এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। ১১ আগস্ট থেকে হচ্ছে না এইচএসসি পরীক্ষা। অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে বুধবার (৭ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সরকারি মাধ্যমিক শাখা-২ এর উপসচিব সাইয়েদ এ. জেড মোরশেদ আলী স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ১১ আগস্ট ২০২৪ তারিখ থেকে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০২৪-এর পরীক্ষাসমূহ অনিবার্য কারণবশত স্থগিত করে পরীক্ষা গ্রহণের বিস্তারিত সময়সূচি পরবর্তীতে জানানো হবে মর্মে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দফায় দফায় চলমান এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তিন দফায় আট দিনের পরীক্ষা স্থগিত করেছে বোর্ডগুলো। পরে ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানানো হয়।
চলমান পরিস্থিতিতে প্রথমে গত ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তৃতীয় দফায় ২৮ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সূচি অনুযায়ী যত পরীক্ষা ছিল, তা সব স্থগিত করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি বোর্ড ও মাদরাসা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন।
বক্তব্য রাখছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। ছবি: সংগৃহীত
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার প্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে উপদেষ্টার অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
ফারুক ই আজম বলেন, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দিতে চায় রাষ্ট্র। যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়ে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে তাদের অবশ্যই বিচার হবে।
উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কতজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের চাকরি হয়েছে তা যাচাই-বাছাই চলছে। সেখানে কতজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চাকরি পেয়েছে তাদের ঠিক রেখে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত ৩ হাজারের অধিক মামলা রয়েছে এরা আদালতে স্থগিতাদেশ নিয়ে সুবিধা বহাল রেখেছে।
ফারুক ই আজম বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতো। মন্ত্রণালয় সেখানে তদারকি করতো না।
বন্যা পুর্নবাসন কার্যক্রম নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরুপণ হয়নি। আরও এক সপ্তাহ লাগবে। বন্যায় পুর্নবাসন কমসূচিতে সাহায্য ও সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। বিষয়টি তারা বিবেচনায় নিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের খুব পরিচিত এবং আলোচিত নাম ফারাজ করিম চৌধুরী। যিনি মানবতার ফেরিওয়ালা নামেও পরিচিত। চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলায় জনসেবামূলক কাজে তাকে দেখা যেত। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লিগ সরকার পতনের পর বেরিয়ে আসলো ফারাজ করিমের পরিবারের অন্ধকার দিক। তার বাবা এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ছিলেন এলাকার ত্রাস। দুই যুগ ধরে সেখানে ঘটেছে একের পর এক গা শিউরে ওঠার মতো ভয়ংকর অপরাধ।
চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলা যেন একটি ভয়ংকর জনপদের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। হাজার হাজার মানুষকে নির্মম অত্যাচার, নিপীড়ন, গুম-খুন, হামলা-মামলা, জমি দখল, ধর্ষণ, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, যৌন নিপীড়নসহ এমন কোনো ঘৃণ্য কাজ নেই, যা হয়নি এই উপজেলায়। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, বিএনপি-জামায়াতসহ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক কর্মী, মুনিরিয়া যুব তাবলিগ কমিটির ভক্ত থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও নির্যাতিত হয়েছেন। হত্যা ও গুমের শিকার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। ভাঙচুর করা হয়েছে বাড়িঘর, মসজিদ, মন্দির, মাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এতোকিছু ঘটে যাওয়ার পরেও প্রতিবাদ দূরের কথা, মুখ খুলতেও সাহস পায়নি কেউ। কারণ, সব অপরাধের মূল হোতা ছিলেন ওই এলাকার সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। দীর্ঘ ২৪ বছর রাউজানে ত্রাসের রাজত্ব চলেছে তার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একে একে মুখ খুলতে শুরু করেছে রাউজানের নির্যাতিত মানুষ। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়ানক সব অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য।
