সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

জুলাইয়ের গণহত্যার মাঝেও আওয়ামী সরকারকে মদদ দিচ্ছিলো কিছু তারকা

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ গ্রাফিক্স

ছাত্র-জনতার দেশকাঁপানো অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। আর তারপরই স্বৈরাচার ‍মুক্ত নতুন এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়। কিন্তু আগস্টের এই সাফল্য এমনেই অর্জিত হয়নি, জুলাই জুড়ে ছাত্রজনতার বুকের রক্তের মাধ্যমে তা সফলতা পেয়েছে। স্বৈরাচার সরকারকে রুখে দিতে শেষমেষ শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেয় সকল শ্রেনী পেশার মানুষরাও। 

জুলাই জুড়ে চলা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে রুখে দিতে যখন নির্বিচারে গণহত্যা চালানো হয়, তখনও গোপনে সরকারকে এই নৃশংস হত্যাকান্ডে মদদ দিয়েছিলো বিনোদন জগতের কিছু তারকা। গোপনে চলা তাদের কিছু কথপোকথোনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ব্যপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। 

আলো আসবে নামে সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কি কথপোকথোন হয়েছিলো প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হলো: 

‘প্রিয় বন্ধুগণ, সালাম ও কৃতজ্ঞতা। আপনাদের আজকের পারফরম্যান্স ও গ্রুপের কথা পড়ে শোকের মাসে জানাই অভিনন্দন। সেইসঙ্গে কিছু কথা- ১. আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে আলো আসবেই। ২. সময়টা আমাদের প্রতিকূলে। ৩. আমাদের যুদ্ধটা দীর্ঘ হবে এবার, তাই শক্তি ও মনোবল ধরে রাখতে হবে। ৪. এই সময়ে কাউকে আঘাত করে কিছু বলা যাবে না। ৫. যে কোনো মূল্যে এ আন্দোলন দ্রুত থামাতে হবে। ৬. সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অন্যকে সাপোর্ট দিতে হবে। ৭. একজনের যেকোনো বিপদে সবাইকে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ৮. সবাই মিলে এক আত্মা এক প্রাণ হতে হবে। তাহলেই আমরা এই তুফান পাড়ি দিতে পারব। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন, জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।’

গত ২ আগস্ট রাত ১ টা ৩০ মিনিটে ‘আলো আসবেই’ নামক শোবিজ অঙ্গনের আওয়ামীপন্থি শিল্পী ও সাংবাদিকদের নিয়ে তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এভাবেই একটি মেসেজ লেখেন ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়ক রিয়াজ।

ঠিক তার একদিন পরই ওই গ্রুপে আরও একটি বার্তা নিয়ে হাজির হন এই নায়ক। এবার ৩ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় রিয়াজ লেখেন, বিএনপি-জামাত আর রাজাকার পুত্ররা আহ্বান জানাচ্ছে, দেশ বাঁচাতে এগিয়ে আসতে। কোন দেশ সেটা আর বুঝতে বাকি নেই। তাদের বাবারাও ৭১ সালে দেশ বাঁচানোর ডাক দিয়েছিল। তবে সেটা বাংলাদেশ না, পাকিস্তান। আজ ৭১ মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে ২৪ দিয়ে। আগস্ট মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে জুলাই দিয়ে, গুজব ছড়িয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমিকে ৭১-এর বদলে ২৪ এর বধ্যভূমি বানানোর চেষ্টা চলছে।

এরপর রিয়াজ আরও লেখেন, সরকার বিরোধী সব অপশক্তি যেখানে নানাভাবে সক্রিয় তখনও অনেকেই এটাকে শুধুমাত্র নিরপেক্ষ ছাত্র আন্দোলন ভাবতেই পারে, সেটা তাদের স্বাধীনতা। কিন্তু আন্দোলন প্যাটার্ন এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে ছাত্রদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরাতন শকুনেরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ সমর্থক হিসেবে পরিচিত শিল্পী ও সাংবাদিকদের নিয়ে তৈরি গঠিত সেই গ্রুপে জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত এমন বেশ কিছু মেসেজ দিতে দেখা গেছে রিয়াজকে।

অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস যেন রিয়াজকে আরও একধাপ ছাড়িয়ে গেছেন। কখনো শিক্ষার্থীদের গায়ে গরম জল ঢেলে দিতে বলেছেন। আবার কখনো আন্দোলনের পক্ষে যারা প্রোফাইল লাল করেছিলেন তাদের চিনে রাখা এবং পরবর্তী সময়ে ‘সাইজ করার’ হুমকিও দিয়েছেন।

