এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল
যেভাবে হলো সাবজেক্ট ম্যাপিং
২০২১ সালের এইচএসসি, আলিম ও ভোকেশনাল পরীক্ষা করোনা মহামারির কারণে যথা সময়ে অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। এপ্রিল মাসের নির্ধারিত পরীক্ষা ৮ মাস পিছিয়ে ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষার নম্বর ও সময় কমিয়ে এ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। পরীক্ষার্থীদের মধ্যকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিজ্ঞান বিভাগ, মানবিক বিভাগ, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের একই সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ না করে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। ২০২১ সালের সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে ছয়টি পত্রে পরীক্ষা হয়। পরীক্ষার প্রায় দেড় মাস পর ফল ঘোষণা করা হলো।
রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন। পরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এরপর দুপুরে শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করা হয়।
ফল ঘোষণার ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী দুইটি পাবলিক পরীক্ষার ফলের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়। কীভাবে এই সাবজেক্ট ম্যাপিং হয়েছে সে সম্পর্কে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ‘বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটিসহ অবশিষ্ট বিষয়সমূহের নম্বর এসএসসি/সমমান ও জেএসসি/জেডিসি থেকে সাবজেক্ট ম্যাপিং এর মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জেএসসি/সমমানের ২৫% এবং এসএসসি/সমমানের ৭৫% নম্বর বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে আরও জানানো হয়েছে, ‘চতুর্থ বিষয়ের ক্ষেত্রে- যে ৩টি নৈর্বাচনিক বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে সে বিষয়গুলো ব্যতীত চতুর্থ বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এসএসসি/সমমান পরীক্ষার বিষয় ও জেএসসি/জেডিসি পর্যায়ের সামঞ্জস্যপূর্ণ বিষয় হতে সাবজেক্ট ম্যাপিং এর মাধ্যমে নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। উদাহরণ-চতুর্থ বিষয় উচ্চতর গণিত এর ক্ষেত্রে এসএসসি/সমমান পরীক্ষার উচ্চতর গণিত ও জেএসসি/জেডিসি এর বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বর এবং চতুর্থ বিষয় জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এসএসসি/সমমান পরীক্ষার জীববিজ্ঞান ও জেএসসি/জেডিসি এর বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বর সাবজেক্ট ম্যাপিং এর মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়েছে।’
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৮ মাস পর ২ ডিসেম্বর ২০২১ শুরু হয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা চলে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। পরে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের গড় করে শিক্ষার্থীদের এইচএসসির মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে পরীক্ষা ছাড়া (অটোপাস) না দিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার।
ঘোষিত ফলাফল অনুসারে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। এই পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। যা উত্তীর্ণের মোট সংখ্যার ১৩. ৭৯ শতাংশ।
এপি/
আরও পড়ুন :পাসের হারে এগিয়ে যশোর, পিছিয়ে চট্টগ্রাম : জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রাজশাহী, পিছিয়ে সিলেট