লাল তালিকামুক্ত হলো সব পাকিস্তানি পণ্য
ছবি: সংগৃহীত
২০০৯ সালে দেশে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলাদেশে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আধিপত্য বাড়ে ভারতের। বাংলাদেশের সব ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে দেশটি। তারই অংশ হিসেবে নিরাপত্তার অজুহাতে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা অধিকাংশ পণ্য “লাল তালিকাযুক্ত” করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ফের দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের অনুরোধে দেশটি থেকে আনা পণ্যগুলো “লাল তালিকামুক্ত” করার পদক্ষেপ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
পাকিস্তানের অনুরোধের পর গত ২৯ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) থেকে লাল তালিকা থেকে মুক্ত হয়েছে দেশটির সব ধরনের পণ্য।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দেখা করেন বাংলাদেশে পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ। সে সময় তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে স্তিমিত হয়ে পড়া দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক জোরালো করতে চায় পাকিস্তান।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছিলেন, অনেক দিন ধরে বিভিন্ন কারণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। পাকিস্তান এখন আবার বাণিজ্য করতে আগ্রহী।
এই আহ্বানের পর গতকাল একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনবিআর। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পাকিস্তান থেকে আসা সব ধরনের পণ্য অ্যাসাইকুডা ওয়ার্লড পদ্ধতির রেডলেন থেকে অবমুক্ত করা হয়েছে।
শুধু পাকিস্তানের পণ্য এই রেডলেনে ছিল। ন্যাশনাল সিলেকটিভিটি ক্রাইটেরিয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় এই পণ্যগুলো রেডলেন থেকে অবমুক্ত করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এনবিআর বলছে, মাদকদ্রব্যসহ নিষিদ্ধ পণ্যে কঠোরতা রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি ও পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে সহজ পদ্ধতির পথে হাঁটছে এনবিআর। এতে করে দেশে উৎপাদনমুখী পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে কোনো ধরনের জটিলতা থাকবে না।
এনবিআরের প্রজ্ঞাপনটিতে বলা হয়, পাকিস্তান থেকে আসা সব পণ্যচালান ন্যাশনাল সিলেকটিভ ক্রাইটেরিয়া কর্তৃক শতভাগ কায়িক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হচ্ছে। ফলে রেডলেন থেকে অবমুক্তকরণে অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ডেপুটি কমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অধিক সময় ব্যয় হচ্ছে। তা ছাড়া কায়িক পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য কোনো ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে না, তাই ঢাকা কাস্টম হাউজকে ন্যাশনাল ক্রাইটেরিয়া থেকে বাইরে রাখার জন্য বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের চামড়া, টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস খাতে পাকিস্তানিদের বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। পাকিস্তান সরকারের তথ্য মতে, ২০২৩ সালেও বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে রপ্তানি হয়েছে ছয় কোটি ৩৩ লাখ ডলারের বেশি পণ্য। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আমদানি হয়েছে ৬৫ কোটি ৫ লাখ ডলারের পণ্য।