৩১ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘চিরঞ্জীব মুজিব’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ‘চিরঞ্জীব মুজিব’। চলচ্চিত্রটির নিবেদক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা। রোববার (১২ ডিসেম্বর) সিনেমাটির মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৩১ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘চিরঞ্জীব মুজিব’।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ প্রজেকশন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্র সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিভিন্ন তথ্য জানান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। চলচ্চিত্রটির পরিচালক ও সংলাপ রচয়িতা নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ, সৃজনশীল পরিচালক জুয়েল মাহমুদ ও প্রযোজক লিটন হায়দার এসময় উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্র নির্মাণে সময় দেবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে এবং অন্য ভাষাভাষীসহ কোটি কোটি মানুষ গ্রন্থটি পড়েছে। কিন্তু এটি নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়নি। এই চলচ্চিত্রের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। চলচ্চিত্রের পরিচালক নজরুল ইসলাম এবং প্রযোজক লিটন হায়দারকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিনেমার পরিচালক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সিনেমটিতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর একটি অংশ নিয়ে সিনেমটি তৈরি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তো একদিনে গড়ে উঠেননি। বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠার ঘটনা এখানে তুলে ধরা হয়েছে। ইতিহাসনির্ভর সিনেমা তৈরি করতে গেলে অনেক প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে তৈরি করতে হয়। আমাদের ক্ষেত্রেও তেমনটা ছিল। সিনেমাটির চিত্রনাট্য আমরা প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে দেখাই, তার কিছু কারেকশন ছিল। সে অনুযায়ী আমরা কাজ শুরু করি। অবশেষে আমরা মুক্তির দ্বারপ্রান্তে। এই সিনেমায় আমার সঙ্গে যারা ছিলেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ একটি সিনেমা মানে টিম ওয়ার্ক। সবার প্রচেষ্টায় সিনেমাটি তৈরি করতে সফল হয়েছি। সবাইকে আমন্ত্রণ জানাই সিনামটি দেখার।’
‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপট ১৯৪৯ থেকে ১৯৫২ সাল। কীভাবে একজন শেখ মুজিব ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন গণমানুষের নেতা, ভাষা আন্দোলনে রেখেছেন শক্তিশালী ভূমিকা—এসব কাহিনি উঠে এসেছে ছবিটিতে।
সম্প্রতি ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ ছবির ট্রেলার উদ্বোধন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গত ২৮ নভেম্বর বঙ্গভবনের দরবার হলে ছবিটি উপভোগ করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ছবির ট্রেলার উদ্বোধন করেন। এর আগে গত ২৩ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্রটির ৩টি পোস্টারে স্বাক্ষরের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে বিনা কর্তনে ছাড়পত্র পায়।
‘চিরঞ্জীব’ মুজিব চলচ্চিত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল। সিনেমাটিতে বেগম ফজিলাতুন্নেছা রেণুর চরিত্র অভিনয় করেছেন পূর্ণিমা। বঙ্গবন্ধুর বাবা ও মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যথাক্রমে খায়রুল আলম সবুজ ও দিলারা জামান। প্রয়াত এসএম মহসীন, নরেশ ভুঁইয়া, একে আজাদ পাভেল, শতাব্দী ওয়াদুদ, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, আরমান পারভেজ মুরাদ, কায়েস চৌধুরীসহ পাঁচ শতাধিক নবীন ও প্রবীণ অভিনেতা-অভিনেত্রী এ চলচ্চিত্রের বিভিন্ন চরিত্রে রূপদান করেছেন।
‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্রের সংগীত আয়োজনে ছিলেন ইমন সাহা, ক্যামেরায় সাহেল রণি এবং শিল্প নির্দেশনা ও পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন প্রয়াত সেলিম আহমেদ। ছবির গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন, কুমার বিশ্বজিৎ, কিরণ চন্দ্র রায়, কোনাল ও নোলক বাবু। চলচ্চিত্রটিতে গগন হরকরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও জসীম উদ্দীনের গান ব্যবহার করা হয়েছে।