আমরণ অনশনে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
নির্ধারিত সময়ে উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়ায় আমরণ অনশন শুরু করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ৩টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অনশনে বসেন। এ সময় স্লোগান অব্যাহত রাখেন তারা।
অনশনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে জাহিদুল ইসলাম বলেন, যে প্রশাসন, উপাচার্য ও শিক্ষকেরা আমাদের পুলিশ দিয়ে পেটায়, আমরা তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা, উপাচার্য ও প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা পদত্যাগ না করছেন ততক্ষণ আমরা অনশনে থাকব। এতে যদি কোনো শিক্ষার্থীর প্রাণনাশ হয় তাহলে এর জন্য দায়ী থাকবেন উপাচার্য, প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরিা ও ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা।
আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র মারুফ বলেন, আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আজ ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। কিন্তু উপাচার্য পদত্যাগ করেননি। ক্ষমতার লোভে উপাচার্যকে নির্লজ্জ করে দিয়েছে। তাই আগের ঘোষণা অনুযায়ী আমরণ অনশন শুরু করেছি। যতক্ষণ না উপাচার্য পদত্যাগ করবেন ততক্ষণ আমরা অনশনে থাকব।
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে সংবাদ সম্মেলন করে সময় বেঁধে দিয়ে অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এদিকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষদের একাংশ। দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা 'স্লোগানের মাধ্যমে শিক্ষকদের হেয় করছেন' উল্লেখ করে তারা এ মানববন্ধন করেন। তবে শিক্ষকদের এ মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির কোনো নেতাকে দেখা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে কোনো ব্যানার ছাড়াই সাধারণ শিক্ষক পরিচয়ে এ মানববন্ধনে অংশ নেন তারা।
এসময় শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষকেরা জাতির বিবেক। ছাত্রদের গড়ে তোলেন। তারা শিক্ষকদের সন্তানের মতো। আন্দোলন করতে গিয়ে তারা নারী শিক্ষকদের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, স্লোগান দিচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষকদের হেয় প্রতিপন্ন করে কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস দিচ্ছে। যে কোনো একজন শিক্ষকের জন্য সব শিক্ষককে নিয়ে তারা এভাবে বলতে পারে না।
অপরদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতেই ১০/১২ জন শিক্ষক অপপ্রচার চালাচ্ছেন। অথচ শিক্ষার্থীরা পুলিশের হাতে মার খেয়েছে এ ব্যাপারে ওই শিক্ষকেরা কোনো কথাই বলেননি। অথচ আজ তারা মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে কথা বলেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) রাত থেকে সিরাজুন্নেছা ছাত্রী হলের প্রভোস্টের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে ছাত্রীরা আন্দোলন শুরু করেন। এর এক পর্যায় রোববার (১৬ জানুয়ারি) দাবি আদায়ে ছাত্রীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখলে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করে, রাবার ব্যুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। শিক্ষার্থীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টাসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
এসইউ/এসএন