মার্কিন টিন তারকা ববি রিডেল মারা গিয়েছেন
‘ববি রিডেল’ পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের শুরুর দিকে কিশোর তারকা, পপ স্টার এবং ক্রেজ ছিলেন। মার্কিন এই গায়কের কয়েকটি শ্রোতাপ্রিয় ও বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত গান আছে। ৭৯ বছর বয়সে তিনি আজ তার জন্মভূমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়া অঙ্গরাজ্যে মারা গিয়েছেন নিউমোনিয়া রোগে ভুগে।
তিনি ছিলেন একজন গায়ক, ব্যান্ডের ড্রামার ও অভিনেতা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেরা ১০টি গানের তালিকায় পাঁচবার তিনি শীর্ষে গিয়েছেন। কিংবদন্তী ব্যান্ড বিটলসকে তিনি তাদের ‘শি লাভস ইউ’ গানটি লিখতে অনুপ্রাণিত করেছেন।
তার গানগুলো শোভামন্ডিত, বাদনেও শোভাময়, রোমান্টিক ধারার। তার গলাটি পরিস্কার, হৃদয় ছুঁয়ে যায়। একটি সুপার ডুপার হিট গান-“উই গট লাভ, সুইংইন’ স্কুল”। আরেকটি বিখ্যাত গান ‘ভোলারে, ওয়াইল্ড ওয়ান’। এটিও মার্কিন টপ টেনে সেরা ছিল।
এরপর তিনি বিটলসকে সেই গানটিতে উদ্দীপ্ত করেছেন। যদিও পল ম্যাকার্টিনি এ বিষয়ে বলেছেন, ‘একজন অখ্যাত রিডেলের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে গানটি হয়েছে।’
এই দুটি গান বাদেও ২৯টি পুরুষালি রক অ্যান্ড রোল ধাঁচের গান আছে বব রিডেলের। সেগুলোর কটি হলো-‘স্টিং ব্যাকড ব্যালাড্রাই’, ‘দি ওল্ড ব্ল্যাক ম্যাজিক (পপ গান)’, ‘সোয়ে’ এবং ‘জঙ্গল বেল রক’।
তার নিজের অঞ্চলের বন্দনা নিয়ে প্রার্থনাগীতি আছে, ‘ওয়াইল্ডউড ডেজ’, ‘অ্যান ওডে টু দি সিসাইড’, টাউন ইন নিউ জার্সি (এই গানটি মার্কিন গানের শীর্ষ তালিকাতে টানা নয়টি সপ্তাহ এক নম্বরে ছিল।)’
ববি রিডেলের আসল নাম রবার্ট রাইডারর্যালি। জন্মেছেন ১৯৪২ সালের ২৬ এপ্রিল। তিনি প্রথম ব্রেক লাভ করেন মোটে নয় বছর বয়সে, পল হোয়াইটম্যানের ‘টিভি টিন ক্লাব’ নামের প্রভিভা অন্বেষণে।
তিনি অত্যন্ত সুদক্ষ ও কুশলী ড্রামার ছিলেন। পাশাপাশি ছিলেন একজন বিখ্যাত গায়ক। তার জীবনের পথ আরেকজন ফিলাডেলফিয়ান, ভবিষ্যতের কিশোর হার্ট থ্রুব ফ্রাঙ্কি অ্যাভালনের সঙ্গে জোড় বেঁধেছে। তাদের সেই বিখ্যাত ব্যান্ড দলের নামটি ছিল ‘রোকো অ্যান্ড দি সেইন্টস’। এরপর তো আলাদা একজন সালো গায়ক হলেন তিনি।
রিডেল ইউরোপের পুরোটা ও অষ্ট্রেলিয়া গান নিয়ে গিয়েছেন।
তার দেশের নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত কোপাকাবানা নাইট ক্লাবে পারফর্ম করে মাতিয়েছেন।
তিনি মঞ্চে সঙ্গীতনির্ভর নাটকে অভিনয় করেছেন দেদার। একজন নায়কও ছিলেন। কাজ করেছেন নায়িকা জ্যানেট লির সঙ্গে। তাদের বিখ্যাত মঞ্চ নাটক হলো-‘বাই, বাই বার্ডি’। তাতে তার আরেক নায়িকা অ্যান-মার্গারেটও ছিলেন।
তিনি কাজ করেছেন নায়ক ডিক ভ্যান ডাইকের সঙ্গে। তবে ববি রিডলে ক্যালিফোর্নিয়াতে একটি চলচ্চিত্র জীবন শুরু করতে গিয়েও যাননি। আসলে যেতে চাননি।
তার অন্য আরো অনেক টিন তারকা ভাই-বোনের মতো রিডেলের পপ সংস্কৃতির চচা ক্ষয়েছে যুদ্ধম্যানিয়া ও ব্রিটিশ আক্রমণের ভয়ে। তবে নানা ধরণের শোতে তাকে পাওয়া গিয়েছে চিরকালের মতো। তিনি অভিনয় ও গানে বেঁচে থাকবেন। সবচেয়ে নামকরা শোটি হলো ‘দি রেড স্কেলিটন শো’। তাকে তুলে রেখেছেন বিশ্বে একটি স্থায়ী, ক্রমবর্ধিত, নস্টালজিক ভক্তকুল। তাদের জন্য তিনি তার জীবনের অনেক অংশ ট্যুর করে গিয়েছেন।
ববি রিডেল সবসময়ের জন্য দারুণ স্মরণীয় শো করেছেন ফ্রাঙ্কি অ্যাভালন ও ফেইবিয়ানের সঙ্গে। তারা তখন ‘দি গোল্ডেন বয়েজ অব ব্যান্ডস্টান্ড’। এটি তাদের বিখ্যাত ব্যান্ডদল। অনেক বছর টিকেছে।
তিনি ৭০’র ডিসকো ক্রেজেরও অন্যতম তারকা। তিনি এই স্টাইলে এক পায়ে গানের তালে নাচতেন। এদিক, সেদিক আন্দোলিত হওয়াতেও অনন্যতা এনেছেন। এগুলোকে আবার রেকর্ড করিয়েছেন।
তাকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে টিনএজারদের বিশ্বজুড়ে প্রিয় লেখক স্টিফেন কিং বলেছেন, “৫০’র দশকের পুরোটা ও ষাটের প্রথমদিকের টিন তারকাদের মধ্যে সবচেয়ে মেধাবী মানুষ।”
ছবি : ১. ১৯৬০ সালে প্রচারের জন্য তোলা ববি রিডলের ছবি।
২. ১৯৮৮ সালে কনসার্টে তিনি গান করছেন।
ওএস।