এখানেই থামেননি তিনি। নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে ‘হারামজাদা’, বিভিন্ন ব্যক্তিকে ‘রাজাকার’ তকমা দেওয়া, আবার শিল্পীদের স্ট্যাটাস-কর্মকাণ্ডে তুলে ধরে তাদেরকে চিহ্নিত করে রাখতে বলেছেন এই অভিনেত্রী।

এর মধ্যে ছাত্রদের পক্ষ নেওয়ায় একজন সংগীতশিল্পীকে উদ্দেশ্য করে অরুণা বিশ্বাসের একটি মেসেজ ছিল,‘বয়স যদি কম থাকত পিটাইতে পিটাইতে বাবা ডাক শিখাইতাম।’

আওয়ামীপন্থি তারকা হিসেবে পরিচিত অভিনেত্রী জোতিকা জ্যোতি। ‘আলো আসবেই’ নামক সেই গ্রুপে তার উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে যেসব তারকা রাজপথে ছিলেন তাদেরকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করতে দেখা যায় এই অভিনেত্রীকে।

যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে নিয়ে তার একটি বিতর্কিত মন্তব্য। যেখানে এই নির্মাতাকে সরাসরি গালি দিতে দেখা যায় এই শিল্পীকে।

আন্দোলনের পক্ষ নিয়ে ফারুকীর একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস তুলে ধরে সেই গ্রুপে জ্যোতি লেখেন, ‘কোন লেভেলের দেশদ্রোহী হলে এমন উসকানিমূলক কথা লেখা যায়। ওকে বা**র্ড ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। পুরো জঙ্গি স্টাইলে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। মিডিয়ার লাল গ্রুপের পুরো নেতৃত্ব দিচ্ছে সে। যেমন মিডিয়াটা নোংরা করছে, এখন দেশের দিকে ওর নজর পড়ছে।’

এছাড়াও জুলাই থেকে আগস্ট মাসে ওই গ্রুপের বিভিন্ন মেসেজে শিক্ষার্থীদের পক্ষ নেওয়া তারকাদের চিহ্নিত করে তাদেরকে ‘সাইজ’ করার আহ্বান জানান এই অভিনেত্রী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন ঊর্মিলা-রোকেয়া প্রাচী-সোহানা সাবা

ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সামাজিক মাধ্যমে সরব ছিলেন অভিনেত্রী ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর ও রোকেয়া প্রাচী। সরকারের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বিভিন্ন বার্তা প্রচারের চেষ্টা করেছেন তারা দু’জন। ‘আলো আসবেই’ গ্রুপেও দেখা মিলেছে তাদের সেই কর্মকাণ্ডের চিত্র।

এর মধ্যে ঊর্মিলা প্রতিদিনই কোথায় কোন তারকা শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন, সেসব চিত্র ওই গ্রুপে তুলে ধরতেন। রোকেয়া প্রাচী কখনো ভিডিওবার্তা নিয়ে হাজির হতেন, আবার কখনো রাজপথে সরকারের হয় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে নেমে আসার আহ্বান জানাতেন।

সোহানা সাবাকেও একের পর এক স্ক্রিনশট শেয়ার করতে দেখা গেছে সেই গ্রুপে। এর মধ্যে ছাত্রদের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সহশিল্পীদের নিয়েও বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন এই অভিনেত্রী।

শিল্পীদের মাঠে নামানোর কার্যক্রমে সরব ছিলেন সাজু খাদেম-ফেরদৌস-তানভীন সুইটি ও শামিমা তুষ্টি

জুলাইয়ের শেষদিকে রাজপথে শিক্ষার্থীদের পক্ষে যখন একদল শিল্পীরা মাঠে নেমে আসে, তখন আওয়ামীপন্থি ওই গ্রুপের তারকারাও সরব হয়ে ওঠেন। নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন মানববন্ধন ও সমাবেশের ডাক দেন তারা।

অভিনেতা সাজু খাদেমের সমন্বয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। কবে, কখন তারকারা কোথায় হাজির হবেন সেসব আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে নেওয়া হতো ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে।

ঢাকা-১০ আসনের এমপি ও চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নেতৃত্বে আগস্টের শুরুতেই রাজপথে নেমে আসেন আওয়ামীপন্থি ওই শিল্পীরা। গ্রুপেই তাদেরকে আন্দোলনে যোগ দিতে বিভিন্ন নির্দেশনা ও চাপ প্রয়োগ করতে দেখা যায় এই নায়ককে।