গুম, খুন ও নির্যাতনের অভিযোগে এখন পর্যন্ত রাউজান ও চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা হয়েছে। চট্টগ্রাম-৬ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য ভারতে পালাতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার আখাউড়া সীমান্তে বিজিবির কাছে ধরা পড়েছেন।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ফজলে করিম চৌধুরী ২০১৯ সালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত রাজাকার তালিকায় থাকা একেএম ফজলুল কবির চৌধুরীর সন্তান। এরপর ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাচাতো ভাই বিএনপি নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ৭ হাজার ৩২৯ ভোটে হারিয়ে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের এমপি নির্বাচিত হন ফজলে করিম চৌধুরী। ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন তিনি।
জানা যায়, ফজলে করিম চৌধুরী ওরফে জুইন্যা এতটাই দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ছিলেন যে তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল রাউজানবাসী। তিনি উপজেলাজুড়ে কায়েম করেছিলেন একনায়কতন্ত্র।তার কথার বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না প্রশাসনেরও। উন্নয়ন কাজের টেন্ডার থেকে শুরু করে সরকারি নিয়োগসহ সবকিছুই হতো তার নির্দেশে। তাকে ম্যানেজ করা ছাড়া জনপ্রতিনিধি হওয়ার উপায় ছিল না কারও। নির্বাচিত হয়েও এমপির রোষানলে পড়ে পৌরসভার অফিসে যেতে পারেননি সাবেক মেয়র দেবাশীষ পালিত।
বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে সাবেক এমপি ফজলে করিমের বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুকে ফজলে করিমের নির্দেশে হত্যা করা হয়।
রাউজানের কাগতিয়া, গহিরা, সুলতানপুর, মোহাম্মদপুর, কতদলপুর, গশ্চি নয়াহাট, পাহাড়তলী, পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে জানা গেছে, বিএনপির নেতাকর্মী ও মুনিরিয়া যুব তাবলিগ কমিটির বিভিন্ন ইউপিতে অবস্থিত অফিসগুলো ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছিল গত কয়েক বছর আগে। মুনিরিয়া তাবলিগের বেশ কয়েকজন সদস্য বলেন, তাদের সংগঠনটি একটি অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন। কিন্তু ফজলে করিম তাদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি মনে করতেন। এ কারণে এমপি মুনিরিয়া তাবলিগ কমিটি ধ্বংসের পাঁয়তারা করেন।
জানা গেছে, রাউজান উপজেলার সব ইটভাটা থেকে প্রতি বছর ফজলে করিম চৌধুরীকে ২ লাখ টাকা করে দিতে হতো। এ ছাড়া উপজেলার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজের কাজের টেন্ডার পাওয়ার পর ঠিকাদারদের বাধ্যতামূলকভাবে এমপিকে ২০ শতাংশ কমিশন দিতে হয়েছে।
অন্যের জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছেন বাগানবাড়ি: রাউজানের সাবেক এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর রয়েছে ২০ একর ভূমির ওপর বাগানবাড়ি। এই বাগানবাড়ির পাশে ২ একর জায়গায় নতুন করে গড়া পেট্রোল পাম্পের দ্বিতল ভবন দখলে নিয়েছিলেন তিনি। দখল পাকাপোক্ত করতে গড়তে চান মাদ্রাসা। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর স্থানীয় লোকজন এই পেট্রোল পাম্প এলাকায় রাউজান ওলামা কল্যাণ সমিতি নামে একটি সংগঠনের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বখতিয়ার উদ্দিন ফকির গণমাধ্যমে বলেন, ‘জায়গা-জমি দখল, অস্ত্রের মুখে জমি রেজিস্টারি, ঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজতবাস করানোর হোতা ছিলেন সাবেক এই সাংসদ। তিনি আমার প্রায় তিন একর জায়গা জোরপূর্বক দখল করে বাগানবাড়ি সম্প্রসারণ করেছেন। বিনামূল্যে জায়গা রেজিস্টারি না দেওয়ায় আমার ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়। আমি পার্শ্ববর্তী উপজেলায় পালিয়ে বাঁচতে পারলেও তার মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে পারিনি। পরে পুলিশ দিয়ে হাটহাজারী উপজেলার নজুমিয়া হাট থেকে আটক করে আমাকে অস্ত্র দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে সে। সরকার পতন হলে দীর্ঘ একযুগ পর বাড়িতে আসি আমি।’
মতের অমিল হলেই ছাড়তে হতো এলাকা: সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরীর নির্যাতন নিপীড়নে গত ১৫ বছরে এলাকা ছাড়া হয়েছেন কয়েক হাজার বিএনপি নেতাকর্মী। তরীকতভিত্তিক সংগঠন মুনিরিয়া যুব তবলীগ কমিটিরও শতাধিক কর্মীকে এলাকাছাড়া করেছেন তিনি। বাদ যাননি নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ পালিত, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ডা. শেখ শফিউল আজম, নাজিম উদ্দীন তালুকদার, ইয়াছিন মাহমুদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুসলিম উদ্দিন খান, সাধন মুহুরী, চন্দন দে, শান্তি পদ বৈদ্যসহ অসংখ্য নেতাকর্মী ছিলেন এলাকাছাড়া। এদের মধ্যে দেবাশীষ পালিত নির্বাচিত হওয়ার পরও পাঁচ বছর পৌর মেয়রের চেয়ারে বসতে পারেননি। সাবেক এই এমপির রোষানলের শিকার হয়ে হামলা মামলায় জেল হাজতে যেতে হয়েছে বিএনপির সাবের সুলতান কাজল, রেজাউল রহিম আজম, রাসেল খান, মোহাম্মদ রিপন, জানে আলম, নুরুল ইসলাম মেম্বার সহ অনেক নেতাকর্মীকে।
উন্নয়ন কাজে এমপির চাঁদাবাজি: গত ১৫ বছরে রাউজানে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। এসব উন্নয়ন কাজের জন্য ফজলে করিম চৌধুরীকে ২০ শতাংশ হারে কমিশন দিতে হয়েছে ঠিকাদারদের। এসব উন্নয়ন কাজ বন্টন করতেন এমপির মনোনীত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাবেক বিএনপি নেতা শাহাজান ইকবাল। নিয়ম অনুসারে পত্রিকায় উন্নয়ন কাজের দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি আহবান করলেও কোন ঠিকাদার উম্মুক্ত টেন্ডারে অংশ নিতে পারতো না। নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা ঠিকাদারি ব্যবসা করতে চাইলেও নিদিষ্ট ব্যক্তিকে ছাড়া কাজ করতে দেওয়া হতোনা। সেই কারণে সাধারণ নেতাকর্মীরা সাথে নেতার দুরুত্ব বাড়তে থাকে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় সরকার বিভাগ, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দপ্তর হতে প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে কমিশন বাণিজ্য হয়ছিল প্রায় ৫ শত কোটি টাকা।
কমিশন বাণিজ্য চলা এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম- রাঙামাটি সড়কের হাটহাজারী হতে রাবার বাগান পর্যন্ত চার লেন সড়ক, হালদা নদীর বেড়িবাঁধ, হাফেজ বজলুল রহমান সড়ক, শহিদ জাফর সড়ক, অদুদিয়া সড়ক, ইছাপুর সড়ক, হলদিয়া ভিলেজ রোড়, হালদা ব্রিজ, উপজেলা পরিষদ ভবণ, শেখ কামাল কমপ্লেক্সে, ১৪ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে, চারটি চারতলা বিশিষ্ট কলেজ ভবন, শিল্প নগর, ট্রমা সেন্টার, দুইটি পিংক সিটি, ২৬ মেগা ওয়ার্ড বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পলিটেকনিকেল স্কুল, দুইটি থানা ভবণ অন্যতম।
যুদ্ধবিরতির চুক্তি ও জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
যুদ্ধবিরতি চুক্তি এবং জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে ইসরায়েলে। বিক্ষোভে অংশ নেয় কয়েক হাজার মানুষ। বিক্ষোভের সময় তারা সেনা সদরদপ্তরের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি ভবনের সামনে সমবেত হন এবং নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এ সময় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, হাজার হাজার সরকারবিরোধী ইসরায়েলি বিক্ষোভকারী তেল আবিবের প্রাণকেন্দ্রে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এসময় গাজায় আটক থাকা বন্দিদের মুক্তির জন্য আরও প্রচেষ্টার আহ্বান জানান তারা।
বিক্ষোভকারীরা শনিবার সেনা সদর দপ্তর এবং অন্যান্য সরকারি ভবনের বাইরে জড়ো হন এবং প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। এছাড়া যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চলে এখনও আটক থাকা প্রায় ১০০ বন্দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সাথে চুক্তিতে পৌঁছানোর দাবি জানান তারা।
আল জাজিরা বলছে, গাজা থেকে ছয় বন্দির লাশ উদ্ধারের পর বাকি বন্দিদের ফেরত আনার দাবিতে গত দুই সপ্তাহে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে আনুমানিক সাড়ে ৭ লাখ মানুষ গত সপ্তাহান্তের সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন।
শনিবারের সমাবেশে অংশ নেওয়া বন্দিদের পরিবার জানিয়েছে, বন্দিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের ব্যর্থতায় তারা হতাশ। অনেকে হামাসের সাথে চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারার জন্য নেতানিয়াহুকে দোষারোপ করেছেন কারণ তারা বিশ্বাস করেন, আলোচনা ব্যর্থ হওয়া মানে এটি তাকে যতদিন যুদ্ধ চলবে ততদিন ক্ষমতায় থাকতে সাহায্য করবে।
গাজায় আটক থাকা ইসরায়েলি সৈন্য নিমরোদ কোহেনের ভাই ইয়োটাম কোহেন বলছেন, ‘চুক্তি-বিনাশকারী এই সরকার বন্দিদের পরিত্যাগ করছে এবং তাদের মৃত্যুর মুখে ছেড়ে দিয়েছে।’
কোহেন দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, ‘যতদিন নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকবেন, এই যুদ্ধ অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে এবং কোনও বন্দি চুক্তি হবে না। বন্দিদের জীবন বাঁচাতে নেতানিয়াহুকে অবশ্যই সরাতে হবে।’
আল জাজিরার হামদাহ সালহুত জর্ডানের রাজধানী আম্মান থেকে জানিয়েছেন, ইসরায়েলি জনসাধারণ নেতানিয়াহুর প্রতি ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়ছেন। তিনি বলেন, ‘তারা বলছেন- তিনি (নেতানিয়াহু) যোগ্য নন বা চুক্তি মেনে নিতে ইচ্ছুক নন। … তারা বলছেন- নেতানিয়াহু এবং তার সরকার বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য কিছুই করছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নেতানিয়াহু দেশীয় বা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বলেছেন- যুদ্ধের সমস্ত লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়াকে উপযুক্ত মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো- এই লক্ষ্যগুলোর কোনোটিই প্রায় এক বছর পরেও অর্জিত হয়নি।’