থেমে নেই নিভৃত পল্লীর প্রতিবন্ধী উজ্জ্বলের সংগ্রাম

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের বহুমাত্রিক শারীরিক প্রতিবন্ধী জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বলের (২১) উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার সংগ্রাম দমাতে পারেনি। শনিবার (৩০জুলাই) নগরীর ক্যান্টপাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। বহুমাত্রিক শারীরিক প্রতিবন্ধী জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বলের বাবা কৃষক জাহিদ সারোয়ার ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সন্তানকে এ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসেছিলেন। আলাদা কক্ষে বেঞ্চে শুয়ে নির্ধারিত সময়ে মুখ দিয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন উজ্জ্বল।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় দিয়ে সামান্য স্কোরের কারণে তিনি সুযোগ পাননি। গত ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যায়ের পরীক্ষায়ও উজ্জ্বল অংশ নিয়েছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন। উজ্জ্বলের বাবা জাহিদ সারোয়ার বলেন, আমার ছেলে হাটতে, বসতে পারে না। তার হাত-পা অচল।
এরপরেও সে উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখে। আমি পারিবারিক-অর্থনৈতিক নানা সংকটের মধ্যেও ছেলের স্বপ্নকে বাস্তব করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। উজ্জ্বলের স্বপ্ন সে লেখাপড়া করে একটি সরকারী চাকুরী করবে। সে বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী হয়েও বাবা-মার বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। আশা করছি কোন না কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে উজ্জ্বল পড়ার সুযোগ পাবে।
রংপুর মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের গ্রাম হযরতপুরের হতদরিদ্র কৃষক জাহিদ সারোয়ারের তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় জুবায়ের হোসেন উজ্জ্বলের (২১) বহুমাত্রিক শারীরিক প্রতিবন্ধীতা জন্মের পর থেকে। তিনি নিজ বিছনাকে শ্রেণি কক্ষ বানিয়ে উজ্জ্বল দিন-রাত মুখ দিয়ে বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টিয়ে বই পড়েন।
তিনি স্থানীয় শেরপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে জিপি ৪ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট অর্জন করেন। মিঠাপুকুর বালারহাট আদর্শ ডিগ্রী মহাবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় তিনি জিপিএ- ৪ দশমিক ৫৮ অর্জন করেছেন।
এএজেড