এছাড়া আন্দোলনে কারা অংশ নিচ্ছেন, এসব তথ্য নিয়মিত সেই গ্রুপে শেয়ার করতেন অভিনেত্রী তানভীন সুইটি ও শামিমা তুষ্টি। এছাড়াও যারা শিক্ষার্থীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলছিলেন, তাদেরও কড়া সমালোচনায় মেতে উঠতে দেখা গেছে এই দুই শিল্পীকে।

দেশের নন্দিত অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফা ও বদরুল আলম সৌদকেও সক্রিয়া দেখা গেছে ‘আলো আসবেই’ সেই গ্রুপে। এর মধ্যে গত ১ আগস্ট একটি মেসেজে সুবর্ণা মোস্তফাকে লিখতে দেখা যায়, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ফেসবুক ব্যবহার করব না। যতদিন না এটা গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে।’

শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার ভিডিও নিয়ে যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উত্তাল তখনই ফেসবুককে ব্যঙ্গ করে এমন মন্তব্য করতে দেখা যায় এই তারকাকে।

একইদিনে সুবর্ণা মোস্তফার স্বামী নির্মাতা বদরুল আলম সৌদকে একটি মেসেজে লিখতে দেখা যায়, আজ ছাত্রদের স্লোগানে ইনকিলাব জিন্দাবাদ শুনতে হলো। এটা পাইক্কাদের স্লোগান। এখানে আসলো কি করে?

আন্দোলনের পক্ষে ‘এক দফা’ শীর্ষক ছবি কাভারে পোস্ট করেছিলেন তরুণ অভিনেত্রী নাজিফা তুষি। সেই পোস্টের স্ক্রিনশট ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে দিয়ে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

জুলাইয়ে দেশে যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়, তখন ‘আলো আসবেই’ গ্রুপের এই শিল্পীরা শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা না বলে উল্টো বিটিভি প্রাঙ্গণে গিয়ে টেলিভিশনটির ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে ভেঙে পড়তে দেখা যায়। এসময় তারা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেন একইসঙ্গে শাস্তিও দাবি করেন।

বিটিভি প্রাঙ্গণে গিয়ে সেসময় কান্না-আহাজারিতে ভেঙে পড়া সেই শিল্পীদের ধিক্কার জানান ছোট পর্দার বর্তমান সময়ের অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। যে কারণে ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে তাকে নিয়েও আলোচনা হয়।

সাদিয়া আয়মানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, মাথা ঠিক ছিল না মিলনের!

যেখানে সাদিয়ার পরিচয় জানতে চান অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস। জবাবে অভিনেত্রী মিলন ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই সময়ের তথাকথিত জনপ্রিয় অভিনেত্রী।’

প্রায় মাসখানেক বাদে সম্প্রতি অভিনয়শিল্পীদের সেই আলাপচারিতার স্ক্রিনশট ফাঁস হলে মিলন ভট্টাচার্যের উদ্দেশে সাদিয়া আয়মান বলেছেন, আপনাকে ধন্যবাদ মিলন দাদা, মানুষের মতো দেখতে, শিল্পী নামে শয়তান বেশধারীদের কাছে আমার মতো ‘এই সময়ের তথাকথিত জনপ্রিয় অভিনেত্রী’কে চিনিয়েছেন। যে ভুলকে ভুল বলতে জানে, সত্যকে সত্য বলতে জানে। গ্রুপের নাম দিয়েছেন ‘আলো আসবেই’ তা বেশ ভালো। তবে আপনারা জানেন, আপনাদের নিজেদের জীবনে, মস্তিষ্কে সত্যিকারের আলোর যে ভীষণ প্রয়োজন?

অনেকেই গ্রুপে থেকেছেন তবে রাজপথে নামেননি

চিত্রনায়ক সায়মান সাদিক, অভিনেত্রী শাহনুর, আশনা হাবিব ভাবনাসহ আরও বেশ কিছু তারকা সেই গ্রুপে যুক্ত ছিলেন। যারা ফেরদৌস-রিয়াজদের নির্দেশনা মোতাবেক রাজপথে নামতে পারেননি, তবে আন্দোলনের পক্ষ আছেন বলে জানিয়েছেন।

এর মধ্যে ১ আগস্ট যখন ফেরদৌস শিল্পীদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান, তখন চিত্রনায়িকা শাহনুরকে বলতে দেখা যায়- ‘আমরা যশোর আছি। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যেতে পারছি না। কষ্ট লাগছে। আমি আপনাদের সাথে আছি সবসময়।’

