ঢাকায় একীভূত শিক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হল তিন দিনব্যাপী ‘একীভূত শিক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন’। এশিয়ান সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ এডুকেশন (এসিআইই) বাংলাদেশের উদ্যোগে ঢাকার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের হাইব্রিড এপ্রোচে বৃহস্পতি থেকে শনিবার পর্যন্ত এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শারীরিক উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে অনেক অতিথি অনলাইনে যুক্ত হন। ষষ্ঠ বারের মতো এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল।
সম্মেলনের সহ-আয়োজক ছিল ভারতের পুনে বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের গ্রিন ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, ইউনেস্কো ঢাকা, সিবিএম গ্লোবাল, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, রুম টু রিড বাংলাদেশ এবং সিসিম ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ।
সম্মেলনের চেয়ার ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর উমেশ শর্মা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন নোয়াখালী প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম ওয়াহীদুজ্জামান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল হালিম।
তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দিন দুইটি কিনোট পেপার উপস্থাপন করা হয়। কিনোট স্পিকার ছিলেন কানাডার কনকর্ডিয়া ইউনিভার্সিটি অফ এডমান্টন-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. টিম লোরম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও ইমপেক্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী। এছাড়াও প্রথম দিন সিবিএম গ্লোবালের পক্ষ থেকে একটি প্যানেল ডিসকাশন সেশন পরিচালিত হয়। এতে সম্মেলনের সহ-আয়োজক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ভিডিও উপস্থাপনা পেশ করেন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের সমগ্র সেশন এবং তৃতীয় দিনের সকালের সেশন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৭টি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা থেকে ৭৮টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। একটি সেশনে কিনোট স্পিকার ছিলেন ভারতের এস. পি. পুনে ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ এডুকেশনের ডীন অধ্যাপক ডক্টর সঞ্জীব সোনাওয়ানে।
সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। গেস্ট অফ অনার ছিলেন ইউনেস্কো ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান বিট্রিস কালদুন এবং ন্যাশনাল কারিকুলাম ও টেক্সটবুক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালীন দুর্যোগ মোকাবেলা করে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সঠিক পথে পরিচালিত হচ্ছে। পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে টেকসই করতে হলে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। সেইসাথে শিক্ষাক্রমকে যুগোপযোগী করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে নতুন কারিকুলাম পরিমার্জন করেছেন। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাবে।’
সমাপনী দিনে এসিআইই এর নিয়মিত আয়োজন ড. নিরাফাত আনাম মেমোরিয়াল ইনক্লুশন (নামি) অ্যাওয়ার্ড পঞ্চমবারের মতন প্রদান করা হয়। প্রতি দুই বছর পরপর এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। একীভূত সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখায় এ বছর প্রয়াত লিন্ডসে এলান চেয়েন কে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
সমাপনী বক্তব্যে সম্মেলনের মেম্বার সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. তারিক আহসান সম্মেলনের সহ-আয়োজক, অতিথিবৃন্দ, সেশন চেয়ার, প্যানেলিস্ট, অংশগ্রহণকারী এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সম্মেলনে উপস্থাপিত গবেষণাপত্রসমূহ পলিসি রিফর্মসহ সামগ্রিক আলোচনা টেকসই শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
এপি/