এইচএসসি : পাসের হারে এগিয়ে যশোর, পিছিয়ে চট্টগ্রাম
জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রাজশাহী, পিছিয়ে সিলেট
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২১ এর ফলাফলে পাসের হারের দিক দিয়ে শীর্ষে রয়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডের পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১। পাসের হারের দিক দিয়ে সব বোর্ডের পেছনে রয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩৯।
অন্যদিকে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকে সব শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে শীর্ষে এসেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। পিছিয়ে রয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। ৯ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পিছিয়ে সিলেট বোর্ড।
রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন। পরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এরপর দুপুরে শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করা হয়।
পাসের হার বিশ্লেষণ:
এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। এ পরীক্ষায় মোট অংশগ্রহণকারী ছিলেন ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৮১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৩ লাখ ৬ হাজার ৭১৮ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ৯৪ দশমিক ১৪ শতাংশ ও ছাত্রী ৯৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এক নজরে সব শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার:
ঢাকা বোর্ডের পাসের হার ৯৬ দশমিক ২০ শতাংশ।
রাজশাহী বোর্ডে পাসের হার ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।
কুমিল্লা বোর্ডে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
যশোর বোর্ডে পাসের হার ৯৮ দশমিক ১১ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
বরিশাল বোর্ডে পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।
দিনাজপুরে বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
ময়মনসিংহ বোর্ডের পাসের হার ৯৫ দশমিক ৭১ শতাংশ।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ৯৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পাসের হার ৯২ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
জিপিএ-৫ বিশ্লেষণ:
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন। যা উত্তীর্ণের মোট সংখ্যার ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী। মোট উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মধ্যে এ হার ২২ দশমিক ২৪। সব শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডের জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৭৫ শিক্ষার্থী। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মধ্যে এ হার ৩ দশমিক ৮৭। পেছনের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৭২ শিক্ষার্থী। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ হার ৪ দশমিক ৫৭। ৯ সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে সিলেট শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৩১ শিক্ষার্থী। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মধ্যে এ হার ৭ দশমিক ১০।
এক নজরে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা ও হার:
ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫৯ হাজার ২৩৩ শিক্ষার্থী; হার ১৯ দশমিক ১০।
রাজশাহী বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী; হার ২২ দশমিক ২৪।
কুমিল্লা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৪ হাজার ১৫৩ শিক্ষার্থী; হার ১২ দশমিক ৩৫।
যশোর বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২০ হাজার ৮৭৮ শিক্ষার্থী; হার ১৬ দশমিক ২৯।
চট্টগ্রাম বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৩ হাজার ৭২০ শিক্ষার্থী; হার ১৩ দশমিক ৭৭।
বরিশাল বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৯৭১ শিক্ষার্থী; হার ১৪ দশমিক ৯৩।
সিলেট বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৩১ শিক্ষার্থী; হার ৭ দশমিক ১০।
দিনাজপুরে বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ হাজার ৩৪৯ শিক্ষার্থী; হার ১৩ দশমিক ৫৮।
ময়মনসিংহ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৭ হাজার ৬৮৭ শিক্ষার্থী; হার ১১ দশমিক ১১।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৭২ শিক্ষার্থী; হার ৪ দশমিক ৫৭।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫ হাজার ৭৭৫ শিক্ষার্থী; হার ৩ দশমিক ৮৭।
এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা:
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৮ মাস পর ২ ডিসেম্বর ২০২১ শুরু হয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা চলে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বচনিক বিষয়ে ছয়টি পত্রে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সময় কমিয়ে আনা হয় দেড় ঘণ্টায়। পরীক্ষা না নেওয়ায় বাংলা, ইংরেজির মতো আবশ্যিক বিষয়গুলোর মূল্যায়ন করা হবে অষ্টম শ্রেণির সমাপনী জেএসসি ও সমমান এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে।
এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। পরে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের গড় করে শিক্ষার্থীদের এইচএসসির মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালে পরীক্ষা ছাড়া (অটোপাস) না দিয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এপি/এসএন