শিক্ষার্থীরা একটি সোপান অতিক্রম করেছে
দীর্ঘদিন ধরে কোভিড-১৯ এর কারণে শিক্ষার্থীরা নানা ধরণের বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে ইতিবাচক দিক হলো একটি উৎকণ্ঠার অবসান হয়েছে। শিক্ষার্থীরা একটি সোপান অতিক্রম করেছে। যেমন;পরীক্ষা হলো কি হলো না, কাজ করবো কি করবো না, কি হবে কি হবে না এই উৎকণ্ঠার অবসান হলো। এই পরীক্ষা নিয়ে নানা ধরণের প্রশ্ন থাকতে পারে। সীমিত পরিসরে, স্বল্প সময়ে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে এবং স্বল্প সময়ে ফল প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি, শিক্ষার্থীরা জীবনের একটি ধাপ তো অতিক্রম করতে পারলো আনুষ্ঠানিকভাবে । আমি এটিকেই সাধুবাদ জানাবো। শিক্ষার্থীদেরকে অভিনন্দন।
এটিও ঠিক যে, কেউ কেউ হয়তো পারেনি। তবে বেশিরভাগই পেরেছে। অসংখ্য জি. পি .এ ৫ পেয়েছে। সেটিও বড় প্রশ্ন নয়, বড় প্রশ্ন হচ্ছে কোন পরীক্ষা না দিয়ে অটোপাসের নাম তো আর আসেনি। অন্তত এটুকু বলতে হবে যে, তারা পরীক্ষা উপলক্ষে প্রস্তুতি দিয়েছে, পড়াশোনা করেছে এবং পরীক্ষা দিয়েছে। এই জায়গাটিকে আমি মনে করি তাদের প্রকৃত সাফল্য।
এটি একটি আপদকালীন সময়। ঝড় তুফান সাইক্লোনের পরে আমরা নানা ধরণের বিকল্প ব্যবস্থা নেই। এটিও সেরকম বিকল্প ছিল, আদর্শ হয়তো ছিল না কিন্তু এটি ছাড়া বিকল্প কিছু ছিল না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশই সীমিত সিলেবাসে মুল্যায়নের ব্যবস্থা করেছে। আমি মনে করি এটি একটি বিশাল মূল্যায়ন। কারণ এটির মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জগতে প্রবেশ করবে।
এখন যে চ্যালেঞ্জটি, সেটি হলো আগামীর। এরপরে কি হচ্ছে? অসংখ্য জি.পি.এ থাকার কারণে তাদের মধ্যে এবং অভিভাবকদের মধ্যেও উৎসাহ এবং প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে। সবাই যেন নামী দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। সেখানেই হয়তো একটি হোঁচট খাবে তারা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজকে যে কথাটি বলেছেন, সেটি খুবই গুরুত্বপুর্ণ। তিনি বলেছেন, পরবর্তী পর্যায়ের জন্য প্রস্তুতি নেয়া। একই সাথে তিনি বলছেন, শিক্ষার্থীরা যেন সাধারণ শিক্ষায় না গিয়ে উদ্যোক্তা হবার দিকে মনোনিবেশ করে। এখন সে পথেই আমাদের এগুতে হবে। তথ্য প্রযুক্তির যুগে শুধুমাত্র শিক্ষিত বেকার হয়ে লাভ নেই। আগামীতে সম্ভাবনাকে আরও ভালোভাবে নিয়ে আসতে হবে। আসন সংখ্যা কিন্তু এসব নামী দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সীমিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়ও দেখা গিয়েছে যে, ভাল ভাল অনেক শিক্ষার্থীরা কৃতকার্য হতে পারেনি, প্রায় ৯৩%। কাজেই সেই চ্যালেঞ্জতো সামনে থাকবেই। এসব কিছু মাথায় নিয়েই প্রস্তুতি নিতে হবে পরবর্তী পর্যায়ের জন্য। এগিয়ে যেতে হবে এবং কিছুতেই হতাশ হওয়া যাবে না।
লেখক: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা।