নোবেলজয়ী বব ডিলানের যৌন নিপীড়নের মামলা খারিজ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ফেডারেল আদালতের বিচারপতি বাতিল করে দিয়েছেন মামলাটি, সেখানে সাহিত্যে নোবেল জয়ী ও বিশেষ পুলিৎজার লাভ করা বব ডিলানকে ১৯৬৫ সালে একটি ১২ বছরের মেয়েকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ছিল।
তথ্যগুলো জানা গিয়েছে আদালতের নথিপত্রের মাধ্যমে।
মামলার বিচারক ছিলেন ম্যানহাটন ফেডারেল বিচারক ক্যাথেরিন পোক ফাইলা।
তিনি খারিজ করে দিয়েছেন ফাইলটি পক্ষপাতদুষ্ট উল্লেখ করে। ফলে মামলাটি আর আবেদন করা যাবে না।
বাদীর আইনজীবীদের সিএনএন মন্তব্যের জন্য পায়নি।
ডিলানের আইনজীবিরা বুধবার অভিযোগ দাখিল করেছেন যে, বাদী আদালতের আদেশ দেওয়া তথ্যপ্রমাণগুলো হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সেগুলোর মধ্যে মোবাইল ম্যাসেজ এবং ইমেইলগুলোর কথাও উল্লেখ করেছেন তারা।
তারা আরো জানিয়েছেন, ‘সেই নারী এখন প্রায় ৬০ বছরের। তাকে মামলার শুরুতে সনাক্ত করা হয়েছে। নাম জে. সি. অধ্যাক্ষরে।’
তারা অভিযোগ করেছেন, ‘তিনি ধ্বংস করে ফেলেছেন প্রমাণগুলো, যেগুলো এই মামলাটির পক্ষে, বিপক্ষে প্রধান, বাস্তব তথ্যাদি হিসেবে ব্যবহার করা যেত।’
ডিলারের প্রধান আইনজীবি ওরিন স্নাইডার বলেছেন, ‘এই মামলাটি বাতিল হয়ে গিয়েছে। জঘন্য ব্যাপার ছিল যে, একে প্রথমবারই একেবারে সামনে নিয়ে আসা হলো।’
তিনি খুশি যে, এটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালে বব ডিলানকে এই মামলাটিতে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণে যৌননিপীড়নে তার বাধাদানকে কমানোর দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও অভিযোগ করা হয়েছে, মিলনের জন্য তারা মাদক ব্যবহার করেছেন, শারিরীক সহিংসতার ঝুঁকিগুলো তৈরি করেছেন, তাকে মানসিকভাবে আতংকিত করে ফেলে রেখে চলে গিয়েছেন, সেদিন মানসিকভাবে ধ্বংস করে দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে অরো বর্ণিত হয়েছে যে, অপরাধটি সংগঠিত হয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটির হোটেল চেলসিতে ডিলানের অ্যাপার্টমেন্টে।
তখন এই বাদীর বয়স ছিল মোটে ১২ বছর।
তবে এই মামলাটির ফাইল করা হয়েছে গেল বছর।
তখন ডিলানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘৫৬ বছরের মানুষটি মিথ্যা কথা বলছেন। তাকে প্রবলভাবে প্রতিরোধ করা হবে।’
রবার্ট অ্যালেন জিমারম্যান নামটিই হারিয়ে গিয়েছে বব ডিলানের আড়ালে। তিনি জন্মেছেন মিনেসোটাতে। ৮১ বছরের এই মার্কিন গায়ক ও গীতিকারকে প্রায়ই সারা বিশ্বের সর্বকালের সেরা গীতিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৬০ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি জনপ্রিয় ধারার গানে বিশ্বজুড়ে অন্যতম চরিত্র।
ষাটের দশক থেকে তার নন্দিত কাজগুলোর শুরু। “ব্লোইন’ ইন দি উইন্ড (১৯৬৩ সালের গান)” ও ‘দি টাইমস দে আর অ্যা-চেংগেন (১৯৬৪)’ নাগরিক অধিকার ও যুদ্ধবিরোধী গানে পরিণত হয়েছে।
বিখ্যাত গানের মধ্যে আছে ‘লাইক অ্যা রোলিং স্টোন’।
তার লেখা গানগুলো রাজনীতি, সামাজ, দর্শন ও সাহিত্য প্রভাবিত।
১ কোটি ২৫ লাখ অ্যালবাম বিক্রি হয়েছে তার।
২০০৮ সালে তাকে ‘বিশেষ পুলিৎজার পদক’-এ সম্মানিত করা হয়েছে। তিনি এই পদক লাভ করেছেন এই কারণে যে, গভীর প্রভাব রেখেছেন জনপ্রিয় সংস্কৃতি ও আমেরিকান সংস্কৃতিতে। তিনি অসাধারণ কাব্য শক্তিতে সমৃদ্ধ গান লিখেছেন।
২০১৬ সালে বব ডিলান ‘নোবেল পুরস্কার’ পেয়েছেন ‘সাহিত্যে’, আমেরিকার মহান সঙ্গীতের ধারায় নতুন কাব্যময়তা তৈরির জন্য।
ছবি : যৌবনের বব ডিলান।
ওএফএস।