একইসময়ে চিত্রনায়ক সায়মন সাদিক ও অভিনেত্রী ভাবনাকেও একই রিপ্লাই দিতে দেখা যায়। এর মধ্যে ভাবনা জানান, আমরা একসঙ্গে কিশোরগঞ্জে থাকায় আসতে পারছি না। তবে মনটা পড়ে আছে। জয় বাংলা’

কারা ছিলেন সেই গ্রুপে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর লক্ষ্যে তৎকালীন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত এবং সংসদ সদস্য ফেরদৌসের নেতৃত্বে ‘আলো আসবেই’ নামের ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়, যেখানে আওয়ামীপন্থি শিল্পী ও সাংবাদিকেরা যুক্ত ছিলেন।

এই গ্রুপে ছিলেন- সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, অরুণা বিশ্বাস, ফেরদৌস ছাড়াও ছিলেন রিয়াজ আহমেদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, আজিজুল হাকিম, স্বাগতা, বদরুল আনাম সৌদ, শমী কায়সার, তানভীন সুইটি, আশনা হাবীব ভাবনা, শামীমা তুষ্টি, জামশেদ শামীম, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সাজু খাদেম, হৃদি হক, ফজলুর রহমান বাবু, দীপান্বিতা মার্টিন, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, লিয়াকত আলী লাকী, নূনা আফরোজ, রোকেয়া প্রাচী, রওনক হাসান, আহসানুল হক মিনু, গুলজার, এস এ হক অলীকসহ অনেকে।

‘আলো আসবেই’ নামের সেই গ্রুপের স্ক্রিনশটগুলো ফাঁস হতেই অনেক তারকাই গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ বা এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের মধ্যে অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস অন্যতম। আগস্টের শেষের দিকেই এই অভিনেত্রী কানাডা চলে গেছেন।

সরকার পতনের পর একপ্রকার ‘নিখোঁজ’ চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও রিয়াজ। তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা যাচ্ছে না। নিজেদের মুঠোফোনও বন্ধ করে রেখেছেন।

ওই গ্রুপ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেছেন, আমাদের এমন একটি গ্রুপ ছিল, এটা সত্য। সেখানে আমি একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আগুন দেওয়ার বিষয় নিয়ে লিখেছিলাম। সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদেরও যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। আমার কাছে বিষয়টি খারাপ লেগেছে, হাসপাতালে কীভাবে মানুষ আগুন দেয়? সেখানে তো আমার-আপনার পরিবারের সদস্যরাই জীবন বাঁচাতে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য আসে।

অভিনেত্রী আরও বলেন, আমি কিন্তু কোনো ছাত্রদের দায়ী করিনি হাসপাতালে আগুন দেওয়ার ঘটনায়। আর এ-ও বলতে চাই, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটিতে হয়তো আমরা অনেকে ছিলাম। কিন্তু সবার মনমানসিকতা এক না। শিক্ষার্থীদের ওপর গরম পানি ঢেলে দেওয়ার যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা কারও প্রত্যাশার নয়।

আলোচিত সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত থাকতে দেখা গেছে অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবুকে। স্ক্রিনশটগুলো প্রকাশ্যে আসার পর এই অভিনেতা দাবি করেছেন, ‘একটা গ্রুপের অ্যাডমিনের কাছে ফোন নম্বর থাকলেই তিনি সেই গ্রুপে যাকে খুশি যতজন খুশি অ্যাড করতে পারেন। অনেক গ্রুপ আছে সেখান থেকে চাইলেও কেউ বের হতে পারে না। যদি এডমিন তাকে ডিলিট না করে। আলো আসবেই গ্রুপে আমি কখনো প্রবেশ করিনি বা কে কি লিখছে আমি যদি ওখানে না দেখি আমি কি করে জানবো ওখানে কি লিখছে। ঢালাওভাবে কাউকে দোষারোপ করা বা সমালোচনা করা ঠিক না।’

এছাড়া অভিনেতা মিলন ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির প্রভাবের কারণে ওই গ্রুপে কি বলেছেন নিজেও বুঝতে পারছেন না। সেই গ্রুপে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে এই অভিনেতা বলেন, দুঃখিত, সে সময়ে দেশের অস্থির পরিস্থিতির জন্য। কি যে কথা বলেছি, সত্যিই বলছি- ‘মাথা ঠিক ছিল না’।

Header Ad

রাতেই দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন সাবেক মুখ্যসচিব কায়কাউস !

