শুভ জন্মদিন নায়করাজ
কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের ৮১তম জন্মদিন ২৩ জানুয়ারি। ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পারিবারিক নাম আব্দুর রাজ্জাক। কলকাতার থিয়েটারে অভিনয় করার মাধ্যমে রাজ্জাক অভিনয় জীবনের শুরু করেন।
রাজ্জাক ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়তে সিনেমার ওপর পড়াশুনা ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন। এরপর কলকাতায় ফিরে আসেন। সেখানে তিনি দুইটি সিনেমায় অভিনয় করেন।
১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কারণে রাজ্জাক তার পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় এসেও রাজ্জাক চলচ্চিত্রের নায়ক হওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন তিনি।
প্রথমে সিনেমার একজন সহকারী পরিচালক হিসেবে ‘উজালা’ সিনেমায় পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন রাজ্জাক।
’৬০-এর দশকে সালাউদ্দিন পরিচালিত ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’-এ একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে রাজ্জাকের ঢাকায় অভিনয় জীবন সূচনা হয়। এরপর পরিচালক জহির রায়হানের ‘বেহুলা’তে রাজ্জাককে লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ করে দেওয়ার মধ্যদিয়ে প্রথম নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন তিনি।
‘বেহুলা’ সিনেমায় সুচন্দার বিপরীতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রাজ্জাককে। ৬০-এর দশকের শেষ থেকে ’৭০ ও ’৮০-এর দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠেন রাজ্জাক-অভিনয় করেন ৩শ’-এরও বেশি চলচ্চিত্রের নায়কের ভূমিকায়।
নায়করাজ রাজ্জাকের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে— বেহুলা, আবির্ভাব, এতটুকু আশা, ময়নামতি, নীল আকাশের নিচে, জীবন থেকে নেয়া, পীচঢালা পথ, নাচের পুতুল, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল, বেঈমান, বাঁদী থেকে বেগম, অনন্ত প্রেম, অশিক্ষিত, বড় ভালো লোক ছিল, ছুটির ঘণ্টা, অভিযান, চন্দ্রনাথ, আয়না কাহিনী ইত্যাদি।
চলচ্চিত্রের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তিনি অভিনয় ছাড়াও পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র। গড়ে তোলেন নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন। ২০১৫ সালে অর্জন করেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার। ২০১৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। তিনি পাঁচ বার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন।
রাজ্জাকের জন্মদিন উপলক্ষে চ্যানেল আই তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি চ্যানেল আই’র পর্দায় দেখা যাবে এ সব অনুষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে নায়করাজ রাজ্জাক অভিনীত চলচ্চিত্র, বিশিষ্টজনদের স্মৃতিচারণ, বিশেষ তারকাকথন এবং তার অভিনীত সিনেমার গান।
২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কিংবদন্তি এ চিত্রনায়ক।
এএম/আরএ/