গুচ্ছের প্রশ্ন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শিক্ষার্থীদের
‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হলো দেশের ২২টি পাবলিক এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অধীনে ঢাকার ৮টি কেন্দ্রে এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে অন্যান্য সেন্টারের অনেকেই না বুঝে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টারে পরীক্ষা দিতে চলে আসায় তাদেরকেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়।
শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকাল ৯টা থেকেই কেন্দ্রে আসতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ১১টায় কেন্দ্রে প্রবেশের নিয়ম থাকলেও যানজটের কথা চিন্তা করে পরীক্ষার্থীদের আগেই কেন্দ্রে প্রবেশ করানো হয়। এদিকে গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের সিলেবাস নিয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন। তারা বলছেন, শর্ট সিলেবাস অনুাসারে পরীক্ষার প্রশ্ন করার কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। বরং প্রশ্ন এসেছে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস থেকে।
রংপুর থেকে আসা অনন্যা বলেন, যেভাবে প্রশ্ন আসার কথা ছিল সেভাবে আসেনি। বিশেষ করে গণিত ও জীববিজ্ঞাস বিষয়ে অর্ধেকের মতো বাইরে থেকে প্রশ্ন এসেছে। আমরা তো এক বছরের শর্ট সিলেবাসে পড়াশোনা করেছি। অথচ প্রশ্ন এসেছে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস থেকে। সেজন্য যেরকম আশা করেছিলাম পরীক্ষা তেমন ভালো হয়নি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দুই একটা শর্ট সিলেবাসের বাইরে থেকে আসলেও গুচ্ছ পরীক্ষায় অনেক বেশি বাইরের প্রশ্ন আসছে। ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা একসঙ্গে দিলাম আমাদের আগেই জানানো উচিত ছিল ফুল সিলেবাসে পরীক্ষা হবে।
নীলফামারী থেকে আসা রায়হানে জান্নাত বলেন, জীববিজ্ঞান ও গণিত কঠিন হয়েছে। কেন না ১৫-১৮ টি প্রশ্ন করা হয়েছে সিলেবাসের বাইরে থেকে।
রংপুর কালেক্টরেট কলেজের শিক্ষার্থী সাকিব বলেন, গণিত বিষয়ের প্রায় সব প্রশ্নই এসেছে সিলেবাসের বাইরে থেকে। এ ছাড়া রসায়ন, জীববিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞানের প্রশ্ন সিলেবাসের থেকে এসেছে।
এদিকে প্রশ্নের প্রিন্ট ও ছাপা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জগদীশ চন্দ্র সরকার।
তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আজ ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হলো। প্রশ্নপত্রের গেটআপ দেখে আমি পুরোপুরি হতাশ। আমার চোখের আন্দাজ ৮-৯ ফোন্ট সাইজ, ১ স্পেস, ০.২ মার্জিন, উত্তরের অপশনগুলো (এ থেকে ডি) পাশাপাশি দেওয়া। প্রশ্নপত্রের কোথাও তিল পরিমাণ ফাঁকা জায়গা নেই। আবার পদার্থ, গনিত, রসায়ন রাফ করার জন্য কোনো আলাদা কাগজও দেওয়া হয়নি। আমার আশঙ্কা অনেক পরীক্ষার্থীরা বিভিন্ন রকম ভুল করেছে শুধুমাত্র এরকম একটা ঘিঞ্জি প্রশ্নপত্রের কারণে। একটা স্ট্যান্ডার্ড প্রশ্নপত্রের গেটআপটাও আজ আমরা আপটুদা মার্ক করতে পারি না?! ছি!’ তিনি আরও লেখেন, যেখানে ভর্তি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার সকল খরচ বহন করে। সেখানে কার স্বার্থে এই কৃচ্ছসাধন? নিশ্চয়ই আমার/আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের। কাকে কি বলব, নিজেকেই ধিক্কার জানাই!’
গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (নেত্রকোনা), বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোপালগঞ্জ), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় (কিশোরগঞ্জ) এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
এমএমএ/