ফাইল ছবি

আজ রাতেই যেকোন সময় দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস। জানা গেছে, তার কাছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ছাড়াও রয়েছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট। আর এসব পাসপোর্ট ব্যবহার করেই যেকোনো সময় এমিরেটস বিমানের একটি ফ্লাইটে করে আজ রাতেই বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে এই খবর জানা গেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতিতে লক্ষ্য কোটি টাকা লুটপাটকারী খলনায়কদের একজন শেখ হাসিনার সাবেক এই মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস। হাসিনার সরকারের দুর্নীতিবাজ' মাফিয়া ব্যক্তিত্ব আহমেদ কায়কাউসের দুর্নীতির বড় উদাহরণ হচ্ছে এই পাসপোর্ট। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ সচিব হয়েও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হয়েছেন আমেরিকার নাগরিক। বিশ্বজুড়ে ঘোরেন দুই দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করেই। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আবার সেই সময়ই প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব। এত বড় প্রতারণা জালিয়াতি কিভাবে করলেন এই কায়কাউস?

তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির মহোৎসবের সময়টাতেই যেন সব অনিয়ম দুর্নীতি যায়েজ ছিলো মাফিয়া তন্ত্র কায়েমকারী সবার।

অভিযোগ রয়েছে, সুদূর আমেরিকায় কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন কায়কাউস। আমেরিকায় বাড়ি রয়েছে ডজন খানেক। এছাড়া বেনামে গড়েছেন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

আরও অভিযোগ রয়েছে, কায়কাউস তার সময়ে বিদ্যুৎ বিভাগকে লুটেপুটে খেয়েছেন। বিদ্যুৎ বিভাগে কোন টেন্ডার ছাড়াই একশটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের লাইসেন্স দিয়েছেন। রেন্টাল- কুইক ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার কেন্দ্রগুলোকে  ক্যাপাচিটি চার্জ হিসেবে এক লক্ষ কোটি টাকা গচ্চা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। যার বেশির ভাগ টাকা কায়কাউস, নসরুল হামিদ বিপু, তৌফিক-ই- ইলাহী সিন্ডিকেট লুটেপুটে নিয়েছেন।

২০১৯ সালে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব থেকে সেসময়কার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব হন আহমদ কায়কাউস। মুখ্য সচিব পদে বসেও নিয়ন্ত্রণ করতেন বিদ্যুৎ বিভাগ । কায়কাউস আর তৌফিক-ই-ইলাহী সিন্ডিকেট গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে লুটেপুটে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ।

দুর্নীতির মাফিয়া আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব হয়েও এখানেও আইন ভেঙে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা পরিষদের (ইপিআরসির) চেয়ারম্যান হন। একই সময়ে আইনের তোয়াক্কা না করে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ সিপিজিসিবিএল এরও চেয়ারম্যান হন।

এছাড়া মুখ্যসচিব থাকাকালে চট্টগ্রামে নিজ এলাকা পটিয়া পৌরসভার ২ নম্বর সুচক্রদন্ডী ওয়ার্ডের জন্য এক হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ নেন কায়কাউস। অথচ কোন সংসদীয় আসনের নামেও এমন বরাদ্দ হয় না। দেশের ইতিহাসে ক্ষমতার ভয়ংকর অপব্যবহার করে নিজের ছোট্ট ওয়ার্ডের নামে বরাদ্দ নিয়ে তার পুরোটাই লুটে নেন তিনি। এতে সহায়তা করে নিজেও হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যান ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুপক সেন।

তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা লুটপাটে সাহায্য করার পুরস্কার হিসেবে আহমদ কায়কাউসকে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী প্রধান করেন শেখ হাসিনা।

২০২৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে গুঞ্জন ওঠে দ্বিতীয় দফায় মন্ত্রী হচ্ছেন দেশের দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড আহমদ কায়কাউস। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে আর মন্ত্রী হওয়া হয়নি আহমেদ কায়কাউসের।

সৈয়দপুর রেল কারখানা থেকে লোহা ও কয়লা চুরি

ছবি: সংগৃহীত

অভিনব কায়দায় দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে লোহা ও কয়লা চুরির ঘটনা ঘটেছে।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা কারখানায় এলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

জানা গেছে, চোরেরা গাছ বেয়ে রেলওয়ে কারখানার প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢুকে উপকারখানায় প্রবেশ করে। এরপর কারখানার ফাউন্ড্রি শপের ফার্নেস (চুল্লি) কেটে তিন মেট্রিক টন লোহা ও চার মেট্রিক টন কয়লা চুরি করে নিয়ে যায়।

সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ও শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুদিন রেলওয়ে কারখানাটি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বন্ধ থাকে। এই সুযোগে চোরেরা গাছ বেয়ে ওপরে উঠে কারখানার সুউচ্চ প্রাচীর টপকে রেলওয়ে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে। রেলওয়ে কারখানায় মোট ২৬টি শপ (উপ-কারখানা) রয়েছে। এর মধ্যে কারখানার ফাউন্ড্রি শপে ঢুকে শপের ফার্নেস চুল্লি কেটে তিন মেট্রিক টন লোহা ও পাঁচ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে যায়।

সূত্রমতে, রেলওয়ে কারখানার সুউচ্চ প্রাচীর ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও এভাবে চুরির বিষয়টি অনেককে অবাক করেছে।

উপ-কারখানার নূরুজ্জামান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) শেখ হাসানুজ্জামান জানান, সুউচ্চ প্রাচীর টপকে কারখানার মালামাল চুরি আমাদের বিস্মিত করেছে। বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ড যাওয়ার চেষ্টা, নৌকা ডুবে নিহত ৮

ফাইল ছবি

পশ্চিম ইউরোপের ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ড যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। খবর বিবিসির।

জানা গেছে, রাবারের তৈরি নৌকাটিতে ৬০ জন আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ইরিত্রিয়া, সুদান, সিরিয়া ও ইরানসহ বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিক ছিলেন।

অবৈধভাবে ইংল্যান্ড প্রবেশের চেষ্টায় প্রায়ই ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে প্রাণহানি ঘটে। এবারের ঘটনা দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে ঘটল। এর আগে ৩ সেপ্টেম্বর কয়েক ডজন অভিবাসী বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যায়। এতে ছয় শিশু এবং একজন গর্ভবতী নারীসহ ১২ জন মারা যান।

ফ্রান্সের কোস্টগার্ড জানিয়েছে, নৌকাটি অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই ছিল। যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পরই এটি ডুবে যায়। বিচের উদ্ধারকর্মীরা সাতজনের মরদেহ উদ্ধার করেন। এ ছাড়া তাৎক্ষণিক ৫৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। এদের মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। অপরদিকে ছয়জন মারাত্মকভাবে হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে বলেছে, সর্বশেষ ঘটনাটি আরেকটি ভয়ংকর এবং এড়ানো যায় এমন ট্র্যাজেডি ছিল। অভিবাসন প্রত্যাশীদের মৃত্যুহার কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সময়ের দাবি।

শরণার্থী কাউন্সিলের সিইও এনভার সলোমন বলেন, এ ধরনের মৃত্যু চাইলেই এড়ানো সম্ভব। এ জন্য নিরাপদ রুটে অভিবাসীদের গমনাগমন নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

রাতেই দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন সাবেক মুখ্যসচিব কায়কাউস !
সৈয়দপুর রেল কারখানা থেকে লোহা ও কয়লা চুরি
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ড যাওয়ার চেষ্টা, নৌকা ডুবে নিহত ৮
ভোলায় সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাসের সন্ধান
সেন্সর বোর্ডের সদস্যপদ ফিরিয়ে দিলেন আশফাক নিপুণ
হারিয়ে যাওয়া ২০০ একর জমি বাংলাদেশকে ফেরত দিতে সম্মত ভারত
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরিবোর্ডে থাকছেন যারা
নির্বাচিত সরকারই ঠিক করবে কী সংস্কার হবে: মির্জা ফখরুল
১০০ কোটি নয় কাজীপাড়া স্টেশন মেরামতে লাগছে ১ কোটি টাকারও কম
অবশেষে মিলল শেখ হাসিনার পদত্যাগের চিঠি
রাজশাহীর সাবেক এমপি এনামুল ঢাকায় গ্রেপ্তার
নতুন ডিসির ৫৬ জনই আওয়ামী লীগের তালিকার!
গোপনে দলিলপত্র সরাচ্ছে এস আলম গ্রুপ, এক আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় ১৫ বস্তা নথি
এস আলমের গৃহকর্মী মর্জিনার অ্যাকাউন্টে তিন কোটি টাকা
পালানোর সময় কিলঘুষি দিয়ে মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তকে আটক
পাকিস্তানের সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে ক্ষমতাসীন দল
সেপ্টেম্বরের ১৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৪ হাজার কোটি
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী গ্রেপ্তার
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) আজ
মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ব মানবতার জন্য অনুসরণীয় আদর্শ: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস