সময় ও পরিবেশ সমন্বয়ে এগিয়ে চলেছে ট্রাস্ট কলেজ
রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা উত্তরায় অবস্থিত ট্রাস্ট কলেজ। গতানুগতিক শিক্ষা পদ্ধতি থেকে ব্যতিক্রমী এবং আধুনিকতার সারিতে সুপরিচিত একটি কলেজ। একাদশ শ্রেণিতে তিনটি বিভাগে প্রায় ৩৫০ শিক্ষার্থী নিয়ে ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে কলেজটি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শুরু করে সাফল্য আর ক্রমাগত অগ্রযাত্রায় ট্রাস্ট কলেজ এখন এক যুগ পেরিয়ে শুরু করেছে ১৩তম ব্যাচের ভর্তি কার্যক্রম।
শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদানের জন্য রয়েছে ১০২ জন দক্ষ, অভিজ্ঞ ও উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আন্তরিকত শিক্ষাদানে বিগত ১১টি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ সহ ট্রাস্ট কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ঈর্ষণীয় সাফল্যের অবদান রেখে আসছে। সাফল্যের এই ধারাবাহিকতায় জমা হয়েছে দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সম্মাননা পদক।
প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ বশির আহাম্মেদ ভূঁইয়া
ট্রাস্ট কলেজ গতানুগতিক মুখস্থবিদ্যা, নোটসংস্কৃতি, পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্তকরণ বা সাজেশন নির্ভরতা পরিহার করে শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ সিলেবাস সম্পর্কে দক্ষ করে তুলতে সর্বদা দৃঢ় প্রত্যয়ী। সৃজনশীল ও কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে বিশ্বায়নের উপযোগী, আলোকিত মানুষ ও দক্ষ জাতি গঠনের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে ট্রাস্ট কলেজ।
প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই ট্রাস্ট কলেজ সময় ও পরিবেশের এক অপূর্ব সমন্বয় সাধনে যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনায় যখন সমগ্র বিশ্ব গৃহবন্দি, তখন প্রযুক্তির যথার্থ ব্যবহারে অনলাইন মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে ট্রাস্ট কলেজ।
ইতিমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ এবং মহান স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ট্রাস্ট কলেজে গ্রহণ করা হয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বর্পূণ কর্মসূচি। বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও কোভিড-১৯ বিবেচনায় বিগত ১২ বছরের (শিক্ষাবর্ষ: ২০০৯-১০ থেকে ২০২০-২১) টিউশন ফির ধারাবাহিকতার বদলে ব্যাপক পরিবর্তন করা হয়েছে ২০২১-২০২২ শিক্ষার্বষের টিউশন ফির (বিজ্ঞান শাখা ৩০০০ টাকা, ব্যবসায় শিক্ষা ২৮০০ টাকা এবং মানবিক বিভাগ ২৫০০ টাকা)। তারপরও টিউশন ফি সম্পূর্ণ ফ্রি-তে পড়ার সুযোগ প্রদান করা হয়েছে–যারা এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে তাদের জন্য এবং আর্থিকভাবে অসচ্ছল জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের জন্যও রয়েছে এই সুযোগ।
এক যুগেরও অধিক সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে সুদক্ষ ও বিচক্ষণ পরিচালনা পর্ষদ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকের সমন্বিত উদ্যোগে ট্রাস্ট কলেজের পাঠদান পদ্ধতিতে রয়েছে ব্যতিক্রমী ও অনন্য বৈশিষ্ট্য।
প্রতিটি টার্মের নির্ধারিত ক্লাসের সংখ্যা অনুযায়ী অধ্যায়সমূহ সাজিয়ে টার্মভিত্তিক পরিকল্পনা করা হয়। টার্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিদিনের ক্লাস পরিচালিত হয়ে থাকে।
প্রতিটি ক্লাস পূর্বনির্ধারিত পাঠ-পরিকল্পনা অনুযায়ী নিখুঁতভাবে গ্রহণ করা হয়। ক্লাসের নির্ধারিত সময়ে শিক্ষকগণ কী বিষয় কোন পদ্ধতিতে পাঠদান ও মূল্যায়ন করবেন পাঠ-পরিকল্পনায় তা নির্ধারণ করা থাকে।
প্রতিটি ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের কলেজে ভর্তির প্রাক্কালে মুদ্রিত পাঠ-পরিকল্পনা ও প্রভাষণপত্র সরবরাহ করা হয়। এই প্রভাষণপত্রে আলোচ্য বিষয়ের মূল প্রসঙ্গসহ অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নসমূহ উল্লেখ থাকে, যা ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস শুরুর আগে পড়া থাকলে ক্লাস চলাকালে সহজেই অনুসরণ করতে পারে।
কোনো বিষয়ের লেকচার শুরুর পূর্বেই ছাত্রছাত্রীদের A+ পাওয়ার উপযোগী মানসম্মত হ্যান্ডনোট প্রদান করা হয়।
চূড়ান্ত পরীক্ষার পূর্বে প্রতিটি বিষয়ের মূল বই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে পড়ানো হয়। সেই সাথে শ্রেণিকক্ষেই ছাত্রছাত্রীদের প্রতিটি অধ্যায়ের সকল সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করানো হয়।
নির্ধারিত ক্লাসের বাইরে অতিরিক্ত সময়ে শিক্ষকবৃন্দের প্রত্যক্ষ এবং নিবিড় তত্ত্বাবধানে অপেক্ষাকৃত দুর্বল এবং কম মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রচলিত প্রভাষণ বা লেকচার পদ্ধতি ছাড়াও প্রজেক্টর, কম্পিউটার, সিডি, ভিসিডিসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়া হয়। পাঠদান পদ্ধতির বৈচিত্র্যের কারণে শিক্ষা আনন্দময় এবং আকর্ষণীয় হয়। এতে দুর্বল এবং মনোযোগী ছাত্রছাত্রীরা সহজেই পঠিত বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভে সক্ষম হয়। শিক্ষা হয় স্থায়ী এবং ফলপ্রসূ।
ট্রাস্ট কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক হোস্টেল সুবিধা রয়েছে, যা পৃথক পৃথক হোস্টেল সুপার দ্বারা সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করা হয়।এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে হোস্টেলে অবস্থান করে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখার তত্ত্বাবধান করে থাকেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ টেলিভিশন আয়োজিত জাতীয় টেলিভিশন সংসদীয় ইংরেজি বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০১২-১৩ এর ১ম রানার আপের সম্মান অর্জন করে ট্রাস্ট কলেজ। যথাযোগ্য মর্যাদায় আড়ম্বরের সাথে পালন করা হয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ।
এসএ/