেন, সেটা বন্ধুরা আগেই বলে দিয়েছিলেন। তারপরও ফলাফল নিয়ে ভয় ও চিন্তায় ঘাবড়ে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী তটিনী। তিনি বলেন, ‘আমি পড়াশোনায় খুবই মনোযোগী ছিলাম। সেই পড়াশোনার দিনগুলোর কথা মনে হলে এখনো ভয় লাগে। হয়তো এই জন্য বাড়তি চাপে থাকতাম। ভয়ের মধ্যে থাকতে হতো। ভয়ে ভয়ে রেজাল্ট দেখতে গিয়েছিলাম। পরে তো দেখি গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছি। তখন তো খুবই খুশি হয়েছি।’