ক্যান্সারে চলে গেলেন দুটি পিএইচডি করা অধ্যাপক ড. রবিউল করিম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের নামকরা অধ্যাপক ও কৃতি গবেষক ড. কে. এম. রবিউল করিম মারা গিয়েছেন। বিরল একটি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চলে গিয়েছেন।
৫১ বছর বয়সের এই অধ্যাপকের অকাল মৃত্যুতে তার কর্মস্থল সমাজকর্ম, ছাত্র, ছাত্রী, ও বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে চলছে শোক।
অধ্যাপক ড. রবিউল করিমের মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন সমাজকর্ম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. কবির উদ্দিন হায়দার। বলেছেন, ‘ড. করিম ২০১৯ সাল থেকে বিরল ধরনের ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। সর্বশেষ ভারতের টাটা মেডিকেল সেন্টারে ১৫ সেপ্টেম্বর ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার। বলেছেন, ‘অধ্যাপক ড. রবিউল করিম ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ও গবেষক। তিনি মানুষ হিসেবে অত্যন্ত সজ্জন, বন্ধুবৎসল ছিলেন। বাংলাদেশে বিশেষত আমাদের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম বিভাগের প্রসারে তার অপরিসীম অবদান রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত: আমাদের একজন মেধাবী শিক্ষককে হারাতে হলো। দেশ একজন নিবেদিত ও বিশ্বমানের গবেষককে হারাল। সমাজকর্ম শিক্ষা ও গবেষণায় অসাধারণ অবদানে তিনি স্মরণীয় হবেন।’
অকাল প্রয়াত এই অধ্যাপকের এই অকাল মৃত্যুতে তার সহকর্মী অধ্যাপক ড. গোলাম কিবরিয়া ফেরদৌস বলেছেন, ‘আমরা একজন ভালো ও উঁচু মানের এবং প্রগতিশীল শিক্ষককে হারালাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম পরিবার একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারালো। তার এমন অকাল প্রস্থান নিসন্দেহে সমাজকর্মী ও সমাজকর্ম পেশার অপূরণীয় ক্ষতি। আমরা সবই তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।’
অধ্যাপক ড. কে. এম. রবিউল করিম তার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সমাজকর্ম বিভাগ থেকে ১৯৯১ সালে অনার্স ও পরের বছর মাস্টার্স পাশ করেছেন প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে। ১৯৯৭ সালে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৮ সালে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ২০১৩ সনে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেছেন।
অধ্যাপক ড. কে. এম. রবিউল করিম ২০০৫ সালে থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এআইটি) থেকে ‘জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এ আবার এমএসসি পাশ করেছেন। ২০১১ সালে তিনি হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্মে পিএইচডি অর্জন করেছেন।
২০১৮ সালে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে তিনি ‘পাবলিক হেলথ সায়েন্স’-এ আবার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। সুইডেনের লিনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয় পোস্ট ডক্টরাল ফেলো রির্সাচার ও শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। উচ্চমানের গবেষণার জন্য তার রয়েছে অত্যন্ত কৃতিত্ব। বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন জার্নালে ৩৬ গবেষণাপত্র ছাপা হয়েছে।
ওএফএস।
