বন্ধ ক্যাফেটেরিয়া ভবনে মাদকসেবীদের আখড়া!
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বন্ধ ক্যাফেটেরিয়া ভবনের সিড়ি মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। গত বছরের করোনাকালীন ছুটি শেষে ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকেই বহিরাগত বখাটেরা এবং ক্যাম্পাসের কিছু সংখ্যক মাদকসেবি মাদক সেবনের জন্য এই স্থানকে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যা নামতে না নামতেই ক্যাফেটেরিয়া ভবনের সামনে বিভিন্ন বয়সের মাদকসেবীদের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। তাদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো আর উচ্চ শব্দে হৈ-হুল্লোড় ইতিমধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
এদিকে ২০১৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া ভবন নির্মাণ করা হলেও চালু হয়নি তার কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট থাকায় দুই তলা বিশিষ্ট এই ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসিক হল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে নতুন হলের নির্মাণ কাজ শেষ হলে ছাত্রীদের সেই হলে স্থানান্তর করা হয়। ফলে দীর্ঘদিন ধরে তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে থাকে ভবনটি। পরবর্তীতে ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যালয় করা হলেও রাতের বেলা কার্যালয়টি বন্ধ থাকায় জায়গাটি বেশ শূন্য থাকে। এ ছাড়াও ভবনের সামনে রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় ও আশপাশের ঘন জঙ্গলের কারণে মাদকসেবীদের মাদকদ্রব্য গ্রহণের উপযুক্ত জায়গায় পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, ‘হলে যাওয়ার সময় প্রায়ই এখান থেকে মাদকাসক্ত লোকদের বের হতে দেখি। তারা উল্টাপাল্টা গান গাইতে গাইতে বের হয়। মাঝে মাঝে মেয়েদের হলের পাশের রাস্তায় গিয়েও অনেকে চিল্লাপাল্লা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এভাবে মাদকসেবীদের আখড়া হওয়াটা যেমন দুঃখজনক তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের জন্যও অনিরাপদ।’
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা নেশার ঘোরে থাকলে কখনই সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন মানুষ থাকে না। বিকৃত মস্তিস্কের এই মানুষগুলো কোনও একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।”
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সকল কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বদা সজাগ। বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা করব।’
ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. শরাফত আলী বলেন, ‘মাদকদ্রব্য গ্রহণের বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক। তবে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা দরকার। কে বা কারা এগুলো করছে তা প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।‘
এসআইএইচ