ছয় মাসে দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ
চার সদস্যের পরিবার মাসুদ সাহেবের (ছদ্ম নাম) মাসিক বাজার খরচ প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বিলসহ বাড়ি ভাড়ায় ব্যয় হয় প্রায় ১৮ হাজার টাকা। এরপর আছে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ, পোশাক পরিচ্ছেদ, চিকিৎসা খরচ ও অন্যান্য ব্যয় মিলে আরও প্রায় ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ করেন প্রতিমাসে। এ হিসেবে তার মাসিক রোজগার প্রয়োজন প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
পণ্যের নাম |
আজকের দাম (টাকা) |
ছয় মাস আগের দাম (টাকা) |
৫ লিটার সয়াবিন তেল |
৮০০ |
৬৫০ |
এক কেজি ডাল |
১২০ |
১০০ |
মিনিকেট চাল |
৭০ থেকে ৭২ |
৬৫ থেকে ৬৬ |
আটাশ চাল |
৪৮ থেকে ৫২ |
৪৫ থেকে ৪৬ |
এক কেজি চিনি |
৭৫ থেকে ৭৮ |
৬০ থেকে ৬২ |
২ কেজি প্যাকেট আটা |
৯০ থেকে ৯২ |
৬৫ |
১৫০ এমএল লাক্স সাবান |
৬২ |
৫২ |
এক কেজি হুইল পাওডার |
১০০ |
৮৫ |
৫০০ এমএল তেল |
৩২৫ |
৩০৫ |
টুথপেষ্ট |
১৪০ থেকে ১৬০ |
১৫০ থেকে ১৩৩ |
হ্যান্ডওয়াস |
৭০ |
৫৫ থেকে ৬০ |
এক কেজি পাওডার দুধ |
৭২০ |
৬৮০ |
এক কেজি পেঁয়াজ |
৬০ থেকে ৬৫ |
৩৫ থেকে ৪০ |
প্রতি কেজি সুকনা মরিচ |
৩১০ |
২৮০ |
তিন সদস্যের পরিবার শফিক সাহেবের (ছদ্ম নাম) মাসিক বাজার খরচ প্রায় ১৫ হাজার টাকা। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বিলসহ বাড়ি ভাড়ায় ব্যয় হয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা। এরপর আছে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ, পোশাক পরিচ্ছেদ, চিকিৎসা খরচ ও অন্যান্য ব্যয় মিলে আরও প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা খরচ করেন প্রতিমাসে। এ হিসেবে তার মাসিক রোজগার প্রয়োজন প্রায় ৪২ হাজার টাকা।
দুই সদস্যের পরিবার মামুন সাহেবের (ছদ্ম নাম) মাসিক বাজার খরচ প্রায় ১২ হাজার টাকা। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বিলসহ বাড়ি ভাড়ায় ব্যয় হয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা। এরপর আছে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ, পোশাক পরিচ্ছেদ, চিকিৎসা খরচ ও অন্যান্য ব্যয় মিলে আরও প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা খরচ করেন প্রতিমাসে। এ হিসেবে তার মাসিক রোজগার প্রয়োজন প্রায় ৪০ হাজার টাকা।
এ খরচের হিসেব কাল্পনিক হলেও বাস্তব পরিস্থিতি কোনো অংশেই এর বাইরে নয়। এছাড়া যেসব পরিবার বৃদ্ধ বাবা মা কিংবা ছোট ভাই বোন আছে তাদের খরচের তালিকা আরও বড়। গত ছয় মাসের বেশি সময় ধরে সব ধরণের নিত্যপণ্যের বাজার উর্ধ্বমুখী। এই উর্ধ্বগতির বাজারে আয়ের সঙ্গে ব্যয় সমন্বয় করা বেশ কষ্টকর হয়ে উঠেছে নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য। যদিও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় বাংলাদেশেও নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।
শনিবার (৫ মার্চ) রাজধানীর পাইকারি কারওয়ান বাজার, টাউনহল কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাল, ডাল, সয়াবিন তেল থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, পেঁয়াজ, মরিচসহ এমন কোনো পণ্য নেই যে ছয় মাসের ব্যবধানে দাম বাড়েনি। পেঁয়াজ, তেলসহ কোনো কোনো জিনিসের দাম ২৩ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
গত ৬ মাসের বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখো গেছে, ৬ মাসে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ২৫০ টাকা, ডাল ২০ টাকা, মিনিকেট চাল কেজিতে ৫-৭ টাকা, চিনি ১৫-১৮ টাকা, ২ কেজি প্যাকেট আটা ২৫-২৭ টাকা। এছাড়া গুঁড়োদুধ কেজিতে ৪০ টাকা, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩৫ টাকা।
শুধু খাদ্য নয়, দাম বেড়েছে সাবান, টুথপেষ্ট, হ্যান্ডওয়াশ, টিস্যুর মতো পণ্যগুলোতে। অর্থাৎ একজন মানুষ প্রতিদিন যেসব পণ্য ব্যবহার করে সব কিছুরই দাম বেড়েছে।
সমস্যা বেশি ওই পরিবারগুলোতে যারা করোনাকালে চাকরি হারিয়েছেন কিংবা যাদের আয় কমে গেছে। কারণ এমতেই তাদের আয়ের পথ রুদ্ধ, তারপর বাজারের উর্ধ্বগতি। ফলে পরিবার সন্তান নিয়ে বেঁচে থাকা তাদের জন্য দায় হয়ে উঠেছে।
শাহাদাত হোসেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি বলেন, এক চাকরিতে সংসারের খরচ চালাতে পারছি না। বিকল্প রোজগারের উপায় খুঁজছি। কি করবো সংসারের ব্যয় তো মিটাতে হবে।
জেডএ/