শাকিবের ট্রাম্পকার্ড বুবলী
ঢাকাই সিনেমার নায়ক শাকিব খান। পারিবারিক জীবন, ব্যক্তিজীবন এবং ক্যারিয়ার জীবন সব একাকার হয়েছে তার ক্ষেত্রে। তিন জীবনের আলাদা সত্ত্বা থাকলেও শাকিবের ক্ষেত্রে তা-এক ও অভিন্ন। সবগুলো জীবনের পালকেই তীব্র সমালোচনার হাওয়া লেগেছে তার। স্বস্তি ও সুরক্ষিত সাজানো ক্যারিয়ারে বিষাদ ভর করেছে এই নায়কের।
জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী দুজনেই শাকিব খানের স্ত্রী এবং সন্তানের মা। একজন সাবেক, আরেকজন বর্তমান। আবার কেউ কেউ বলছেন দুজনেই শাকিবের স্ত্রী হিসেবে সাবেক হয়েছেন।
তবে অপু বিশ্বাসের সঙ্গে শাকিব খানের ডিভোর্সের বিষয়টি স্পষ্ট হলেও বুবলীর কথা এখনো গুঞ্জনের পর্যায়েই রয়েছে। বুবলী অবশ্য পরিষ্কার করেছেন এখনো শাকিবের সঙ্গে তার ডিভোর্স হয়নি। যদিও শাকিব খান দাবি করেছেন বুবলীর সঙ্গে তার সব সম্পর্ক শেষ হয়েছে। আর কখনো অনস্ক্রিন ও অফস্ক্রিনে কিছু হবে না তাদের।
শাকিব খানের ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমার প্রচারেও সরব ছিলেন বুবলী। ঈদের ছুটিতে দুজন একসঙ্গে ঘুরে বেড়িয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গিয়েছিল। শাকিব প্রস্তুতি নিয়ে ১০ মে মাঠে নেমেছেন নতুন সিনেমা ‘প্রিয়তমা’র শুটিং করতে।
এসব ইতিবাচকতার মধ্যে হুট করে এক গণমাধ্যমে প্রকাশ হলো বুবলীর সঙ্গে শাকিবের সম্পর্ক না থাকার খবর। প্রতিবেদকের নামহীন সেই সাক্ষাৎকারমূলক খবরে শাকিব দাবি করেছেন, বুবলীর সঙ্গে আর কখনোই সিনেমা করবেন না তিনি। ব্যক্তিগত সম্পর্কও নেই তাদের। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয় মঙ্গলবার (৯ মে)।
এ সংবাদ তেমন আলোচনায় না আসলেও বিরক্ত বুবলী, অপু বিশ্বাস ও শাকিবের ভক্তরা। এদিকে (৯ মে) শাকিব খানের বিরুদ্ধে প্রযোজক রহমত উল্লাহর ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলায় সমন জারি করেছেন আদালত। এই সংবাদে আবারও নতুন করে আলোচনায় আসেন শাকিব। অনেকেই বলছেন আদালতের সমন জারি হওয়ার খবর থেকে সবার দৃষ্টি সরাতেই নতুন কৌশল খাটিয়ে ট্রার্মকার্ড হিসেবে বুবলীকে ছুড়ে দিয়েছেন শাকিব।
এর আগেও বহুবার এমন কৌশল ব্যবহার করেছেন শাকিব খান। যখনই তাকে ঘিরে কোনো সমালোচনা দেখা দেয় তিনি হাজির হন অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে। কখনো সোশ্যাল মিডিয়ায়, কখনোবা তার ঘনিষ্ঠ সংবাদকর্মীদের দিয়ে ভিন্ন আলোচনা তৈরির প্রচেষ্টা দেখা যায়। কখনো নতুন সিনেমার খবর দিয়ে প্রসঙ্গ পাল্টাতে মরিয়া হয়ে উঠেন। যদিও এসব সিনেমা ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। এগুলো আলোর মুখ দেখেনি।
এবারও হয়তো সেই পথে হাঁটলেন শাকিব খান। তবে এই যাত্রায় বুবলীকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করে বলতে গেলে আরও বিপাকে পড়েছেন শাকিব। কারণ বুবলীও এবার শাকিবকে ছেড়ে কথা বলেননি। স্যোশাল মিডিয়াতে তিনিও এবার শাবিকের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। অবলীলায় তিনি প্রকাশ করেছেন তাদের সম্পর্কের নানা সমীকরণের গল্প।
বুধবার (১০ মে) বুবলী তার ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন শাকিব খান ও প্রকাশ হওয়া সংবাদটির প্রতি।
বুবলী তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘মিস্টার শাকিব খান, আপনার বিশেষ কিছু সাক্ষাৎকার খুব অপরিচিত লাগে, কেমন যেন! বাস্তবে দেখা আপনার সঙ্গে মেলে না..আপনি কি সব সময় সজ্ঞানে কথা বলেন নাকি অজ্ঞানেও মাঝেমাঝে কথা বলেন? নাকি আপনার হয়ে আপনার একান্ত মুখপাত্ররাও কথা বলে? কিছুদিন পর পর হঠাৎ হঠাৎ করে আমাকে নিয়ে আপনার এরকম নিউজ দেখে খুব অবাক হয়ে ভাবি হচ্ছেটা কী!’
বুবলীর স্ট্যাটাসের পর এই মুখপাত্রদের নিয়েও কানাঘুষা চলছে অনেকের মনেই। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠেছে, হঠাৎ করে কেন বুবলীকে কেন্দ্র করে আলোচনার জন্ম দিতে চাইছেন সেইসব মুখপাত্ররা? তবে কি শাকিব খানের নামে আদালত থেকে যে সমন জারি হয়েছে গত সোমবার সেই আলোচনা বা সমালোচনা থামাতে কিংবা বিতর্কের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরাতেই বুবলীর কাঁধে আলোচনার বন্ধুক রাখা? এই প্রশ্নও অনেকের মনে।
উল্লেখ্য, নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে প্রযোজক রহমত উল্লাহর মানহানির অভিযোগে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলায় জবাব দাখিলের জন্য সমন জারি করেছেন আদালত। সোমবার (৮ মে) ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদলতের বিচারক মাসুদুল হক এ আদেশ দেন। মঙ্গলবার (৯ মে) আদালতের সেরেস্তাদার শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ৩০ এপ্রিল ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মাসুদুল হকের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে মামলা করেন প্রযোজক রহমত উল্লাহ। এ মামলায় সম্প্রতি বাদী কোর্ট ফি দাখিল করলে আদালত সোমবার (৮ মে) বিবাদী শাকিব খানকে আগামী ১৫ মের মধ্যে জবাব দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে ১৩ এপ্রিল ঢাকার সিএমএম কোর্টে মো. রশিদুল আলমের আদালতে শাকিব খানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৯৯/৫০০/৫০১ ধারায় আরও একটি মানহানি মামলা করেন এই প্রযোজক। মামলা নং- সিআর-২৪৯/২৩ (রমনা)। এই মামলাটির তদন্ত করার জন্য পুলিশের বিশেষ শাখা পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এএম/এসজি